শিশুর ওজন ও ইমিউনিটি বাড়াবে ৭ খাবার
প্রতিকী ছবি
প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষ তার শরীরের সক্ষমতা ও দুর্বলতা প্রকাশ করতে পারে। নিজের সুবিধা ও প্রয়োজন মতো খাবার খেতে পারে প্রাপ্ত বয়স্করা। কিন্তু বিপত্তি শিশুদের বেলায়। শিশুরা নিজেদের জন্য সুবিধাজনক ও প্রয়োজনীয় খাবার পছন্দ করতে পারে না। এজন্য শিশুর মা-বাবা বা অভিভাবককেই দায়িত্ব নিতে হয়। শিশুর দেহের বাড়তি যত্ন নিতে মা-বাবাকে সব সময় সতর্ক ও সচেতন থাকতে হবে।
বিশেষ করে শিশুর ওজন ঠিক রাখতে ও রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়ক খাবার বাছাইয়ে আমাদের জোর দিতে হবে। শিশুর জন্য সব খাবারই কি যথেষ্ট? নাকি প্রাপ্ত বয়স্ক ও শিশুর খাবারের মধ্যে পার্থক্য আছে? এ ধরণের বিষয় নিয়ে আমাদের আজকের পর্ব সাজানো হয়েছে। চলুন দেখে নিই বিস্তারিত।
শিশুর খাবার কেমন হবে
জনপ্রিয় মার্কিন সাস্থ্যবিষয়ক ওয়েব জার্নাল হেলথ লাইন ও প্যারেন্টস টাইম জার্নালে প্রকাশিত নিবন্ধে বলা হয়েছে, শিশুর খাবার সবসময় সতেজ, টাটকা ও হালকা হওয়া জরুরি। মসলাদার, ভারি ও শক্ত খাবার শিশুর জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে। শিশুর দেহের হজমশক্তি প্রাপ্ত বয়স্কদের মতো নয়। কাজেই, শিশুর খাবার হওয়া উচিত নরম, কোমল ও তরল জাতীয়।
শিশুর ওজন ও রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াবে ৭ খাবার
মায়ের বুকের দুধ: বহু গবেষণায় এটি সার্বজনীন ভাবে প্রমাণিত যে, মায়ের বুকের দুধ শিশুর জন্য সর্বোত্তম খাবার। জন্মের পর থেকে ৬ মাস বয়স পর্যন্ত শিশুকে শুধুমাত্র মায়ের বুকের দুধই খাওয়াতে হবে। অন্য কোনো খাবার এই বয়সের শিশুকে দেয়া ঝুঁকিপূর্ণ।
তবে শিশুর বয়স ৬ মাস পূর্ণ হওয়ার পর মায়ের বুকের দুধের পাশাপাশি বাড়তি খাবার দিতে হবে। এক্ষেত্রে ফর্মুলা দুধ দিতে পারেন। বাজারে ভালো মানের ফর্মুলা দুধ পাওয়া যায়। এ ছাড়া ডাল-চাল দিয়ে নরম খিচুড়ী করে খাওয়াতে পারেন। খিচুড়ীতে অবশ্যই যেকোনো একরম ডাল ও এক থেকে দুই রকম সবজি ব্যবহার করতে পারেন।
কলা: কলায় রয়েছে পর্যাপ্ত পটাসিয়াম, কার্বোহাইড্রেট এবং উচ্চ ক্যালোরি। কাজেই, শিশুর দেহের শক্তি বৃদ্ধিতে কলা হতে পারে অনন্য একটি উৎস। কলা নরম হওয়ায় এটি সহজে শিশুরা খেতে পারে। কলা হজমশক্তিও বৃদ্ধি করে। প্রয়োজনে দুধ শেক, কলা কেক, পুডিং করে শিশুকে খাওয়াতে পারেন।
খাঁটি ঘি: শিশুর রোগপ্রতিরোধ ও ওজন বৃদ্ধির জন্য সপ্তাহে দুই থেকে তিন বার ঘি খাওয়াতে পারেন। তবে খেয়াল রাখবেন, ঘি যেন অবশ্যই খাঁটি হয়। ঘিতে চর্বি কন্টেন্ট এবং পুষ্টির মান উচ্চ পর্যায়ে থাকে। দেশি ঘি বা আয়ুর্বেদিক ঘি ব্যবহার করতে পারেন। তবে যেসব শিশুর দেহে এলার্জির লক্ষণ আছে, তারা ঘি পরিহার করুন।
ক্রিম দই: আপনার শিশুর ওজন বৃদ্ধির জন্য সবচেয়ে স্বাস্থ্যকর উপাদানগুলোর মধ্যে ক্রিম দই হতে পারে দারুণ একটি উৎস। কারণ, এটি ক্যালসিয়াম, চর্বি এবং পুষ্টির এক সমৃদ্ধ সংমিশ্রণ। ক্রিম দই আপনার শিশুকে খাওয়াতে পারেন। এটি নিরাপদ। তবে ক্রিম দই গরুর দুধ দিয়ে তৈরি কিনা খেয়াল করবেন। গরুর দুধের ক্রিম দই খাওয়ানোর আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন।
ডাল: ম্যারাথিক প্রোটিন, ক্যালসিয়াম এবং সুস্থ ফ্যাটি অ্যাসিডের এক আদর্শ উৎস ডাল। কাজেই ডাল-চাল ও সবজি মিশিয়ে নরম খিচুড়ী তৈরি করে খাওয়াতে পারেন। এ ছাড়া ডাল দিয়ে বিশেষ নরম খাবার বানাতে পারেন। তবে শিশুর খাবার তৈরিতে চিনির ব্যবহার পরিহার করুন। বিকল্প মিষ্টি উপকরণ যুক্ত করতে পারেন। স্বাদের ভিন্নতা আনার জন্য বিভিন্ন শাকসবজি যোগ করার চেষ্টা করতে পারেন।
আলু: আলু এমন একটি খাদ্য উপাদান, যা দ্রুত ওজন বৃদ্ধি করে। তাই এটি আপনার সন্তানের খাদ্যতালিকায় রাখতে পারেন। আলু সহজে হজম হয়। তবে এতে কার্বোহাইড্রেট বেশি থাকায় পরিমিত আকারে খাওয়ানো উচিত। শিশুর অতিরিক্ত স্থুলতা ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। আপনারা চাইলে, সেদ্ধ আলুর সঙ্গে ঘি, মাছ, ডিম যুক্ত করে শিশুকে খাওয়াতে পারেন।
ওটস: বর্তমান সময়ে ওটস খুবই জনপ্রিয় একটি শিশু খাদ্য হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। ওটসে রয়েছে উচ্চ মাত্রার ফাইবার। এটি খুবই স্বাস্থ্যকর খাদ্য। হজমশক্তি বাড়াতে ওটস বেশ কার্যকরী। তাই ওটসের সঙ্গে দুধ মিশিয়ে শিশুকে খাওয়ানো যেতে পারে।
তথ্যসূত্র: হেলথ লাইন ও ওয়েব এমডি।