• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

দ্রুত মেদ কমানোর যত উপায়

দ্রুত মেদ কমানোর যত উপায়

প্রতিকী ছবি

ফিচার ডেস্ক

স্থুলতা এখন বড় একটি সমস্যা। অপরিকল্পতি ও অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস এবং সুষ্ঠ জীবনধারা মেনে না চলার কারণে মানুষ স্থুলতায় ভুগছে। অল্পতেই মেদ ভুঁড়ি বেড়ে যাচ্ছে। এই সময়ের অন্যতম একটি আগ্রহের বিষয় ‘কিভাবে মেদ কমানো যায়’। প্রিয় পাঠক আমরা আজকে এমন কিছু পরামর্শ ও টিপস তুলে ধরার চেষ্টা করেছি, যা আপনাদের দেহের মেদ ও ভুঁড়ি কমাতে সহায়তা করবে।

মেদ ভুঁড়ি কমাবেন কেন

সুস্বাস্থ্যের জন্য প্রত্যেক মানুষের উচ্চতা অনুযায়ী দেহের ওজনের একটি মাত্রা নির্ধারিত রয়েছে। সেই নির্ধারিত মাত্রার বেশি ওজন হলেই আমরা কাউকে স্থুল বা মোটা বলে থাকি। স্থুলতা শুধু একটি সমস্যাই নয়, বরং এটি হাজারো রোগের কারণ। স্থুল বা মেদযুক্ত মানুষ হৃদরোগ, স্ট্রোক, উচ্চ রক্তচাপ, আর্থ্রাইটিস, কোষ্ঠকাঠিন্য, অনিদ্রাসহ নানা রোগের ঝুঁকিতে থাকে। তাই, মেদহীন সুঠাম দেহ সবারই কাম্য।

মেদ কমানোর ব্যায়াম

বিখ্যাত মার্কিন স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েব জার্নাল হেলথ লাইন, মেডিকেল নিউজ টুডে ও টাইমস অব ইন্ডিয়ায় প্রকাশিত নিবন্ধে এ সংক্রান্ত পরামর্শ দেয়া হয়েছে। আমরা সেই পরামর্শগুলো সাবলীল ভাবে আপনাদের জন্য তুলে ধরেছি। দেহের মেদ কমাতে হলে-

নিয়মিত ব্যায়াম করুন: প্রতিদিন নিয়ম করে আপনাকে ব্যায়াম করতে হবে। সপ্তাহে চারদিন ব্যায়াম করতেই হবে। এজন্য আপনাকে জিমে গিয়ে ভারি ভারি যন্ত্রপাতি নিয়ে ব্যায়াম করতে হবে না। বরং রাস্তায় বা পার্কে দাঁড়িয়ে একটানা ৩০ মিনিট হাটাহাটি করুন। এরপর হালকা ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ করে নিন।

দ্রুত হাঁটুন: সকাল-বিকাল হাঁটার সময় দ্রত হাঁটুন। আপনি যদি ধীরে ধীরে হাটাহাটি করেন, তাহলে কোনো উপকার পাবেন না। তবে দ্রুত হাটার আগে প্রথম পাঁচ মিনিট ওয়ার্ম আপ করে নিন। ওয়ার্ম আপ শেষে ৩০ সেকেন্ড বিরতি নিয়ে পরবর্তি ৩০ সেকেন্ড আস্তে আস্তে হাঁটুন। এভাবে কয়েকবার করতে হবে।

পুশ আপ দিন: দ্রুত মেদ কমাতে পুশ আপ অত্যন্ত কার্যকরী। এই ব্যায়ামটা আমাদের কাছে খুবই পরিচিত। উপুড় হয়ে দেহের ভার হাত আর পায়ের পাতার ওপর দিয়ে, একবার নীচে নামুন, আরেকবার উপরে তুলুন।

স্ট্যান্ডিং বার্ড ডগ ব্যায়াম: এই ব্যায়ামটা পরিচিত হলেও নামের সঙ্গে আমাদের অনেকেরই পরিচয় নেই। প্রথমে ডান পায়ে ভর দিয়ে দাঁড়ান, তারপর বাম পা-টি ধীরে ধীরে বুকের কাছে তুলে আনুন। দুই সেকেন্ড পর বাম পা পেছন দিকে, আর দুই হাত ওপরে তুলে ধরুন। এটা শেষ হলে বাম পায়ে ভর দিয়ে ডান পা দিয়ে ব্যায়ামটি করুন।

