• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১

পাইলট হওয়া সহজ, লাগবে টাকা!

পাইলট হওয়া সহজ, লাগবে টাকা!

প্রতিকী ছবি

ফিচার ডেস্ক

পাইলট, বৈমানিক। রোমাঞ্চকর এক পেশা। তবে এই পেশা বর্তমানে চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠেছে। অনেকেই পাইলট হিসেবে কোর্স করে বা ট্রেনিং শেষ করে পছন্দের পেশায় নিয়োজিত হতে পারছেন না। সরকারি, বেসরকারি বিমান সংস্থাগুলোর লোকসান দিন দিন বেড়েই চলেছে। যার প্রভাব পড়েছে পুরো বিমান খাতের ওপর। এ ছাড়া প্রতিযোগিতার বাজারে পাইলট বা বৈমানিকের সংখ্যাও দিনদিন বাড়ছে। ফলে এই পেশায় টিকে থাকাও বিরাট চ্যালেঞ্জ। ব্যয়বহুল ট্রেনিং শেষে পাইলট হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়া অনেকের কাছেই এখন অসম্ভব। কেউ কেউ পাইলট প্রশিক্ষণ নিয়েও অন্য পেশায় মন দিয়েছেন।

পাইলট হওয়ার কোর্স, খরচ ও চাকরির সুযোগ নিয়ে আমাদের এই আয়োজন। চলুন প্রিয় পাঠক, সংক্ষেপে দেখে নেয়া যাক সবকিছু।

পাইলট প্রশিক্ষণ কী?

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে দুই ধরনের বিমানের পাইলট হওয়া যায়। ট্রান্সপোর্ট এয়ারক্রাফট পাইলট ও যুদ্ধবিমান বা ফাইটার এয়ার ক্রাফট পাইলট। যুদ্ধবিমানের পাইলট হওয়ার জন্য বিমানবাহিনীতে যোগ দিতে হবে। উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার পর বিমানবাহিনীতে ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে যুদ্ধবিমানের পাইলট হওয়া যায়। এ ছাড়া সেনাবাহিনী কিংবা নৌবাহিনীতেও এভিয়েশন কোর রয়েছে এখন।

বেসামরিক বোয়িং ৭৭৭, এয়ারবাস কিংবা অন্যান্য এয়ারক্রাফট পাইলট হওয়া কিছুটা সহজ। এই পাইলট হওয়ার জন্য আপনাকে কোর্স বা প্রশিক্ষণ নিতে হবে। যখন কেউ বেসামরিক বিমানের পাইলট হয় এবং আন্তর্জাতিক (icao international civil aviation organization) সংগঠন লাইসেন্স দেয়, তবেই আপনি বেসামরিক বিমান চালাতে পারবেন।

পাইলট হতে যা লাগে

বাংলাদেশে বেসামরিক বিমানের পাইলট হতে হলে-
বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি এবং এইচএসসি অথবা ‘ও’ লেভেল ‘এ’ লেভেল উত্তীর্ণ হতে হবে।
তবে অবশ্যই পদার্থবিজ্ঞান এবং গণিত থাকতে হবে।
মেডিকেল বা স্বাস্থ্য পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে।

বাংলাদেশে যেসব প্রতিষ্ঠান থেকে পাইলট কোর্স করা যায়

বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত ফ্লাইং স্কুল থেকে পাইলট হওয়ার কোর্স করা যায়। এসব এভিয়েশনে ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে ভর্তির সুযোগ পাওয়া যায়। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো-
→ বাংলাদেশ সিভিল এভিয়েশন একাডেমি,
→ আরিরাং ফ্লাইং স্কুল,
→ গ্যালাক্সি ফ্লাইং একাডেমি এবং
→ বাংলাদেশ ফ্লাইং ক্লাব।

পাইলট কোর্স কি সবাই কতে পারবে?

কেউ চাইলে অনার্সের পাশাপাশিও ফ্লাইং কোর্স সম্পন্ন করতে পারবে। তবে সেটা অনেক কঠিন হয়ে যাবে। অনার্স শেষ করেও ফ্লাইং কোর্সে ভর্তি হওয়া যায়। তবে সব থেকে ভালো হয় এইচএসসি পরীক্ষার পরে দুই বছরের এই কোর্স সম্পন্ন করলে। এই কোর্সের মান বাংলাদেশে অনার্স কিংবা ডিপ্লোমা হিসেবে ধরা হয় না। এই কোর্স শুধু বিমান চালানোর ছাড়পত্র দেয়। কাজেই, পাইলট হওয়াটা খুব কঠিন কিছু না।

পাইলটের বেতন কত?

অনেকেই দূর থেকে বিস্তীর্ণ ময়দানকে সবুজ ঘাঁসে ভরপুর মনে করে। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। পাইলট হিসেবে বেতন ভালো পাওয়া গেলেও বর্তমানে এই পেশায় টিকে থাকা কঠিন। প্রতিবছর দেশি-বিদেশী ফ্লাইং একাডেমি থেকে হাজার হাজার পাইলট বের হচ্ছে। প্রশিক্ষণের মান, বাস্তব দক্ষতা ও কোয়ালিটির প্রশ্নে দিনদিন বাংলাদেশি পাইলটদের পেশাগত নিশ্চয়তা সংকীর্ণ হচ্ছে। তাই, অনেকেই পাইলট হিসেবে প্রশিক্ষণ নিয়েও অন্য পেশায় থিতু হচ্ছেন। যদিও শুরুর দিকে পাইলটের বেতন লাখ টাকার কাছাকাছি থাকে। বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলো আরও বেশি বেতন ও সুযোগ-সুবিধা দিয়ে থাকে।

পাইলট হিসেবে চাকরির সুযোগ

বাংলাদেশে সরকারি-বেসরকারি এয়ারলাইন্স আছে। এই এয়ারলাইন্সগুলো প্রতিবছর পাইলট নিয়োগ দিয়ে থাকে। এছাড়া বিদেশি বিভিন্ন বিমান সংস্থায়ও পাইলটরা কাজের সুযোগ পান।

পাইলট হতে কত টাকা লাগে

বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠানগুলোতে সাধারণত কোর্স করতে সব মিলিয়ে খরচ পড়বে ৩০ থেকে ৩২ লাখ টাকা। ট্রেনিং প্রতিষ্ঠান অনুসারে টাকার পরিমাণ কম বেশি হতে পারে। হবে মনে রাখতে হবে পাইলটের কোর্স করার জন্য অনেক টাকার প্রয়োজন হয়। তাই সব সময় হাতে কিছু বাড়তি টাকা রাখতে হবে। কারণ অনেক সময় টাকার জন্য রিয়েল টাইম ফ্লাইং আটকে যায়।

পাইলট কোর্সের পর কর্মক্ষেত্র

কোর্স কমপ্লিট করার পর সরকারি ও বেসরকারি যে কোন এয়ারলাইন্স কোম্পানিতে পাইলট হিসেবে কাজ করা যায়। দেশী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বাংলাদেশ বিমানসহ ইউ এস বাংলা নভএয়ার, রিসেন্ট, এর মতো এয়ারলাইন্স প্রতিবছরে পাইলট নিয়োগ করে থাকে। এছাড়া আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে কাজ করার বিভিন্ন সুযোগ রয়েছে।

০২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৭:১৫পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।