• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১

নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু

নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু

ফিচার ডেস্ক

ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে এক কিংবদন্তি নেতা সুভাষচন্দ্র বসু। সশস্ত্র বিদ্রোহের মাধ্যমে ভারতকে ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্ত করতে চেয়েছিলেন তিনি। তবে কিভাবে তার মৃত্যু হয়েছে সেটা এখনও পরিস্কার নয়।

১৮৯৭, ২৩ জানুয়ারি: সুভাষচন্দ্র বসু দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা জেলার বিখ্যাত “মাহীনগরের বসু পরিবার"-এ জন্মগ্রহণ করেন। ব্রিটিশ ভারতের অন্তর্গত বাংলা প্রদেশের উড়িষ্যা বিভাগের (অধুনা, ভারতের ওড়িশা রাজ্য) কটকে জন্মগ্রহণ করেন।

১৯০২: তিনি তার পাঁচ বড় ভাইয়ের সাথে কটকের প্রোটেস্ট্যান্ট ইউরোপীয় স্কুলে (অধুনা, স্টুয়ার্ট স্কুল) ভর্তি হন। ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত সুভাষচন্দ্র বসু বিদ্যালয়টিতে পড়ালেখা করেন।

১৯০৯ : সুভাসকে ১২ বছর বয়সে কটকের রাভেনশ কলেজিয়েট স্কুলে ভর্তি করা হয়। এখানে, বাংলা ও সংস্কৃত শেখানো হত এবং পাশাপাশি বাড়িতে সাধারণত গৃহীত না হওয়া হিন্দু ধর্মগ্রন্থ যেমন— বেদ ও উপনিষদ সম্পর্কে পাঠদান কারা হত।

১৯২১: কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত ম্যাট্রিক পরীক্ষায় দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেন।

১৯১৩: কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে ভর্তি হন। তিনি দর্শনকে অধ্যয়ন বিষয় হিসাবে নির্বাচিত করেন, পাশাপাশি ক্যান্ট, হেগেল, বের্গসন ও অন্যান্য পাশ্চাত্য দার্শনিকদের সম্পর্কে পড়াশোনা করেন।

১৯২৪: দেশবন্ধু যখন কলকাতা পৌরসংস্থার মেয়র নির্বাচিত হন, তখন সুভাষচন্দ্র তার অধীনে কর্মরত ছিলেন।

১৯২৩: বসু সর্বভারতীয় যুব কংগ্রেসের সভাপতি এবং একইসাথে বঙ্গীয় প্রাদেশিক কংগ্রেসের সম্পাদক নির্বাচিত হন।

১৯২৫: অন্যান্য জাতীয়তাবাদীদের সঙ্গে তাকেও বন্দি করা হয় এবং মান্দালয়ে নির্বাসিত করা হয়। এখানে তিনি যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয়েছিলেন।

১৯২৭: বসু ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক হন এবং জওহরলাল নেহেরু সঙ্গে ভারতের স্বাধীনতার লক্ষ্যে কাজ শুরু করেন।

১৯২৮, ডিসেম্বর: বসু কলকাতায় ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের বার্ষিক সভার আয়োজন করেন। তার সবচেয়ে স্মরণীয় ভূমিকা ছিল কংগ্রেস স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর জেনারেল অফিসার কমান্ডিং (জিওসি) হিসেবে। এর কিছুদিন পরে, সুভাষচন্দ্র বসুকে পুনরায় গ্রেপ্তার করা হয় এবং আইন অমান্য আন্দোলনের জন্য জেলে পাঠানো হয়।

১৯৩০: তিনি কলকাতার মেয়র নির্বাচিত হন।

১৯৩০ এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে সুভাষচন্দ্র বসু ইউরোপ ভ্রমণ করেন। এসময় বেনিতো মুসোলিনি সহ বিভিন্ন ভারতীয় ছাত্র ও ইউরোপীয় রাজনীতিবিদদের সাথে দেখা করেন। তিনি দলীয় সংগঠন এবং কমিউনিজম ও ফ্যাসিবাদের প্রয়োগ পর্যবেক্ষণ করেন।

১৯৩০: এই সময়ে তিনি তার, দ্য ইন্ডিয়ান স্ট্রাগল বইয়ের প্রথম অংশ রচনা করেন, যাতে ১৯২০-১৯৩৪ সালে ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের বিবরণ রয়েছে।

