• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১

ভেষজগুণে অনন্য তুলসী পাতা

ভেষজগুণে অনন্য তুলসী পাতা

প্রতিকী ছবি

ফিচার ডেস্ক

তুলসী। অত্যন্ত পরিচিত একটি উদ্ভিদ। বাংলাদেশ, ভারতসহ বহু দেশে তুলসী পাতা ভেষজ চিকিৎসায় ব্যবহৃত হচ্ছে। সুস্থ থাকার পাশাপাশি বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি পেতে তুলসী পাতা খাওয়ার প্রচলন ভারতীয় উপমহাদেশে সুপ্রাচীনকাল থেকে। বাংলাদেশে এই গাছটি খুব পাওয়া যায়। অনেকে ওষুধিগাছ হিসেবে বাড়িতে তুলসী গাছ লাগান।

প্রিয় পাঠক, আজকের পর্বে আমরা তুলসী পাতার ভেষজ গুণাগুণ ও উপকারিতা নিয়ে কিছু প্রয়োজনীয় তথ্য দেয়ার চেষ্টা করেছি-

পরিচয় : তুলসীর ইংরেজি নাম holy basil বা tulasi। এর বৈজ্ঞানিক নাম Ocimum Sanctum। যা মূলত একটি ওষুধিগাছ। বাংলায় তুলসী শব্দের অর্থ-যার তুলনা নেই। তুলসী গাছ লামিয়াসি পরিবারের অন্তর্গত একটি সুগন্ধী উদ্ভিদ। সনাতন ধর্মাবলম্বী সম্প্রদায়ের কাছে এটি একটি পবিত্র উদ্ভিদ হিসাবে সমাদৃত। ব্রহ্মকৈবর্তপুরাণে তুলসীকে 'সীতাস্বরূপা', স্কন্দপুরাণে 'লক্ষীস্বরূপা', চর্কসংহিতায় 'বিষ্ণুপ্রিয়া', ঋকবেদে 'কল্যাণী' বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে।

ভেষগ গুণাগুণ:
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জি নিউজ ও উইপিকিডিয়ায় প্রকাশিত নিবন্ধে বলা হয়েছে, এতে রয়েছে প্রচুর ইনফ্লামেটরি উপাদান ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এতে রয়েছে ভিটামিন সি-সহ নানা ধরণের উপাদান। মানসিক স্বাস্থ্য উন্নত করতে এটি বেশ কার্যকরী। নার্ভকে শান্ত রাখতে ও দেহের উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে তুলসী পাতা বেশ উপকারী।

আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের বরাত দিয়ে উইকিপিডিয়া জানিয়েছে, অ্যাজমা, ফুসফুসের সমস্যা ও ব্রঙ্কাইটিস সমস্যা দূর করতে তুলসী পাতা ব্যাপক কার্যকরী। বর্ষাকালে তুলসী পাতা ও এলাচি দিয়ে ফোটানো পানি পান করলে খুব সহজেই নানা রকমের রোগের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

উপকারিতা:

ভারতীয় জি নিউজ, আনন্দবাজার ও উইকিপিডিয়ায় প্রকাশিত নিবন্ধে তুলসী পাতার উপকারিতা সম্পর্কে বলা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, তুলসী পাতা-

ওজন কমায় : তুলসী পাতা রক্তের সুগারের মাত্রা ও কোলেস্টেরল দুটোই কমাতে সাহায্য করে। ফলে খুব সহজেই এটি ওজন কমায়।

ক্যান্সার প্রতিরোধ করে : ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে তুলসী পাতা খুবই কার্যকরী। এতে রয়েছে রেডিওপ্রটেকটিভ উপাদান, যা টিউমারের কোষগুলোকে মেরে ফেলে। এছাড়া তুলসী পাতায় থাকা ফাইটোকেমিক্যাল উপাদান (রোসমারিনিক অ্যাসিড, মাইরেটিনাল, লিউটিউলিন এবং এপিজেনিন) ক্যান্সার প্রতিরোধে খুবই কার্যকরী।

ত্বক সুস্থ রাখে : ত্বকের যত্নে তুলসী পাতা অত্যন্ত উপকারী। তুলসী পাতায় থাকা ভিটামিন সি, ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস ও এসেনশিয়াল অয়েলগুলো চমৎকার অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের কাজ করে, যা বয়সের ছাপ কমাতে সাহায্য করে। কেউ কেউ আবার তুলসী পাতাকে যৌবন ধরে রাখার টনিকও মনে করেন। তুলসী পাতা বেটে সারা মুখে লাগিয়ে রাখলে ত্বক সুন্দর ও মসৃণ হয়।

চোখ ভালো রাখে : তুলসীতে থাকা অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদানগুলো চোখের চুলকানি, অঞ্জনি, পিচুটিজাতীয় যাবতীয় সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। এটি দৃষ্টিশক্তি বাড়ানোর পাশাপাশি ছানি এবং গ্লুকোমার মতো চোখের রোগকে দূরে রাখতেও সাহায্য করে।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে : দেহে সুগারের মাত্রা কমাতে প্রতিদিন খাওয়ার আগে তুলসী পাতা খাওয়ার অভ্যাস করুন। এটি রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে সহায়তা করে। নিয়মিত তুলসী পাতা খেলে দেহে ইনসুলিনের কর্মক্ষমতাও বাড়ে। ফলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে।

হৃদযন্ত্রের ঝুঁকি কমায় : তুলসী পাতা হার্টের রোগীদের জন্য অনেক উপকারী। কেননা হার্টের রোগ জন্ম দেয় হাইপারটেনশন, উচ্চ রক্তচাপ বা কোলেস্টরলের। তুলসী পাতার দ্বারা রক্তের জমাট বাঁধার সমস্যা দূর করা যায় এবং হার্ট অ্যাটাক রোধ করা যায়।

পেটের রোগ দূর করে : কথিত আছে পেটের ব্যথায় তুলসী পাতা মহৌষধ। পেটব্যথা, অম্বল, গ্যাস, কোষ্ঠকাঠিন্য ইত্যাদি দূর করতে তুলসী পাতা দারুণ কার্যকরী। পেটে আলসারের বিরুদ্ধেও তুলসী পাতা খুবই কার্যকরী।

তথ্যসূত্র : জি নিউজ, আনন্দবাজার ও উইকিপিডিয়া

 

এবি/এসএন/আরএ

১৭ অক্টোবর ২০২১, ০৮:১২পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।