নিরাপদ স্বাস্থ্য: বন্যা পরবর্তি করণীয়
প্রতিকী ছবি
নদীমাতৃক বাংলাদেশে বর্ষাকাল এক বৈচিত্রময় ঋতু। বৃষ্টি, পাহাড়ি ঢল আর সামুদ্রিক জলোচ্ছাস তো আছেই। প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রবণ বাংলাদেশের অন্যতম ক্ষতিকর দুর্যোগ বন্যা। বন্যায় প্রতিবছর হাজার হাজার কোটি টাকার ফল-ফসল বিনষ্ট হয়। আর মাস দেড়েক পরেই খাতা-কলমে বর্ষাকাল শুরু হবে। তবে এখন থেকেই দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। সেই সঙ্গে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের চোখ রাঙানি তো আছেই।
বন্যার পানি অত্যন্ত ক্ষতিকর। বন্যা শুরুর আগে রোগবালাই ও ক্ষয়ক্ষতি থেকে সুরক্ষিত থাকতে কিছু সতর্কতা অবলম্বন জরুরি। একই ভাবে বন্যা পরবর্তি ক্ষয়ক্ষতি ও রোগবালাই থেকে মুক্তি পেতে বা সুরক্ষিত থাকতেও সচেতনতার প্রয়োজন। পাশাপাশি কিছু বিষয়ে সতর্ক পদক্ষেপ নেয়াও জরুরি।
বন্যা পরবর্তি করণীয়
আবহাওয়া, জলবায়ু ও পরিবেশ বিষয়ক বিভিন্ন জার্নালে বন্যা পরবর্তি করণীয় বিষয়ে পরামর্শ দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের ত্রাণ ও দুর্যোগ বিষয়ক তথ্যকেন্দ্রও এ সংক্রান্ত পরামর্শ প্রধান করেছে। সেগুলো হলো-
— দুর্যোগপ্রবণ অঞ্চলের কৃষি ও কৃষককে বাঁচাতে বন্যা পরবর্তি কৃষি সহায়তা হিসেবে বিনামূল্যে কৃষিবীজ বিতরণ ও অন্যান্য কৃষি উপকরণ সরবরাহ করতে হবে। এই কাজে সরকারের পাশাপশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে আসা উচিত।
— বন্যা শুরুর পূর্বাভাস পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রয়োজনীয় ফসলের বীজ ঘরের উচু জায়গায় অথবা সুরক্ষিত পাত্রে সংরক্ষণ করতে পারেন। কৃষক যদি নিজ নিজ কৌশল প্রয়োগ করে কৃষি বীজ সংরক্ষণ করেন, তাহলে বন্যা পরবর্তি কৃষি বীজ সংকট অনেকাংশে মোকাবিলা করা সম্ভব।
— বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পরে স্বাস্থ্যঝুঁকি সবচেয়ে বেশি দেখা দেয়। নিরাপদ পানির অভাবে বন্যা পরবর্তি সময়ে পানিশূন্যতা, ডায়রিয়া, কলেরা, টাইফয়েডের মতো রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যায়। এ ছাড়া বন্যার পানি থেকে ব্যাপক ভাবে চর্মরোগের সংক্রমণ শুরু হয়। তাই, বন্যা শেষ হলে দ্রুত হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত।
— বন্যা শেষ হয়ে গেলে নিরাপদ নলকূপ না পেলে পানি পান করার আগে তা বিশুদ্ধ করে নিন। পানি ফুটিয়ে নিতে পারেন। সেক্ষেত্রে অন্তত ২০ মিনিট পানি ফুটান। এ ছাড়া পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট দিয়েও পানি পরিশুদ্ধ করে নিতে পারেন।
— বন্যা পরবর্তি সময়ে পচনশীল ও বাসি পঁচা খাবার পরিহার করুন। বেশি বেশি শাক সবজি খাওয়ার চেষ্টা করুন।
— টয়লেট থেকে বের হয়ে এবং খাবার খাওয়ার আগে ও পরে ভালো করে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে নিন। বন্যার পানিতে হাত অথবা পা ডুবে থাকলে হাত-পা সাবান দিয়ে ধোয়ার পর তেল লাগান।
— সাধারণ জ্বর-কাশির প্রাথমিক চিকিৎসা বাড়িতেই নিতে পারেন। জ¦রে আক্রান্ত রোগীর শরীর ভেজা গামছা অথবা তোয়ালে দিয়ে মুছিয়ে দিন। ঠাণ্ডা, কাশি অথবা গলাব্যথা হলে কুসুম গরম পানি দিয়ে ঘনঘন গারগিল করুন। সেই সঙ্গে কুসুম গরম পানি পান করুন।