আম কেন কম খাবেন
প্রতিকী ছবি
দেশে এখন ফল-ফলাদির ভরা মৌসুম। বছরের এই সময় সারাদেশেই আম, কাঁঠাল, তাল, জাম, জামরুল, লটকন পাওয়া যাচ্ছে। ফলের স্বাদ সবারই প্রিয়। কিন্তু আম যেন আমজনতার ফল। আম পছন্দ নয়, এমন মানুষ পাওয়া দুস্কর। ফজলি, ল্যাংড়া, গোপালভোগ, খিরসাপাত, আম্রপালি সহ অসংখ্য আমের মৌ মৌ ঘ্রাণে বাজার সয়লাব। কিন্তু আপনারা কি জানেন, আম বেশি খাওয়া ক্ষতিকর?
গবেষকরা বলছেন, আম অত্যন্ত পুষ্টিকর একটি ফল। তবে এটি কোনো ভাবেই বেশি পরিমাণে খাওয়া যাবে না। পরিমিত আম খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন পুষ্টিবিদরা।
বেশি আম খেলে যা হয়
রক্তে কার্বোহাইড্রেট বেড়ে যায়: আম অত্যন্ত মিষ্টি এবং সুস্বাদু একটি ফল। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রাকৃতিক চিনি। আর এই চিনি দ্রুত শরীরে শর্করা বা কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। ফলে ডায়াবেটিস বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়।
খাদ্যআঁশ কম: প্রায় সব জাতের আমেই খাদ্যআঁশ বা ফাইবার কম থাকে। আমের আঁশ থাকে বীজ ও খোসায়, যা মূলত খাওয়া হয় না। তাই, আম হজম প্রক্রিয়ায় সহায়তা করে না।
ওজন বাড়িয়ে দেয়: আপনি যদি নিয়মিত আম খেতে থাকেন, তাহলে দ্রুত আপনার ওজন বেড়ে যাবে। কারণ, আমে ফাইবার কম এবং প্রাকৃতিক শর্করার পরিমাণ বেশি। আমে খাদ্যশক্তি বা ক্যালোরিও বেশি থাকে, যা দেহের ওজন দ্রুত বাড়িয়ে দেয়।
অ্যালার্জি বাড়ায়: আম খেলে অনেকের অ্যালার্জি বেড়ে যেতে পারে। কারণ, আমে রয়েছে প্রোটিন ল্যাটেক্স। এই উপাদানটি অ্যালার্জি বৃদ্ধিতে সহায়ক।
হজমে ব্যাঘাত ঘটায়: পুষ্টিবিদরা বলছেন, অতিরিক্ত আম খেলে তা হজম প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। কারণ, আমে রয়েছে গাঁজনযোগ্য কার্বোহাইড্রেট, হজম প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করে।
কিডনী জটিলতা বাড়ায়: যারা কিডনীজনিত রোগে আক্রান্ত, তারা আম বেশি খাবেন না। কারণ, আমে রয়েছে প্রচুর ল্যাকটোজ ও ফ্রক্টোজ উপাদান। এসব উপাদান কিডনী রোগীদের জন্য মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ।
ইউরিক অ্যাসিড বাড়িয়ে দেয়: যারা ইউরিক অ্যাসিড, গেঁটে বাত অথবা আর্থ্রাইটিসে ভুগছেন, তারা আম পরিহার করুন। প্রয়োজনে সামান্য পরিমাণ আম খেতে পারেন। তবে প্রতিদিন নিয়ম করে আম খেলে বিপদে পড়তে পারেন।
আম খাওয়ার পর যা খাবেন না
পানি: পুষ্টিবিদরা বলছেন, আম খাওয়ার পরপরই পানি পান করা উচিত নয়। এতে করে পেট ব্যথা, অ্যাসিডিটি, বদহজম ও পেট ফাঁপার মতো সমস্যা হতে পারে।
দই: আম-দই কখনোই একসঙ্গে খাবেন না। আমের সঙ্গে দই খেলে পেট এবং ত্বকের স্বাস্থ্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।
কোল্ড ড্রিঙ্কস: আপনি যদি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হন, তাহলে আম খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কোল্ড ড্রিঙ্কস পান করবেন না। কারণ আম ও কোল্ড ড্রিংকসে প্রচুর পরিমাণে চিনি থাকে।
করলা বা তিতা খাবার: আম অত্যন্ত মিষ্টি ফল। তাই, মিষ্টি ফল খাওয়ার পর তিতা বা টক ফল ও টক খাবার খাবেন না। টক, মিষ্টি, তেতো খাবার একসঙ্গে খেলে বমি বমি ভাব এবং শ্বাসকষ্টের মতো সমস্যা হতে পারে।
তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া।