• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

‘পদ্মা সেতু নিয়ে মাশরাফির ফেসবুক পোস্ট ভাইরাল’

‘পদ্মা সেতু নিয়ে মাশরাফির ফেসবুক পোস্ট ভাইরাল’

নিজস্ব প্রতিবেদক

পদ্মা সেতুর টোল নির্ধারণ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে। পক্ষে-বিপক্ষে নেটিজেনরা নানা মন্তব্য আর স্ট্যাটাস দিচ্ছেন। একটি পক্ষ বলছেন, যে হারে পদ্মা সেতুর টোল নির্ধারণ করা হয়েছে, তাতে সাধারণ মানুষের সেবা পাওয়া কঠিন হবে। আবার অন্য একটি পক্ষ বলছে, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে পদ্মা সেতু হবে মাইলফলক।

এমন সরগরম অবস্থার মাঝে এবার পদ্মা সেতুর গুরুত্ব ও নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করে ফেসবুকে পোস্ট করেছেন সাবেক ক্রিকেট অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। ‘নড়াইল এক্সপ্রেস’ খ্যাত দেশসেরা ক্রিকেট ক্যাপ্টেনের সেই ফেসবুক পোস্ট এরই মধ্যে ভাইরাল হয়েছে।

বৃহস্পতিবার বেলা তিনটার দিকে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে পোস্টটি করেন নড়াইলের সাংসদ মাশরাফি। মাশরাফির স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো-

‘দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের জন্য পদ্মা সেতু কতটা জরুরি, ওই পথে চলাচলের অভিজ্ঞতা ছাড়া তা আসলে বুঝা খুবই কঠিন। দুটি ঈদের কথা উল্লেখ না-ই করলাম, তখন তো গোটা দেশের মানুষই নিউজে দেখতে পায় কতটা কষ্ট করে মানুষ নদী পার হয়। কিন্তু শীতকালে যে কী অবস্থা হয়, সেটা কেবল তারাই বুঝে, যাদের এই অভিজ্ঞতা হয়। তার ওপর নানা সময়ে নিম্নচাপ বা প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলে তো কথাই নেই, সারা রাত ফেরি বন্ধ।

বছরজুড়ে নানা সময়ে গাড়ির সিরিয়াল যখন শুরু হয়, বিকেল থেকে পরদিন সকাল পর্যন্ত ঘাটে বসে থাকতে হয় অনেক ক্ষেত্রে। শতশত মালবাহী ট্রাক থাকে অপেক্ষায়, কাঁচামাল তো ঘাটেই পঁচে যায়, এসব মোটামুটি নিয়মিত চিত্র। এরপর যদি নদীর স্রোতে ঘাট ভেঙে যায়, যন্ত্রণা তখন আরও বেড়ে যায়।’

সবচেয়ে বেদনাদায়ক ব্যাপার হয়, যখন কোনো মুমূর্ষু রোগী নদী পার হওয়ার জন্য অপেক্ষায় থাকে। প্রতিটি মিনিট তখন মনে হয় অনন্তকাল। ওই পরিবার তখন কতটা অসহায় থাকে, কেউ ওই অবস্থায় না পড়লে বোঝা দায়। ঘাটেই রোগী মারা গেছে, ঢাকায় এনে চিকিৎসা করানো যায়নি, এরকম নজির আছে অনেক। প্লেনে বা হেলিকপ্টারে রোগী আনার সামর্থ্য কজনেরই বা আছে!

এছাড়াও আরও কত যে সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়, এই পথের নিয়মিত যাত্রীরাই কেবল বুঝে। সেই যন্ত্রণাময় দিনগুলি শেষ হতে চলেছে। অনেক প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে, অনেক প্রতিকূলতা মোকাবেলা করে পদ্মা সেতু এখন উদ্বোধনের অপেক্ষায়। কোটি কোটি মানুষের কাছে এটা স্বপ্নের চেয়েও বড় কিছু। অনেকে কখনও কল্পনাও করতে পারেননি, জীবদ্দশায় পদ্মার ওপর সেতু দেখতে পাবেন। এটা স্রেফ ইট-সিমেন্টের সেতু নয়, এই অঞ্চলের মানুষের কাছে এটা অনেক আবেগ-অনুভূতির প্রতিশব্দ।

যুগ যুগ ধরে চলে আসা এসব সমস্যার সমাধান তো এখন হবেই, এই অঞ্চলে এখন শিল্প কারখানা গড়ে উঠবে, বেকারত্ব দূরীকরণে তা ভূমিকা রাখবে, গোটা দক্ষিণাঞ্চলের চেহারা বদলে যাবে।

ধন্যবাদ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। পদ্মা সেতুর জন্য আপনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে আমার রাজনৈতিক পরিচয়ের প্রয়োজন পড়ে না। সমস্ত রাজনীতির উর্ধ্বে গিয়ে সবার পক্ষ থেকেই একটি ধন্যবাদ অন্তত আপনার প্রাপ্য।’

১৯ মে ২০২২, ০৪:২৩পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।