বারপি ব্যায়াম: দুই পা একসাথে রেখে দুই হাত মাথার ওপরে তুলুন। তারপর ধীরে ধীরে হাত নামিয়ে মাটিতে রাখুন, দুই হাত দুই পায়ের দুই পাশে। এবার প্রথমে বাম পা পেছনে বর্ধিত করুন, তারপর বাম পা আগের অবস্থায় এনে ডান পা পেছনে বাড়ান। তারপর আবার দাঁড়িয়ে দুই হাত মাথার উপরে তুলুন। এভাবে কয়েকবার করুন।

সাইড প্লাঙ্ক ব্যায়াম: ডান হাত এবং ডান পায়ের কিনারের ওপর ভর দিয়ে আপনার দেহটি শুন্যে তুলে ধরুন। যেন কাঁধ, কোমর আর পা একই লাইনে থাকে। এবার বাম হাতটি ওপরে তুলে ধরুন। কিছুক্ষণ পর পার্শ্ব বদল করে নিন। এসব ব্যায়াম অল্পদিনের মধ্যেই আপনার দেহের অতিরিক্ত মেদ কমাতে সহায়তা করবে।

পর্যাপ্ত ঘুমান: পর্যাপ্ত ঘুম না হলে স্ট্রেস হরমোন আর ইনসুলিন লেভেল বেড়ে যায়। ফলে মেটাবোলিজমের হারও কমে। তাই নিয়মিত পর্যাপ্ত ঘুমের অভ্যাস করুন। এতে আপনার মেদ ভুঁড়ি সবই কমে যাবে।

মেদ কমাতে ঘরোয়া কিছু উপায়

পুষ্টিবিদ, বিউটিশিয়ান ও বিভিন্ন স্বাস্থ্য গবেষকরা বলছেন, দেহের বাড়তি মেদ ও ভুঁড়ি কমাতে বেশ কছু কার্যকরী উপায় রয়েছে। যেমন-

গরম পানিতে লেবু: সকালে এক কাপ ঘন কফি বা চা পান করার অভ্যাস অনেকেরই আছে। সকালে চা-কফি মন সতেজ করে। কিন্তু আপনি কি জানেন, সকালে খালি পেটে কুসুম গরম পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে পান করলে আপনার মেদ-ভুঁড়ি সব কমে যাবে। তবে গরম পানিতে লেবু খেতে অসুবিধা হলে এক চা চামচ মধু মিশিয়ে নিতে পারেন।

জিরা পানি পান করুন নিয়মিত: প্রতিদিন সকালে পানীয় হিসেবে জিরা পানি পান করতে পারেন। এই পানীয়টি হজম ক্ষমতা বাড়াতেও সহায়তা করে। জিরা পানি পেট ফোলাভাব কমায় ও পেটের মেদ কমাতে সহায়ক ভূমিকা রাখে।

নাস্তায় প্রোটিন রাখুন: খাদ্যতালিকায় বেশি বেশি প্রোটিন রাখুন। সকালের নাস্তায় প্রোটিন বেশি খেলে পেশি মজবুত হয়। ফলে বাড়তি ক্যালরি গ্রহণের ঝুঁকি কমে। এতে দেহের মেদও কমে যায়। প্রোটিন রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণকরে ও দেহে চর্বি সঞ্চয়কারী ইন্সুলিনের মাত্রা কমায়।

শস্য-জাতীয় খাবার খান: খাদ্যতালিকায় বেশি বেশি শস্য-জাতীয় খাবার রাখুন। কারণ, শস্য-জাতীয় খাবারে আঁশ বেশি থাকে। উচ্চ আঁশ সমৃদ্ধ শস্য ওজন কমায় এবং পেটের মেদ কমাতেও সহায়তা করে।

খেতে পারেন মসলা: আদা স্থুলতা দূর করার অন্যতম একটি উপাদান। আদায় থাকা প্রদাহনাশকউপাদান ওজন কমাতে সহায়তা করে। এটি দেহের ইনসুলিনের মাত্রাও নিয়ন্ত্রণে রাখে।

পর্যাপ্ত পানি পান: ওজন কমানোর মূল চাবি কাঠি হল পর্যাপ্তপানি পান করা। নিজেকে আর্দ্র রাখার পাশাপাশি এটা অস্বাস্থ্যকর খাবারের চাহিদা কমায়। খাবারের আগে পানি পান অতিরিক্ত খাওয়ার সম্ভাবনা হ্রাস করে ফলে পেটে চর্বি জমা হওয়ার ঝুঁকি কমে।

 

তথ্যসূত্র: হেলথ লাইন, মেডিকেল নিউজ টুডে ও টাইমস অব ইন্ডিয়া।

০৪ আগস্ট ২০২২, ০৪:৫৬পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।