• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১

একাল-সেকালের সাক্ষী চৌকস নেতা নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন

একাল-সেকালের সাক্ষী চৌকস নেতা নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন

ফাইল ছবি

সেন্ট্রাল ডেস্ক

৬০ এর দশকে স্বৈরচার আইয়ূব-মোনায়েমের পাক শাসনের বিরুদ্ধে রাজপথে তীব্র আন্দোলন গড়ে ওঠে। তৎকালীণ আন্দোলনে রাজপথে সাহসী ভূমিকা রাখেন সংগ্রামী ছাত্রনেতা অ্যাডভোকেট নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন।

১৯৫০ সালের ১৬ ডিসেম্বর নরসিংদী জেলার মনোহরদী উপজেলার গোতাশিয়ার বাগানবাড়ী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন নরসিংদির মনোহরদী উপজেলার ঐতিহ্যবাহী মজিদ পরিবারের সন্তান। তাঁর বাবার নাম অ্যাডভোকেট এমএ মজিদ ও তাঁর মায়ের নাম নূর বেগম। নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুনের বাবা এম. এ মজিদ তৎকালীন অবিভক্ত বাংলার ইউনিয়ন বোর্ডের নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ও অনারাররি ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন এর স্ত্রীর নাম নাদিরা মাহমুদ। তিনি এক পুত্র ও দুই কন্যা সন্তানের জনক।

শিক্ষা ও কর্মজীবন

১৯৬৭ সালে ঢাকার অন্যতম বিদ্যালয় সেন্ট গ্রেগরি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পরিক্ষায় উর্ত্তীণ হন নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন। এ ছাড়া ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। এ ছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি এল.এল.বি ডিগ্রী অর্জন করেন।

আইনজীবী হিসেবে কর্মজীবন শুরু করলেও আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সবসময় সক্রিয় ছিলেন নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন। তিনি চতুর্থবারের মতো নরসিংদি-৪ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। ২০১৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে তিনি শিল্প মন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত হন। ১৯৮৬ সালে তিনি নরসিংদি-৪ আসন থেকে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

ছাত্রজীবন থেকেই তিনি রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন। ১৯৬৬ সালে ৬ দফা আন্দোলনসহ ঐতিহাসিক ৭ই জুনের মিছিলেও নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন ছিলেন অগ্রভাগে। ৬৯-এর গণ অভূত্থানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গড়ে ওঠা আন্দোলনেও সক্রিয় ভূমিকা রাখেন তিনি।

বর্ষিয়ান এই রাজনীতিক বাংলাদেশ যুবলীগের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই কেন্দ্রীয় নেতা হিসেবে নেতৃত্ব দিয়েছেন। ৭৫-এর ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে নির্মম ভাবে শহিদ করার পর যুবলীগকে সংগঠিত করে আন্দোলন গড়ে তোলেন কীর্তিমান এই নেতা। তিনি তখন যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ছিলেন।

তিনি বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টে আইন পেশার পাশাপাশি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। মহান স্বাধীনতাযুদ্ধেও তিনি সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও তৎকালীন ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের অন্যতম নেতা ছিলেন নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন।

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় গুরুতর আহত হন। ১/১১ এর ঘটনা পরবর্তীতে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে কারামুক্ত করতে তিনি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রিয় কার্যনির্বাহী পরিষদের অন্যতম সদস্য ছিলেন।

বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন বাংলা, ইংরেজি, উর্দু ও হিন্দি ভাষায় বিশেষভাবে দক্ষ। যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, চীন, ভারত, সুইডেন, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়া, আরব আমিরাত, থাইল্যান্ড, নেপাল, পাকিস্থান, সৌদি আরব, মঙ্গোলিয়া, আফ্রিকা এবং তুরস্ক সফর করেন।

একেবারে তৃনমুল রাজনীতি থেকে উঠে আসা নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বাংলাদেশের একজন অন্যতম সফল রাজনীতিবিদ।

২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৬:৩৩পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।