• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • রোববার, ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১

গরুর গোশত কেন খাবেন?

গরুর গোশত কেন খাবেন?

প্রতিকী ছবি

ফিচার ডেস্ক

পুষ্টিমান ও খনিজ উপাদানে ভরপুর গরুর গোশত। গরুর গোশত খাওয়ার ব্যাপারে চিকিৎসকের নানামুখী পরামর্শ রয়েছে। গবেষকদের কেউ কেউ বলছেন, গরুর গোশত খাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ। আবার কেউ কেউ বলছেন, রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি, হিমোগ্লোাবিনের সংকট কাটাতে এবং হাড় ও দাঁতের সুরক্ষায় গরুর গোশতের বিকল্প পাওয়া কঠিন।

আমাদের দেশে গরুর গোশতের কদর অনেক। গরুর গোশত যে উপকারি তা নিয়ে সন্দেহ নেই। তবে গরুর গোশত খাওয়ার ব্যাপারে পরিমিতি বজায় রাখা উচিত। মনে রাখা দরকার, কোনো কিছুর অতিরিক্ত ভালো নয়।

স্বাস্থ্য ও পুষ্টিবিষয়ক জনপ্রিয় গ্লোবাল ওয়েব জার্নাল ওয়েব এমডি গরুর গোশতের উপকারিতা ও পুষ্টিমান নিয়ে নিবন্ধ প্রকাশ করেছে। যেখানে বলা হয়েছে-

প্রতি ৩ আউন্স বা ৮৫ গ্রাম চর্বি ছাড়া গরুর গোশতে ক্যালরি থাকে দৈনিক চাহিদার ১০% বা ২০০ ক্যালরি। এতে আরও থাকে কোলেস্টেরল ৪৭ মিলিগ্রাম, প্রোটিন, জিঙ্ক, ভিটামিন বি১২, সেলেনিয়াম, ফসফরাস, নায়াসিন, ভিটামিন বি৬, আয়রন এবং রিবোফ্লেভিন।

কেন খাবেন গরুর গোশত

পেশি গঠন করে: গবেষকরা বলছেন, গরুর গোশতে রয়েছে প্রচুর প্রোটিন, যা শরীরের পেশি গঠনে ভূমিকা রাখে। এই গোশত পেশি মজবুত করে এবং পেশি স্বাস্থ্য সুরক্ষিত রাখে। এতে দরকারি সব অ্যামাইনো অ্যাসিড আছে। এ কারণে গরুর মাংসকে বলা হয় ‘কমপ্লিট প্রোটিন’।

রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়: গরুর গোশতে থাকে পর্যাপ্ত জিঙ্ক। এই উপাদানটি দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এ ছাড়া এতে থাকা ফসফরাস ও ক্যালসিয়াম দাঁত ও হাড় মজবুত করে। এতে থাকা পরিমিত মাত্রার প্রোটিন পেশীর ক্ষয় রোধ করে। ফলে ‘স্যারকোপেনিয়া’ রোগের ঝুঁকি কমে।

পেশিতে অক্সিজেন ছড়ায়: আয়রনে ভরপুর একটি গোশতের নাম গরুর গোশত। এতে থাকা আয়রন শরীরের পেশিগুলোতে অক্সিজেন প্রবাহে সহায়তা করে। এ ছাড়া গরুরু গোশতে থাকা ভিটামিন বি১২ খাদ্য থেকে শক্তি যোগান দেয়।

বর্ধনশীল বাচ্চাদের জন্য আদর্শ খাবার: শিশু কিশোরদের শক্তিশালী করে গড়ে তুলতে গরুর গোশতের বিকল্প পাওয়া কঠিন। এই গোশত শিশ-কিশোরের শারীরিক বৃদ্ধির পাশাপাশি মানসিক গঠনে ভূমিকা রাখে।

শরীরচর্চায় শক্তি যোগায়: যারা নিয়মিত শরীরচর্চা করেন, তাদের পেশীতে চাই বাড়তি শক্তির যোগান। আর পেশীতে এ শক্তির যোগান দেবে কারনোসাইন নামের একটি উপাদান। যা তৈরি হয় বেটা-অ্যালানাইন থেকে। গরুর গোশতে এই বেটা-অ্যালানাইন পর্যাপ্ত রয়েছে।

রক্তশূন্যতা দূর করে: রক্তে লৌহকণিকা কমে গেলে রক্তশূন্যতা তথা অ্যানিমিয়া রোগ হয়। এই রোগ দূর করতে গরুর গোশতের জুড়ি মেলা ভার। কারণ, এতে রয়েছে আয়রন, ক্যালসিয়ামসহ নানা খনিজ উপাদান। যা রক্তকণিকা তৈরিতে সহায়তা করে।

গরুর গোশত নিয়ে যা জানা দরকার

→ সুস্বাস্থ্য পেতে বা ঝুঁকিহীন জীবনযাপনের জন্য অনেকেই গরুর গোশত এড়িয়ে চলেন। কখনো কখনো বিভিন্ন রোগের নেপথ্য কারণ হিসেবে গরুর গোশতকে ঢালাও ভাবে দায়ী করা হয়। গরুর গোশতের ওপর এরকম ঢালাও দোষারোপ করা মোটেও সঠিক নয়। গরুর গোশত উপকারি, তবে তা চর্বিমুক্ত হলেউ উত্তম।

→ পুষ্টিবিদরা বলছেন, গরুর গোশত ঝোল বা কম মসলা দিয়ে ভুনা করে খাওয়া নিরাপদ। গরুর গোশত দিয়ে গ্রিল বা রোস্ট করে খাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ।

→ গরুর গোশত রান্নার ক্ষেত্রে অলিড অয়েল ব্যবহার করা যেতে পারে। এ ছাড়া গরুর গোশত খাওয়ার পর হাটাহাটি বা হালকা ব্যায়াম করা উচিত। এতে হজম ঠিক থাকে।

→ যাদের দেহে অন্যান্য জটিল রোগ রয়েছে, তারা গরুর গোশত খাওয়ার ব্যাপারে রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন।

 

তথ্যসূত্র: ওয়েবএমডি।

০৫ এপ্রিল ২০২৩, ০৭:০০পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।