• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

যক্ষ্মা: লক্ষণ কেবল কাশি নয়, শিশুদের ঝুঁকি বেশি

যক্ষ্মা: লক্ষণ কেবল কাশি নয়, শিশুদের ঝুঁকি বেশি

প্রতিকী ছবি

ফিচার ডেস্ক

‘যক্ষ্মা হলে রক্ষা নেই, এই কথার আর ভিত্তি নেই’। অতিপরিচিত এই স্লোগানটি আমরা অনেকেই জানি। যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যাও দিনে দিনে কমছে। গবেষকরা বলছেন, যক্ষ্মা কেবল ফুসফুসকে আক্রান্ত করে না, বরং এটি শরীরের যেকোনো অঙ্গের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। চিকিৎসকরা বলছেন, ফোঁড়া, গোটা গোটা, ত্বকের সংক্রমণ, গলা ব্যথাও যক্ষ্মার কারণে হয়ে থাকে। তাই, মনে রাখতে হবে ‘কাশি মানেই যক্ষ্মা নয়, আবার কাশি না থাকলেও যক্ষ্মা হয়’।

ঢাকার এক চিকিৎসকের বরাত দিয়ে বিবিসি বলছে, যক্ষ্মা কেবল ফুসফুসে হয় না। যক্ষ্মা হলেই কেবল কাশি হয়, এই ধারণাও ভুল। অনেকেই কাশির লক্ষণ ছাড়ায় যক্ষ্মায় আক্রান্ত হতে পারে।

যক্ষ্মার জীবাণু মস্তিষ্ক, ত্বক, অন্ত্র, লিভার, কিডনি, হাড়সহ দেহের যেকোনো অঙ্গপ্রত্যঙ্গে সংক্রমিত হতে পারে। তবে ফুসফুসে যক্ষ্মা সংক্রমের হার সবচেয়ে বেশি হওয়ায় সরকারি সচেতনতামূলক প্রচারণায় যক্ষ্মার লক্ষণ হিসেবে ‘কাশি’ কে বেশি প্রাধান্য দেয়া হয়।

যক্ষ্মার ঝুঁকিতে যারা

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, দেশের মোট জনসংখ্যার একটি অংশ জন্মগতভাবেই যক্ষ্মা রোগের জীবাণু বহন করে। তবে শরীরে জীবাণু থাকলেও অনেকেই যক্ষ্মায় আক্রান্ত হন না। কিন্তু এধরণের জীবাণু বাহকরা নিরবে অন্যের মাঝে যক্ষ্মার ভাইরাস ছড়িয়ে দেন। তবে জীবাণুর ধারক নিজে আক্রান্ত না হলেও তার মাধ্যমে অন্যের শরীরে যক্ষ্মা ছড়াতে পারে। আর সেটা যেকোন অঙ্গেই হতে পারে।

চিকিৎসকদের মতে, এই জীবাণু থেকে তাদেরই রোগ হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল। এছাড়া ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের এই জীবাণুতে সংক্রমণের ঝুঁকি অনেক বেশি থাকে।

এছাড়া পরিবেশ দূষণ, দরিদ্রতা, মাদকের আসক্তি, অপুষ্টি, যক্ষ্মার হার বাড়ার অন্যতম কারণ বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

যক্ষ্মার লক্ষণ

→ ফুসফুসে যক্ষ্মার জীবাণু সংক্রমিত হলে টানা কয়েক সপ্তাহ কাশি, কফের সাথে রক্ত যাওয়ার মতো সাধারণ কিছু লক্ষণ থাকতে পারে।
→ শরীরের যে অংশে যক্ষ্মার জীবাণু সংক্রমিত হবে সেই অংশটি ফুলে উঠবে।
→ লিভারে যক্ষ্মা হলে পেটে পানি চলে আসে, তাই পেটও অস্বাভাবিক ফুলে যায়।
→ চামড়ায় বা অন্য যেখানেই হোক না কেন সেই অংশটা ফুলে ওঠে।
→ এছাড়া ক্ষুধামন্দা, হঠাৎ শরীরের ওজন কমে যাওয়া, জ্বর জ্বর অনুভব হওয়া, অনেক ঘাম হওয়া, ইত্যাদি যক্ষ্মার কিছু সাধারণ লক্ষণ।

শিশুদের যক্ষ্মার লক্ষণ

শিশুদের যক্ষ্মার লক্ষণগুলো অন্য কিছু অসুখের মত মনে হয়। এ ছাড়া শিশুরা তাদের সমস্যা সঠিক ভাবে বলতেও পারেনা। তাই, শিশু যক্ষ্মায় আক্রান্ত কিনা তা লক্ষণ দেখেই আপনাকে বুঝতে হবে।

◊ শিশুর সাভাবিক খাওয়া-দাওয়ার পরও তার ওজন কমে যাওয়া,
◊ খাবারের প্রতি আগ্রহ না থাকা,
◊ হালকা জ্বর,
◊ কাশি,
◊ ঝিমুনি,
◊ খিটখিটে মেজাজ ও
◊ অতিরিক্ত দুর্বলতা।

যক্ষ্মায় করণীয়

⇒ যদি শরীরের কোন অংশ ফুলে ওঠে আর কয়েকদিনেও ফোলা না কমে, এছাড়া ফুসফুসে যক্ষ্মার লক্ষণগুলোর মধ্যে হাঁচি-কাশি বাদে বাকি লক্ষণগুলোর কোন একটি দেখা দেয় তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

⇒ দ্রুত যক্ষ্মা পরীক্ষা করতে হবে। যক্ষ্মা নির্ণয়ে দেরি হলে মারাত্মক ক্ষতি হয়ে যেতে পারে।

⇒ ডাক্তারি পরীক্ষা শেষে নিয়ম মেনে নিয়মিত ওষুধ খেলে যক্ষ্মা রোগ নির্মূল হয়।

⇒ ওষুধের পাশাপাশি রোগীর দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে প্রচুর পুষ্টিকর খাবার খাওয়া উচিত।

⇒ যক্ষ্মা আক্রান্ত রোগীকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চিকিৎসা নিতে হবে। কারণ, এই রোগটি বেশ সংক্রামক বা একজন থেকে অন্যজনে ছড়ায়।

 

 

১২ অক্টোবর ২০২৩, ০১:১৩পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।