• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১

উত্তম আমিষের গুণে ভরা ‘কাজুবাদাম’

উত্তম আমিষের গুণে ভরা ‘কাজুবাদাম’

প্রতিকী ছবি

ফিচার ডেস্ক

যারা প্রাণিজ আমিষ পরিহার করেন, তাদের জন্য আদর্শ খাবার হতে পারে কাজুবাদাম। এটি প্রোটিনে সমৃদ্ধ একটি খাবার। আমাদের দেশে বিরিয়ানি, পোলাও, কোরমা, পিঠা-পায়েসসহ নানা ধরণের রান্নায় কাজুবাদাম ব্যবহৃত হয়। এটি বেশ জনপ্রিয় ও পুষ্টিকর একটি খাবার। সুস্বাস্থ্যের জন্য কাজুবাদামের জুড়ি মেলা ভার।

প্রিয় পাঠক, আমাদের এই পর্বে কাজুবাদামের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা নিয়ে কিছু তথ্য দেয়ার চেষ্টা করেছি। চলুন দেখে নেয়া যাক, কী আছে কাজুবাদামে-

পরিচয় : কাজুবাদাম অত্যন্ত সুস্বাদু একটি বাদাম। কাজু গাছের বৈজ্ঞানিক নাম Anacardium occidentale। যার প্রতিশব্দ Anacardium curatellifolium। এটি মূলত সপুষ্পক অ্যানাকার্ডিয়েসি পরিবারের বৃক্ষ। কাজুবাদামের উৎপত্তিস্থল ব্রাজিলসহ মধ্য আমেরিকা এবং উত্তর দক্ষিণ আমেরিকার উত্তর পূর্ব ব্রাজিল। বর্তমানে ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ভারত, কেনিয়া, মোজাম্বিক, তানজানিয়া, মাদাগাস্কারসহ বিভিন্ন দেশে কাজুবাদাম উৎপাদিত হয়ে থাকে। বাংলাদেশের পাহাড়ি অঞ্চলে এটির চাষ শুরু হয়েছে।

পুষ্টিগুণ : উইকিপিডিয়া, বাংলাদেশ কৃষি তথ্য সার্ভিস ও আনন্দবাজারের পৃথক নিবন্ধে বলা হয়েছে, এতে রয়েছে প্রোটিন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, কপার, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন, ফসফরাস, পটাশিয়াম, জিঙ্কসহ নানা খনিজ উপাদান ও ভিটামিন। ভিটামিনের মাত্রা কাজুবাদামে এত বেশি যে, চিকিৎসকেরা এটিকে ট্যাবলেট বলে আখ্যা দিয়েছেন।

প্রতি এক আউন্স বা ২৮.৩ গ্রাম কাজুবাদামে রয়েছে
ক্যালরি ১৫৭ কিলোক্যালরি
প্রোটিন ৫.১৭ গ্রাম
চর্বি ১২.৪৩ গ্রাম
আঁশ ৮.৫৬ গ্রাম
সুগার ১.৬৮ গ্রাম।

উপকারিতা : আনন্দবাজার ও উইকিপিডিয়াতে প্রকাশিত নিবন্ধে বলা হয়েছে, কাজু বাদাম রোগ প্রতিরোধে খুবই কার্যকরী। এটি নিয়মিত খাওয়ার অভ্যাস-

মুখের রোগ নিরাময় করে : কাজুবাদামে রয়েছে ফসফরাস, যা দাঁতের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটানোর মধ্যে দিয়ে নানাবিধ মুখগহ্বর সম্পর্কিত রোগকে দূরে রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

রক্তশূন্যতা দূর করে : গবেষণায় দেখা গেছে, কাজুবাদাম খাওয়া মাত্র দেহের ভেতরে আয়রনের ঘাটতি দূর হতে শুরু করে। ফলে লোহিত রক্ত কণিকার উৎপাদন এত মাত্রায় বেড়ে যায় যে অ্যানিমিয়ার মতো রোগ ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারে না।

চুল উন্নত করে : কপার হল সেই খনিজ, যা চুলের উজ্জ্বলতা বাড়ানোর পাশাপাশি চুলের গোড়া শক্তপোক্ত করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। আর এই উপাদানটি রয়েছে কাজুবাদামে। এছাড়া কাজুবাদামে থাকা কপার শরীরের ভেতরে এমন কিছু এনজাইমের ক্ষরণ বাড়িয়ে দেয়, যা চুলের কালো রং ধরে রাখতে সহায়তা করে।

ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায় : ক্যান্সারের মতো দূরারোগ্য ব্যধি নিরাময়ে এবং ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সবচেয়ে প্রয়োজনীয়। আর এটি রয়েছে কাজুবাদামে। নিয়মিত কাজুবাদাম খেলে ক্যান্সারের কোষ ধ্বংস হয়।

মস্তিষ্কের ক্ষমতা বাড়ায় : কাজুবাদামে শরীরের ম্যাগনেসিয়াম নার্ভের ক্ষমতা বাড়িয়ে সার্বিকভাবে মস্তিষ্কের শক্তি বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। আর একবার ব্রেন পাওয়ার বাড়তে থাকলে ধীরে ধীরে ব্রেনের কগনিটিভ ফাংশনেরও উন্নতি ঘটে। ফলে বুদ্ধি, স্মৃতিশক্তি এবং মনোযোগও বাড়তে শুরু করে।

সাধারণ সংক্রমণ দূরে রাখে : এই বাদামে থাকা জিঙ্ক, ভাইরাসের আক্রমণের হাত থেকে শরীরকে রক্ষা করে। তাই আপনি যদি এ ধরনের ইনফেকশনের শিকার প্রায়শই হয়ে থাকেন, তাহলে রোজের ডায়েটে কাজু বাদামের অন্তর্ভুক্তি ঘটাতেই পারেন।

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে : অনিয়ন্ত্রিত রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে কাজুবাদাম খান। কারণ এতে রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম, যা ব্লাড প্রেসারকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় : এতে রয়েছে ওলিসিক নামে এক ধরনের মোনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড, যা দেহের খারাপ কোলেস্টরলের মাত্রা কমাতে দারুন কাজে আসে। তাই তো নিয়মিত বাদমটি খেলে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। ফলে হার্টের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পায়।

হাড় মজবুত করে : কাজুবাদামে রয়েছে প্রচুর ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ও ম্যাগনেসিয়াম। এটি নিয়মিত খেলে হাড়ের শক্তি বাড়তে শুরু করে। সেই সঙ্গে বুড়ো বয়সে গিয়ে অস্টিওআর্থারাইটিসের মতো হাড়ের রোগ হওয়ার আশঙ্কাও হ্রাস পায়।

তথ্যসূত্র : আনন্দবাজার, উইকিপিডিয়া, বাংলাদেশ কৃষি তথ্য সার্ভিস ও হেলথ লাইন

 

এবি/এসএন/আরএ

১৮ অক্টোবর ২০২১, ০৮:০০পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।