• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • রোববার, ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১

গরমে ডায়াবেটিস রোগীদের পানীয় খাবার

গরমে ডায়াবেটিস রোগীদের পানীয় খাবার

প্রতিকী ছবি

ফিচার ডেস্ক

বর্তমানে ডায়াবেটিস একটি বহুল পরিচিত ও সংক্রমিত রোগ। এখন পর্যন্ত এই রোগের চূড়ান্ত নিরাময়ের উপায় বের হয়নি। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে সুস্থ ও পরিকল্পিত জীবনধারার বিকল্প নেই। নিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস ও সুপরিকল্পিত দৈনন্দিন অভ্যাসের মাধ্যমে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। তবে সারাবছর ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের উপায় এক রকম থাকলেও গরমের সময় সেটি বদলে যায়। বিশেষ করে, তীব্র দাবদাহ ও ভ্যাপসা গরমের সময় ডায়াবেটিস রোগীরা বেশ ঝুঁকির মধ্যে থাকেন।

জনপ্রিয় স্বাস্থ্যবিষয়ক মার্কিন ওয়েব জার্নাল হেলথ লাইন এ সংক্রান্ত নিবন্ধ প্রকাশ করেছে। নিবন্ধে বলা হয়েছে, ডায়াবেটিস রোগীদের হাইড্রেটেড থাকতে স্টার্চযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলতে ও উচ্চ আঁশযুক্ত খাবার খেতে হবে। বিশেষ করে গরমের দিনগুলোতে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে। সেই সঙ্গে আরও কিছু ফলমূল ও শাকসবজি খেতে হবে ডায়াবেটিস রোগীদের।

ডায়াবেটিস রোগীদের পানীয়

পুদিনার লাচ্ছি: শরীরের হাইড্রেশন বজায় রাখতে পানির বিকল্প নেই। তবে গরমের সময় পানিটাকে সাপ্লিমেন্ট হিসেবে তৈরি করে নিতে পারেন। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য পুদিনার লাচ্ছি অত্যন্ত উপকারি। টক দই, বিট লবণ, পুদিনা পাতা, জিরা গুঁড়া মিশিয়ে সহজেই পুদিনার লাচ্ছি তৈরি করতে পারেন।

বেলের শরবত: আমাদের দেশে এই সরবত অত্যন্ত জনপ্রিয়। এটির স্বাস্থ্যগত উপকারিতাও ব্যাপক। বেলের শরবত হলো গরমের সময়ের সেরা পানীয়। এটি ভেতর থেকে শক্তি জোগায়। উডেন অ্যাপেল নামে পরিচিত এই ফল পেট ভরিয়ে রাখার পাশাপাশি স্বস্তিদায়ক। অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস, আয়রন, ফোলেট, ভিটামিন এবং খনিজের দারুণ এক উৎস বেল। তাই, বেলের শরবত ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য হতে পারে আদর্শ পানীয়।

কাঁচা আমের জুস: গরমের সময় বিশেষ করে বৈশাখ-জৈষ্ঠ্য মাসে গাছে গাছে কাঁচা আম থাকে। ডায়াবেটিস রোগীরা কাঁচা আমের জুস করে খেতে পারেন। এটি অত্যন্ত স্বাস্থ্যকর ও উপকারি। কাঁচা আমের জুস নিজের পছন্দ মতো উপকরণ মিশিয়ে তৈরি করে নিতে পারেন। এটি শরীর শীতল করে।

টক দইয়ের ঘোল: এই পানীয়টি দেহের ক্ষতিকর টক্সিন বের করে দেয়। ঠাণ্ডা ঘোল অত্যন্ত স্বাদের হয়। গরমের দিনে টক দইয়ের ঘোল শরীর সতেজ রাখে।

গরমে ডায়াবেটিস রোগীর খাবার

গবেষকরা বলছেন, গরমের দিনে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য কয়েক ধরণের খাবার সবচেয়ে উপযোগী। সেগুলো হলো-

উদ্ভিজ আমিষ

ছোলা-বুট, ডাল, শিমের বিচি, মিষ্টি কুমড়ার বিচি, কাঁঠালের বিচি সবচেয়ে উত্তম উদ্ভিজ আমিষের উৎস। এসব প্রাকৃতিক খাদ্য উপাদান ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য সবচেয়ে উপকারি। এসব উপাদানে অতিরিক্ত ক্যালরি, কোলেস্টেরল ও ফ্যাট না থাকায় তা ডায়াবেটিস রোগীদের দেহে ইতিবাচক প্রভাব বিস্তার করে। অল্প পরিমাণ উদ্ভিজ আমিষ ডায়াবেটিস রোগীদের শরীরে শক্তি যোগায়।

সালাদ

শসা, গাজর, বাধাকপির সালাদ ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অত্যন্ত উপকারি খাবার। এই সালাদটি গরমের দিনে ডায়াবেটিস রোগীদের দেহকে শান্ত ও সতেজ রাখে। গরমের দিনে খাদ্য তালিকায় সালাদ রাখুন। সালাদের উপাদানগুলো রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।

ফ্রাইড রাইস

আমেরিকান ডায়াবেটিস অ্যাসোসিয়েশনের রিপোর্ট বলছে, গরমের দিনে ডায়াবেটিস রোগীরা যত কম কার্বোহাইড্রেট গ্রহণ করবে, ততই মঙ্গল। আর তাই, গরমে সুস্থ থাকতে হলে ডায়াবেটিস রোগীদের ফ্রাইড রাইস খাওয়া নিরাপদ। কারণ, সাধারণ রাইসের তুলনায় ফ্রাইড রাইসে কার্বোহাইড্রেট কম থাকে।

শাক-সবজি

গরমে সুস্থ শরীর পেতে ডায়াবেটিস রোগীদের প্রচুর শাক-সবজি খেতে হবে। বিশেষ করে, ফুলকপি, বাধাকপি, ঢেঁড়স, পুইশাক, লাউ-সহ অন্যান্য সবজি খেতে হবে। সতেজ ও টাটকা সবজি গরমে শরীরে আরাম অনুভূতি সৃষ্টি করে।

 

তথ্যসূত্র: হেলথ লাইন ও টাইমস অব ইন্ডিয়া।

১৮ এপ্রিল ২০২৩, ০৭:৫৮পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।