পাকিস্তান জুড়ে বিক্ষোভ, প্রধানমন্ত্রীত্ব ছেড়ে স্বাধীনতার আন্দোলনে ইমরান খান!
ছবি- সংগৃহিত
ইমরান খান। বিশ্বকাপ জয়ী ক্রিকেট অধিনায়ক থেকে দেশের প্রধানমন্ত্রী। নেতৃত্ব যেন তার ভাগ্যের সঙ্গে আষ্টেপৃষ্ঠে লেগে আছে। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর চার বছর পূর্তির আগেই হারিয়েছেন ক্ষমতা। অনাস্থা ভোটে পার্লামেন্ট ছেড়ে আবারও মাঠের রাজনীতিতে ইমরান খান। শুরু করেছেন নতুন আন্দোলন। এই আন্দোলনকে কেউ কেউ ইমরানের ক্রিকেট ক্যারিয়ারের সঙ্গে তুলনা করছেন। ক্রিকেটে নাছোড়বান্দা ইমরান যেন রাজনীতিতেও পুরোনা রূপে আবির্ভুত হয়েছেন।
তবে অনাস্থা ভোটের আয়োজন ও ইমরানকে পদচ্যুত করার পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের হাত রয়েছে বলে বরাবর অভিযোগ করে আসছিলেন তিনি। এ নিয়ে অবশ্য কম জল ঘোলাও হয়নি। শেষমেষ শনিবার দিবাগত মধ্যরাতে প্রধানমন্ত্রীত্ব হারান ইমরান খান।
তবে তিনি নিজেকে গুটিয়ে নেবেন না বলে জানিয়েছেন। পাকিস্তানের গণমাধ্যমগুলো বলছে, পাকিস্তান তেহরিক ই ইনসাফের (পিটিআই) সব সদস্য ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি থেকে ইস্তফা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
রবিবার (১০ এপ্রিল) পাকিস্তানের সদ্য প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী টুইট করে আবারও 'স্বাধীনতা সংগ্রাম' শুরুর বার্তা দেন। ওই বার্তায় তিনি ‘বিদেশি ষড়যন্ত্রের’ কথাও উল্লেখ করেন।
বাংলাদেশ সময় বিকাল ৫টার দিকে নিজের টুইটার হ্যান্ডেলে ইমরান খান লিখেন, ‘১৯৪৭-এ স্বাধীন হয় পাকিস্তান। কিন্তু, বিদেশি ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে দেশের ক্ষমতা দখলের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা সংগ্রাম আজ থেকে আবারও শুরু হলো। দেশের মানুষই দেশের সার্বভৌমত্ব এবং গণতন্ত্রকে রক্ষা করে।’
এর আগে রবিবার ইসলামাবাদের বানি গালায় নিজ দরের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন ইমরান। সেখানে সামনের আন্দোলন নিয়ে আলোচনা করেন তারা।
এরপরই দেশটির সদ্য প্রাক্তন তথ্যমন্ত্রী ফওয়াদ চৌধুরী ঘোষণা করেন, যদি পাকিস্তান মুসলিম লিগের সভাপতি শাহবাজ শরিফের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার বিরুদ্ধে তাদের আপত্তি থাকার বিষয়টি বিবেচনা না করা হয়, তাহলে সোমবারই পিটিআই সদস্যরা ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি থেকে ইস্তফা দেবেন।
দেশটির গণমাধ্যম বলছে, বিরোধীদের সম্মিলিত প্রার্থী হিসেবে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের ভাই শাহবাজ প্রধানমন্ত্রী পদে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। অন্যদিকে পিটিআই-এর পক্ষ থেকে প্রাক্তন পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশিকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী করা হয়েছে। সোমবার ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী বেছে নেওয়া হবে।
এদিকে ইমরান খানকে ক্ষমতাচ্যুত করার প্রতিবাদে তার রাজনৈতিক দল পিটিআই পাকিস্তানের বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে। করাচি, পেশোয়ার, মালাকান্দ, মুলতান, খানওয়াল, খাইবার, ঝাং, কোয়েটা, ওকারা, ইসলামাবাদ, লাহোর এবং অ্যাবোটাবাদ শহরে বড় ধরনের বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে।