• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

হুমায়ুন আজাদ

হুমায়ুন আজাদ

ফিচার ডেস্ক

হুমায়ুন আজাদ একজন কবি, ঔপন্যাসিক, গল্পকার, গবেষক, ভাষাবিজ্ঞানী। দেশের প্রধান প্রথাবিরোধী ও বহুমাত্রিক লেখক হিসেবে বিবেচনা করা যায়। গতানুগতিক চিন্তাকে তিনি সচেতনভাবেই পরিহার করেছেন। জনপ্রিয় হলেও অতি বিতর্কিত সাহিত্যিক ছিলেন তিনি। তাঁর নারী, দ্বিতীয় লিঙ্গ, পাক সার জমীন সাদ বাদ (২০০৩) গ্রন্থ তিনটি বিতর্কের ঝড় তোলে এবং এরই এক পর্যায়ে সরকার বই তিনটিকে বাজেয়াপ্ত ঘোষণা করে। তার প্রকাশিত মৌলিক কাব্যগ্রন্থের সংখ্যা ৭। এছাড়াও তার ৮টি কিশোরসাহিত্য, এবং ৮টি ভাষাবিজ্ঞান বিষয়ক বই রয়েছে।

১৯৪৭, ২৮ এপ্রিল: তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের (বর্তমানে বাংলাদেশ) অধীন বিক্রমপুরের কামারগাঁয় জন্ম নেন হুমায়ুন আজাদ। যেটি বর্তমানে মুন্সিগঞ্জ জেলার শ্রীনগর উপজেলার অন্তর্গত।

১৯৫২: আজাদ দক্ষিণ রাড়িখাল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ইনফ্যান্ট (প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা) শ্রেণীতে ভর্তি হন, সেখানে তিনি ইনফ্যান্ট থেকে তৃতীয় শ্রেণী পর্যন্ত মোট চার বছর অধ্যয়ন করেন। চতুর্থ শ্রেণীতে পড়ার জন্য তিনি স্যার জে সি বোস ইন্সটিটিউটে ভর্তি হন।

১৯৬২: তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ম্যাট্রিকুলেশন (মাধ্যমিক) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণীতে থাকাকালীন তার "ঘড়ি বলে টিক টিক" শিরোনামে প্রথম লেখা প্রবন্ধ ছাপা হয়েছিল দৈনিক ইত্তেফাকের শিশুপাতা কচিকাঁচার আসরে।

১৯৬২ সেপ্টেম্বরে: তিনি ঢাকা কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণিতে ভর্তি হন।

১৯৬৪: ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন। এরপর একই বছর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদে বাংলা বিভাগে ভর্তি হন।

১৯৬৭: তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্যে স্নাতক ডিগ্রি এবং পরের বছর একই বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। উভয় পরীক্ষায় তিনি প্রথম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হন।

১৯৭০, ১১ ফেব্রুয়ারি: তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে প্রভাষক হিসাবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন। একই বছর ১২ ডিসেম্বর তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগে প্রভাষক হিসাবে যোগ দেন।

১৯৭৩: তার প্রথম গবেষণা গ্রন্থ রবীন্দ্রপ্রবন্ধ: রাষ্ট্র ও সমাজচিন্তা একইবছর সেপ্টেম্বরে কাব্যগ্রন্থ অলৌকিক ইস্টিমার প্রকাশিত হয়। সে বছরের সেপ্টেম্বরে তিনি কমনওয়েলথ বৃত্তি নিয়ে ভাষাবিজ্ঞান পড়তে স্কটল্যান্ডে চলে যান।

১৯৭৬: তিনি স্কটল্যান্ডের এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভাষাবিজ্ঞানে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। তার গবেষণার বিষয় ছিল বাংলা ভাষায় সর্বনামীয়করণ। গবেষণাকালীন সময়ে তিনি রবার্ট ক্যাল্ডরের সহযোগিতায় কবি জীবনানন্দ দাশ এবং নিজের কিছু কবিতা অনুবাদ করেছিলেন, যেগুলি "লিডস বিশ্ববিদ্যালয় জার্নাল" এবং এডিনবরার বিশ্ববিদ্যালয়ের "চ্যাপম্যান" সাময়িকপত্রে প্রকাশিত হয়েছিল।

১৯৮৩: এই গবেষণাপত্র প্রোনোমিনালাইজেশন ইন বেঙলি নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্য ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড থেকে প্রকাশিত হয়।

১৯৭৮, ১ নভেম্বর: আজাদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সহযোগী অধ্যাপক হিসাবে যোগদান করেন এবং পরবর্তীকালে বাংলা বিভাগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৭৩: জানুয়ারিতে প্রথম কাব্যগ্রন্থ অলৌকিক ইস্টিমার প্রকাশিত হয়।

১৯৮০ মার্চ: তার দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ জ্বলো চিতাবাঘ প্রথম প্রকাশিত হয়।

১৯৮৫: প্রকাশিত সবকিছু নষ্টদের অধিকারে যাবে, তৃতীয় কাব্যগ্রন্থটি তিনি সমসাময়িক দুই বাংলাদেশী লেখক হুমায়ূন আহমেদ এবং ইমদাদুল হক মিলনকে উৎসর্গ করেছেন।

১৯৮৬: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক পদে উন্নীত হন।

১৯৮৬: সাহিত্যে অবদানের জন্য তিনি বাংলা একাডেমী পুরস্কার লাভ করেন।

১৯৯৪: হুমায়ূন আজাদ ঔপন্যাসিক হিসেবে নিজেকে আত্মপ্রকাশ করেন প্রথম উপন্যাস ছাপ্পান্নো হাজার বর্গমাইল-এর মধ্যে দিয়ে। তার প্রকাশিত উপন্যাসের সংখ্যা ছিলো ১২টি।

২০০৪: একুশে বইমেলাতে পাক সার জমিন সাদ বাদ উপন্যাসটি প্রকাশিত হয়। এই গ্রন্থটি প্রকাশিত হলে দেশের মৌলবাদী গোষ্ঠী তার প্রতি ক্রুদ্ধ হয়, এবং বিভিন্ন স্থানে হুমায়ুন আজাদের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালায়।

২০০৫: এই সাতটি কাব্যগ্রন্থ সহ আরো কিছু অগ্রন্থিত ও অনূদিত কবিতা নিয়ে কাব্যসমগ্র প্রকাশিত হয়।

২০০৪, ২৭ ফেব্রুয়ারি: বাংলা একাডেমিতে অনুষ্ঠিত বইমেলা থেকে বেরিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিজের বাসায় যাওয়ার পথে ঘাতকদের দ্বারা আক্রমণের শিকার হন তিনি।

২০০৪, ৭ আগস্ট: জার্মান কবি হাইনরিখ হাইনের ওপর গবেষণা বৃত্তি নিয়ে জার্মানি যান।

২০০৪, ১১ আগস্ট: রাতে একটি অনুষ্ঠান থেকে প্রত্যাবর্তনের পর আবাসস্থলে আকস্মিকভাবে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন হুমায়ুন আজাদ। ১২ আগস্ট আবাসস্থলের নিজ কক্ষে তাকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।

২০১২: বাংলাদেশ সরকার তাকে ভাষা ও সাহিত্যে মরণোত্তর একুশে পদক প্রদান করেন।

 

তথ্যসূ্ত্র: উইকিপিডিয়া, বাংলাপিডিয়া

এবি/এসজে

১১ আগস্ট ২০২১, ১২:০৮পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।