• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • রোববার, ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১

জাদুকরি গুণে ভরপুর বেকিং সোডা

জাদুকরি গুণে ভরপুর বেকিং সোডা

প্রতিকী ছবি

ফিচার ডেস্ক

বেকিং সোডা। কেক, পুডিং, বিস্কুট, চপ, বেগুনিসহ নানা ধরণের খাবারে ব্যবহার হয় এটি। নিত্যদিন বাহারি খাবার তৈরিতে আমরা বেকিং সোডা ব্যবহার করলেও এর গুণাগুণ সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানি না। বেকিং সোডা শরীরে এসিডিটি নির্মুলে কাজ করে। তবে অতিরিক্ত বেকিং সোডা খাওয়ার ফলে হাড় ও দাঁতের ক্ষতি হয়। এটি দামে সস্তা। এছাড়াও এর রয়েছে অ্যান্টিসেপটিক গুণ।

মূলত বেকিং সোডা সোডিয়াম বাইকার্বোনেট সমৃদ্ধ একটি উপাদান। এটিতে নাহকোলাইট থাকে যা প্রাকৃতিক খনিজ ন্যাট্রন। ইজিপ্সিয়ানরা প্রাচীন কালে এটিকে সাবান হিসাবে ব্যবহার করতেন। যদিও এটি বর্তমানে রান্নার একটি সামগ্রীতে পরিণত হয়েছে।

বেকিং সোডার জাদু

জনপ্রিয় মার্কিন স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েব জার্নাল হেলথ লাইনে প্রকাশিত নিবন্ধে বলা হয়েছে, বেকিং সোডা রান্না ছাড়াও দুর্গন্ধনাশক, হাত ও দাঁত পরিষ্কারক ও বাসনপত্র পরিষ্কারক হিসেবে ব্যবহার বেশ জনপ্রিয়। পুষ্টিবিদরা বলছেন, প্রতিদিন সামান্য পরিমাণ বেকিং সোডা ব্যবহারের ফলে শরীরে রক্তের পরিমাণ ঠিক থাকে। এটি দেহে অ্যাসিডের পরিমাণ হ্রাস করতে সহায়তা করে। এছাড়া এটি-

অ্যাসিডিটি দূর করে: অ্যাসিড নিঃসরণ হলো শরীরের খুব সাধারণ একটি ঘটনা। যার ফলে অ্যাসিডিটি বা গ্যাস্টিকের সমস্যা দেখা দেয়। বেকিং সোডার মধ্যে সোডিয়াম বাইকার্বোনেট থাকার ফলে অ্যাসিডিটির সমস্যা এবং পেট ফাঁপা নিরাময় হয়।

প্রাকৃতিক অ্যালকালাইসিং: শরীর থেকে অ্যাসিডিটির পরিমাণ কমাতে এবং পি.এইচ এর ভারসাম্য ঠিক রাখতে বেকিং সোডার জুড়ি মেলা ভার। আমাদের দেহে অ্যাসিডিটি বেশি হয়ে গেলে অস্টিওপরোসিস, আর্থারাইটিস এর মতো সমস্যা দেখা দেয়।

মূত্রনালির সংক্রমণ দূরে রাখে: মূত্রনালির সংক্রমণের উপশমে অন্যতম একটি ঘরোয়া পদ্ধতি হলো বেকিং সোডা। এটি পানির সঙ্গে মিশ্রণ করে খেতে হয়ে। এতে মূত্রনালির সংক্রমণ ঠিক হয়।

ব্যায়ামজনিক শারীরিক সমস্যা দূর করে: অতিরিক্ত ব্যায়াম করার ফলে শরীরে ল্যাকটিক অ্যাসিড জমতে পারে। এতে শরীরে পেশীগত কাঠিন্নতা দেখা দেয়। এই সমস্যার প্রতিষেধক হিসাবে বেকিং সোডা অত্যন্ত কার্যকরী।

গেঁটে বাতের শত্রু: ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ মূত্র এবং টিস্যুতে অতিরিক্ত পরিমাণে বেড়ে গেলে আঙুলের জয়েন্টে তীব্র ব্যথা হয়। এটি ঠিক করতে বেকিং সোডা অসম্ভব কার্যকরী।

ত্বক ভালো রাখে: ত্বকের মৃত কোষ অপসারিত করে নতুন কোষ তৈরিতে সাহায্য করে বেকিং সোডা। পানির সঙ্গে বেকিং সোডা মিশিয়ে মুখে বৃত্তাকারে ঘষে লাগালে উপকার পাওয়া যায়। সপ্তাহে দুই দিনের বেশি ব্যবহার করা উচিত নয়।

ব্রণ ও ঠোটের কালো দাগ দূর করে: ব্রণ এবং মুখে হওয়া ফুসকুড়ি কমাতে বেকিং সোডা বেশ কার্যকরী। এ ছাড়া মধু এবং বেকিং সোডা মিশিয়ে প্রতিদিন তিন মিনিট করে ঠোটে লাগিয়ে রাখলে ঠোটের কালোভাব দূর হয়।

দাঁত ও চুল উজ্জ্বল করে: দাঁতের কালো দাগ দূর করতে বেকিং সোডার ‘লা জবাব’। এ ছাড়া এটি নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে বেকিং পাউডার।

বেকিং সোডার আরও কিছু ব্যবহার

ডিমভাজি হবে আরও নরম

বেকিং পাউডার খাবারকে নরম করে ও খাবারে ফোলাভাব আনে। ডিম ফেটানোর সময় ১/৪ চা চামচ বেকিং সোডা মিশিয়ে নিন। তবে এতে লবণ বেশি দেবেন না। কারণ, বেকিং সোডা হালকা লবণের স্বাদ যোগ করে।

হাত থেকে দূর হবে মাছের গন্ধ

মাছ কাটার পর হাত থেকে মাছের আঁশটে গন্ধ কোনভাবেই দূর হতে চায় না। সেক্ষেত্রে ব্যবহার করতে হবে বেকিং সোডা। কুসুম গরম পানিতে বেকিং সোডা মিশিয়ে সেই মিশ্রণটি ব্যবহার করতে হবে হাতে।

মশার কামড় থেকে রক্ষা

মশা কামড়ালে হাতের তালুতে এক চা চামচ পরিমাণ বেকিং সোডা নিয়ে কয়েক ফোঁটা পানি মিশিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করতে হবে। এতে করে ত্বকের সমস্যা ও লালচে ভাব উভয়ই দূর হবে।

পেটের গড়বড় কমায়

কফি, কমলালেবুর জ্যুস কিংবা টমেটো স্যুপের সঙ্গের এক চিমটি বেকিং সোডা মিশিয়ে নিন। তবে পরিমাণে খুব বেশি মেশানো যাবে না। এতে পানীয় বা খাবারের স্বাদ নষ্ট হয়ে যাবে।

পায়ের গন্ধ দূর করে

পায়ের বাজে গন্ধ তৈরি হয় ফাংগাল ইনফেকশনজনিত কারণে। এই সমস্যার সমাধান পেতে ঠাণ্ডা পানিতে আধা কাপ বেকিং সোডা ভালোভাবে মিশিয়ে মিশ্রণে ১৫-২০ মিনিট পা ডুবিয়ে রাখুন।

 

তথ্যসূত্র: হেলথ লাইন।

০৪ এপ্রিল ২০২৩, ০২:১৬পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।