• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

আমের যত গুনাগুণ

আমের যত গুনাগুণ

ফিচার ডেস্ক

বাংলাদেশের জাতীয় ফল আম। এটি পছন্দ করেন না এমন মানুষ বোধহয় কমই আছেন। অনেকে তো অপেক্ষায় থাকে, কবে জ্যৈষ্ঠ মাস আসবে, আর মন ভরে আম খাবেন। বিভিন্ন জাতের আম পাওয়া যায় বাজারে। একেক জাতের আমের রয়েছে আকার এবং স্বাদের ভিন্নতা। রয়েছে বাহারি সব নাম। যেমন ফজলি, ল্যাংড়া, গোপালভোগ, খিরসা, অরুনা, আম্রপালি, মল্লিকা, সুবর্নরেখা, মিশ্রিদানা, নিলাম্বরী, কালীভোগ, কাচামিঠা, আলফানসো, বারোমাসি, তোতাপূরী, কারাবাউ, কেঊই সাউই, গোপাল খাস, কেন্ট, সূর্যপূরী, পাহুতান, ত্রিফলা, হাড়িভাঙ্গা, ছাতাপরা, গুঠলি ইত্যাদি। আম যেমন সুস্বাদু, তেমনি পুষ্টিকর।

এবার জানা যাক আমের গুনাগুন সম্পর্কে

১. আম একটি লো ক্যালরি ফল। এতে রয়েছে উচ্চ পরিমানে ফাইবার, ভিটামিন-এ এবং ভিটামিন-সি। রয়েছে ফোলেট, আয়রন ভিটামিন বি-৬, সামান্য পরিমানে জিংক, ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন-ই। এছাড়া আমে রয়েছে এন্টিঅক্সিডেন্ট ও ফাইটো কেমিক্যালস।

২. আমে থাকা কোলাজেন আমাদের বয়স বাড়ার প্রক্রিয়ার লাগাম টেনে ধরে। বয়স বাড়ার সাথে সাথে ত্বকে যে বলিরেখা বা রিঙ্কলেল দেখা যায়, তা দূর করতে কোলাজেন সাহায্য করে। এছাড়া রং ফর্সা করতেও কোলাজেন বেশ কার্যকর। তাই, যারা বয়স ধরে রাখতে এবং ফর্সা ত্বক চান, তারা আম খাবার পাশাপাশি মুখে আমের পাল্প লাগাতে পারেন।

৩. ডাইজেস্টিভ সিস্টেমকে ঠিকঠাক ও নিরবিচ্ছিন্নভাবে কাজ আম করতে সাহায্য করে। আমে থাকা টারপিন ও এস্টার স্টোমাকের এসিডিটি কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া আমের উচ্চ ফাইবার ডাইজেস্টিভ সিস্টেমের যেকানো ধরণের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।

৪. আমে রয়েছে প্রচুর কার্বোহাইড্রেট, যা কর্মশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। তবে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য পরিমিত পরিমাণ আম শরীরে শর্করার মাত্রা ঠিক রাখে। আমপাতা ডায়াবেটিস রোগীদের ইন্সুলিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করেন।

৫. আম থেকে ভিটামিন-সি পাওয়া যায়, যা স্কার্ভি রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। দাঁত, মাড়ি, ত্বক ও হাড়ের সুস্থতা রক্ষা করতেও সাহায্য করে ভিটামিন -সি।

৬. আমে রয়েছে প্রচুর ক্যারোটিন, যা চোখ সুস্থ রাখে, সর্দি-কাশিও দূর করে। শুধু এক কাপ পাকা আম খেয়ে সারা দিনের ভিটামিনের চাহিদার ২৫ ভাগ পূরণ করা সম্ভব। এটা দৃষ্টিশক্তিকে উন্নত করতে সাহায্য করে, চোখের শুষ্কতা ও রাতকানা রোগ প্রতিরোধ করতেও সাহায্য করে।

৭. আমে থাকা ক্যালসিয়াম হাড় গঠনে সাহায্য করে। তাই আম খেলে হাড় ও দাঁত সুস্থ থাকবে।

৮. আমে থাকা উচ্চমাত্রার ভিটামিন-সি, পেকটিন ও আঁশ কোলেস্টেরলের ক্ষতিকর মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। আম পটাশিয়ামের খুব ভালো উৎস, যা উচ্চ রক্তচাপ ও হৃৎস্পন্দন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। ঘামের কারণে শরীর থেকে সোডিয়াম বের হয়ে যায়। আর, কাঁচাআম শরীরের সেই সোডিয়ামের ঘাটতি পূরণ করতে পারে। আমে উচ্চ আঁশ ও এন্টিঅক্সিডেন্ট থাকায় তা হৃদরোগের সম্ভাবনাকে কমায়। এর বিদ্যমান পটাশিয়াম রক্তস্বল্পতা দূর করে এবং হৃদযন্ত্র সচল রাখতে সাহায্য করে।

৯. ক্যান্সার প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে আম । গবেষকরা বলেছেন যে, আমে এন্টিঅক্সিডেন্ট ও উচ্চ পরিমাণ খাদ্য আঁশ থাকার কারণে এটা কোলন ক্যান্সার, স্তন ক্যান্সার, রক্তস্বল্পতা, লিউকেমিয়া ও প্রোস্টেট ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে।

যদিও আম অনেক পুষ্টিকর একটি ফল, তবুও মাত্রারিক্ত আম খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। বেশি আম খেলে রক্তে সুগার এবং দেহের ওজন উভয়ই বৃদ্ধি পেতে পারে। এছাড়া, আমে বেশি ফাইবার থাকায় খুব বেশি পরিমানে খেলে ডায়ারিয়া বা হজমে সমস্যা হতে পারে। যাদের, বাতের সমস্যা আছে অথবা ইউরিক এসিড বেশি তাদের আম না খাওয়াই ভালো।

 

টাইমস/এসজে

১৪ জুলাই ২০২১, ০৩:৩৯পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।