• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

কোমল পানীয়, গরল প্রতিফল

কোমল পানীয়, গরল প্রতিফল

প্রতিকী ছবি

ফিচার ডেস্ক

কোমল পানীয় বা এনার্জি ড্রিংকস বেশ জনপ্রিয়। আড্ডা, পার্টি, পিকনিক কিংবা ঘরোয়া খাবারের আয়োজন, সবখানেই এখন কোমল পানীয় ছাড়া যেন চলেই না। আবার অনেকেই প্রচন্ড গরমে তৃষ্ণা মেটাতে কোমল পানীয় পান করেন। ঠাণ্ডা কোমল পানীয় খাওয়া কারও কারও অভ্যাসেও পরিণত হয়েছে। কিন্তু আমরা অনেকেই জানি না এসব ড্রিংকস স্বাস্থ্যের জন্য কতোটা উপকারি বা কতটা ক্ষতিকর।

পানি, চিনি, সোডিয়াম, পটাশিয়াম, লেবুর জুস দিয়ে প্রথম তৈরি করা হয় এনার্জি ড্রিংকস। কালের বিবর্তনে এই পানীয়তে পরিবর্তনও এসেছে। বর্তমানে কোমল পানীয় বা এনার্জি ড্রিংকসের সঙ্গে যোগ হয়েছে ক্যাফেইন, অ্যালকোহল ও অপিয়েট। আপনারা কি জানেন, ক্যাফেইন মস্তিষ্ক উত্তেজিত করে। আর একারণেই কোমল পানীয় খেলে মনের মধ্যে ভালো লাগা শুরু হয়।

কোমল পানীয় এর ক্ষতিকর দিক

স্বাস্থ্য ও পুষ্টিগবেষকরা বলছেন, সময়ের প্রয়োজনে এখন এনার্জি ড্রিংকসের ক্ষতিকর দিকগুলো সামনে আসছে। কারণ কোমল পানীয় পান করার অভ্যাস নিদ্রাহীনতা, অস্থিরতা, বদহজম, হাত-পায়ে কাঁপুনি, দ্রুত হৃৎস্পন্দন ও অকাল মৃত্যুর ঝুঁকিও বাড়িয়ে দিচ্ছে।

এ ছাড়া কোমল পানীয়কে গর্ভপাতের অন্যতম কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন বিশেষজ্ঞরা। সেই সঙ্গে শিশুর অপুষ্টি নিয়ে জন্মগ্রহণের ঝুঁকিও থাকে।

স্বাস্থ্য বিষয়ক ওয়েবজার্নাল মেডিকেল নিউজ টুডে ও টাইমস অব ইন্ডিয়ায় প্রকাশিত নিবন্ধে বলা হয়েছে, কোমল পানীয়তে ব্যবহার করা হয় সিনথেটিক ক্যাফেইন। যার প্রতিক্রিয়া ভয়াবহ। কাজেই এনার্জি ড্রিংকস কতটা ক্ষতিকর তা বলার অপেক্ষা রাখে না। কোমল পানীয় ফরমালিনের চেয়েও বরং ক্ষতিকর।

যেসব রোগ হতে পারে

ডায়াবেটিস: কোমল পানীয়তে ব্যবহৃত হয় প্রচুর চিনি। যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। এ ছাড়া যারা নিয়মিত কোমল পানীয় পান করেন, তাদের ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে।

কিডনী জটিলতা: শরীরের পানি শোধন প্রক্রিয়ায় কোমল পানীয় কিডনির ওপর নেতিবাচক চাপ প্রয়োগ করে। ফলে যারা কোমল পানীয় পান করেন, তাদের কিডনী ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে অল্প দিনে।

হার্টের ক্ষতি: কোমল পানীয়তে থাকা উপাদানগুলো আমাদের হৃদপিন্ড বা হার্টের ব্যাপক ক্ষতি করে। এতে থাকা সোডিয়াম, ক্যাফেইন ও অ্যালকোহল হৃদপিন্ড, লিভার বা যকৃতের ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। সেই সঙ্গে বাড়ে ক্যান্সারের ঝুঁকি।

দাঁতের ক্ষতি: কোমল পানি মূলত কার্বোনেটেড পানি। এতে থাকে চিনি ও অম্লীয় উপাদান। যা দাঁতের ক্ষতি করে অল্প দিনেই। তাই দাঁতের ক্ষয় ও সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে কোমল পানীয় এড়িয়ে চলুন।

হজমশক্তি কমায়: গবেষণায় দেখা গেছে, কোমল পানীয় ‘মেটাবলিক সিন্ড্রোম’ বা বিপাকক্রিয়ায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। ফলে ধীরে ধীরে হজমশক্তি কমে যায়।

লিভার আক্রান্ত করে: নিয়মিত যারা কার্বোনেইটেড পানীয় পান করেন, তাদের লিভার বা যকৃৎ দ্রুত কার্যক্ষমতা হারায়। এ ছাড়া যকৃতের বিভিন্ন রোগ দেখা দেয় কোমল পানীয় পান করলে।

স্থুলতা ও হাড় ক্ষয়: যারা ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে চান, তারা কোমল পানীয় থেকে দূরে থাকুন। কোমল পানীয়তে থাকা সুগার ও অ্যালকোহল দেহে চর্বি জমতে সহায়তা করে। ফলে ওজন বেড়ে যায়। এ ছাড়া কোমল পানীয়তে থাকা সোডিয়াম হাড়ের ক্ষয় বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে।

 

তথ্যসূত্র- মেডিকেল নিউজ টুডে ও টাইমস অব ইন্ডিয়া।

০৭ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৮:৩৪পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।