মঞ্চ নাটক থেকে ‘বেদের মেয়ে জোসনা’: ইলিয়াস কাঞ্চন কথন
ফাইল ছবি
১৯৭৬ সাল। পুরান ঢাকায় ওয়াপদা মিলনায়তনে চলছে মঞ্চ নাটক। সেই মঞ্চনাটকের অতিথি ছিলেন সুভাষ দত্ত। নাটকটি দেখার পর সুভাষ দত্তের নজরে পড়লেন এক তরুণ অভিনেতা। নাটক শেষে সুভাস দত্ত সেই তরুণকে ডেকে নেন। সেই তরুণের নাম ছিল ইদ্রিস আলী। যিনি পরে ‘বেদের মেয়ে জোসনা’ সিনেমায় অভিনয় করে পেয়েছেন আকাশছোঁয়া খ্যাতি। প্রিয় দর্শক আপনারা কি জানেন, সেদিনের সেই ইদ্রিস আলীই বাংলা চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় নায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন।
১৯৫৬ সালের ২৪ ডিসেম্বর কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ উপজেলার আশুতিয়াপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। ১৯৭৫ সালে ঢাকার কবি নজরুল সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন এই চিত্রনায়ক। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলেও পড়াশুনা শেষ করেননি।
‘নিরাপদ সড়ক চাই’ আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন সারাদেশে এক নতুন আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন। প্রথম স্ত্রী জাহানারা কাঞ্চনের সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হওয়ার পর ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ আন্দোলন শুরু করেন তিনি। এই আন্দোলনের মধ্যদিয়ে তিনি মানুষের খুব কাছে পৌছে গেছেন। বর্তমানে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতির দায়িত্বে রয়েছে গুণী এই শিল্পী।
জনপ্রিয় নায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনের চলচ্চিত্রে যাত্রা শুরু ১৯৭৭ সালে। ‘বসুন্ধরা’ সিনেমায় তিনি প্রথম অভিনয় করেন। ৯০ দশকের জনপ্রিয় এই হিরো তিন শতাধিক সিনেমায় অভিনয় করেছেন। তাঁর অভিনীত বেদের মেয়ে জোছনা ছবি সবচেয়ে বেশি খ্যাতি ও জনপ্রিয়তা পেয়েছে। তিনি একাধিকবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ও বাচসাস পুরস্কার পেয়েছেন। ২০১৭ সালে একুশে পদ লাভ করেন ইলিয়াস কাঞ্চন।
ব্যক্তিগত জীবনে ১৯৭৯ সালে জাহানারা কাঞ্চনকে প্রথম বিয়ে করেন ইলিয়াস কাঞ্চন। ১৯৯৩ সালের ২২ অক্টোবর বান্দরবানে ইলিয়াসের চলচ্চিত্রের দৃশ্যায়ন দেখতে যাওয়ার পথে চট্টগ্রামের চন্দনাইশে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন জাহানারা। এরপর শোকাহত ইলিয়াস চলচ্চিত্র জগত থেকে দূরে সরে যাওয়ার ঘোষণা দেন। এরপর তিনি ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ আন্দোলন শুরু করেন।
সামাজিক আন্দোলনেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে যাচ্ছেন ইলিয়াস কাঞ্চন। তার স্ত্রীর মৃত্যুর পর ১৯৯৩ সালের ১ ডিসেম্বর থেকে ‘নিরাপদ সড়ক, নিরাপদ জীবন’ স্লোগানে সচেতনতামূলক কাজ করে যাচ্ছে তার প্রতিষ্ঠিত নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা)।