১৯৩৪: লবণ সত্যাগ্রহ বন্ধ করলে তিনি ও বীঠলভাই প্যাটেল ইউরোপ থেকে বোস প্যাটেল ইস্তাহার দেন। বীঠল ভাই প্যাটেল তাঁর সম্পত্তির চার ভাগের তিন ভাগ নেতাজিকে দান করেন।

১৯৩৩: তাকে ইউরোপে নির্বাসিত করা হয়।

১৯৩৪: ভিয়েনাতে তিনি এমিলি শেঙ্কলের সঙ্গে পরিচিত হন।

১৯৩৭: তারা ব্যাড গ্যাস্টিনে বিয়ে করেন।

১৯৩৮: অবধি বসু জাতীয় পর্যায়ের নেতায় পরিণত হয়েছিলেন এবং কংগ্রেস দলের সভাপতি হিসেবে মনোনয়ন গ্রহণ করতে সম্মত হন।

১৯৩৯: বসু একটি স্ট্রেচারে করে কংগ্রেস সভায় হাজির হন। তিনি গান্ধীর পছন্দের প্রার্থী পট্টভি সীতারামাইয়াকে পরাজিত করে পুনরায় সভাপতি নির্বাচিত হন।

১৯৩৯, ২২ জুন: বসু ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের অভ্যন্তরে নিখিল ভারত ফরওয়ার্ড ব্লক সংগঠিত করেন।

১৯৪০: তাকে গ্রেপ্তার করে কারারুদ্ধ করা হলেও সাত দিনের অনশন ধর্মঘটের পর তাকে মুক্তি দেয়া।

১৯৪১: সুভাষচন্দ্র বসুকে গৃহবন্দী করা হয়। এসময় সিআইডি তার বাড়ি নজরদারিতে রাখে। তবুও তিনি আফগানিস্তান এবং সোভিয়েত ইউনিয়ন হয়ে জার্মানিতে পালাতে সক্ষম হন।

১৯৪১, ১৬ জানুয়ারি: গভীর রাতে পালানোর সময়, তিনি পাঠানদের বেশভূষা ধারণ করেন যাতে কেউ তাকে চিনতে না পারে।

১৯৪১, ১৭ জানুয়ারি: রাতে কলকাতায় তার এলগিন রোডের বাড়ি থেকে ব্রিটিশদের নজরদারি এড়িয়ে, তার ভাগ্নে শিশির কুমার বসুকে সঙ্গে নিয়ে সুভাষচন্দ্র বসু পালাতে সক্ষম হন।

১৯৪১, ২৬ জানুয়ারি: তিনি আফগানিস্তান সংলগ্ন ব্রিটিশ ভারতের উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ দিয়ে রাশিয়া পৌছানোর জন্য যাত্রা শুরু করেন।

১৯৪২, মে: হিটলারের সাথে তার সাক্ষাৎ এরপর, তার সন্দেহ আরও দৃঢ় হয় এবং তিনি বিশ্বাস করতে শুরু করেন যে হিটলার তার সৈন্যদের ব্যবহার করে যুদ্ধক্ষেত্রের চেয়ে প্রচারণার জয়ী হতেই বেশি আগ্রহী।

১৯৪৩: জার্মানি ভারতের স্বাধীনতা অর্জনে সাহায্য করতে পারবে না বুঝতে পেরে, সুভাষচন্দ্র বসু জাপান চলে যান।

১৯৪৩: সুভাষচন্দ্র বসুর আগমনের সঙ্গে স্বাধীনতার জন্য সেনাবাহিনী গঠনের ধারণাটি আবারো পুনরুজ্জীবিত হয়। জুলাই মাসে সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত একটি সভায় রাসবিহারী বসু, সুভাষচন্দ্র বসুর হাতে সংগঠনের নিয়ন্ত্রণ হস্তান্তর করেন।

১৯৪৪, ৪ জুলাই: বর্মায় ভারতীয়দের এক সমাবেশে আজাদ হিন্দ ফৌজ এর জন্য একটি ভাষণ প্রদানের সময় তাঁর সবচেয়ে বিখ্যাত উক্তিটি উচ্চারিত হয়: "তোমরা আমাকে রক্ত দাও, আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেবো!" এর মাধ্যমে তিনি ভারতের জনগণকে ব্রিটিশ রাজের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে যোগ দেয়ার আহ্বান জানান।

১৯৪৫, ১৮ অগাস্ট: রাত প্রায় ন'টার সময়ে সুভাষ চন্দ্র বসু শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।

 

তথ্যসূত্র: উইকিপিডিয়া, বিবিসি বাংলা

এবি/এসজে

 

০৪ আগস্ট ২০২১, ০১:০২পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।