শহীদ আলতাফ মাহমুদ
শহীদ আলতাফ মাহমুদ একজন ভাষা সংগ্রামী, মুক্তিযোদ্ধা ও গণসংগীতশিল্পী। তিনি একজন ভাষাসৈনিক ছিলেন এবং শহিদ দিবস নিয়ে রচিত আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো গানটির বর্তমান সুরটিও তারই করা। এই গানের সুরকার হিসেবেই তিনি সমধিক পরিচিত।
১৯৩৩, ২৩ ডিসেম্বর: বরিশাল জেলার মুলাদী উপজেলার পাতারচর গ্রামে আলতাফ মাহমুদ জন্মগ্রহণ করেন।
১৯৩৮ : আলতাফ মাহমুদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার সূচনা হয়েছিল গ্রামের স্থানীয় প্রাইমারি স্কুলে।
১৯৪৭,১৪ আগস্ট: এইদিন প্রথম প্রহরে পাকিস্তান স্বাধীন হলে তিনি পাকিস্তানবরণ অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেছিলেন।
১৯৪৮: বরিশাল জিলা স্কুল থেকে তিনি মেট্রিকুলেশন পরীক্ষা পাশ করে বিএম কলেজে ভর্তি হন। পরে তিনি চিত্রকলা শিখতে কলকাতা আর্টস স্কুলে গমন করেন।
১৯৫০: আলতাফ মাহমুদ ঢাকায় আসেন। সে বছরই যোগ দিয়েছিলেন ধূমকেতু শিল্পী সংঘতে। সুরকার হিসেবে আলতাফ মাহমুদের যাত্রা শুরু হয় 'মৃত্যুকে যারা তুচ্ছ করিল ভাষা বাঁচাবার তরে' গানটি দিয়ে।
১৯৫০: তিনি ভাষা আন্দোলনের পক্ষে সমর্থন আদায়ের জন্য বিভিন্ন জায়গায় গণসঙ্গীত গাইতেন।
১৯৫২, ২৩ ফেব্রুয়ারি: আবদুল গাফফার চৌধুরী রচিত আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো শিরোনামের আলোড়ন সৃষ্টিকারী গানটিতে সুর সংযোজন করে খ্যাতির শীর্ষে আরোহণ করেন।
১৯৫৪: "ভিয়েনা শান্তি সম্মেলনে" মাহমুদ আমন্ত্রিত হন, কিন্তু করাচিতে পাকিস্তানি সরকার তার পাসপোর্ট আটকে দেয়ায় তিনি এখানে যোগ দিতে পারেননি।
১৯৫৬: আলতাফ মাহমুদ করাচি বেতারে প্রথম সঙ্গীত পরিবেশন করেন। তিনি 'ইত্তেহাদে ম্যুসিকি' নামে দশ মিনিটের একটি অনুষ্ঠান প্রযোজনা ও পরিচালনা করতেন।
১৯৫৮: আলতাফ মাহমুদের প্রথম রেকর্ড প্রকাশিত হয় করাচি থেকে। এই রেকর্ডের সুরকার গীতিকার দুটোই ছিলেন তিনি।
১৯৬৩: তিনি ঢাকায় ফিরে সিনেমায় সংগীত পরিচালক হিসেবে কাজ শুরু করেন।
১৯৬৫: তিনি প্রখ্যাত সঙ্গীতজ্ঞ দেবু ভট্টাচার্যের শিষ্যত্ব গ্রহণ করলেন। এসময় উচ্চাঙ্গ সংগীতে তিনি ওস্তাদ কাদের খাঁ'র কাছে তালিম নিয়েছিলেন।
১৯৭০: এর ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ের পর 'এ ঝঞ্ঝা মোরা রুখবো'র মতো অসামান্য সব গানের মধ্য দিয়ে নাড়া দিয়েছিলেন মানব হৃদয়কে।
১৯৭১: আলতাফ মাহমুদ স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে তার বাসায় গোপন ক্যাম্প স্থাপন করেন।
১৯৭১, ৩০ আগস্ট: ক্যাম্পের কথা ফাঁস হয়ে গেলে পাকিস্তানি বাহিনী তাকে আটক করে। তার বাসা থেকে আরো অনেক গেরিলা যোদ্ধা আটক হয়। এদের অনেকের সাথে তিনিও চিরতরে হারিয়ে গেছেন।
১৯৭৭: বাংলা সংস্কৃতি ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অবদান রাখার কারণে আলতাফ মাহমুদকে একুশে পদক প্রদান করা হয়।
২০০৪: সংস্কৃতিক্ষেত্রে অসামান্য আবদান রাখায় শহিদ আলতাফ মাহমুদকে স্বাধীনতা পুরস্কার (মরণোত্তর) প্রদান করা হয়।
তথ্যসূত্র: উইকিপিডিয়া, দ্য ডেইলী ষ্টার
এবি/এসজে