• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

ধেঁয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’, ভয়ঙ্কর তাপমাত্রাও সামনে

ধেঁয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’, ভয়ঙ্কর তাপমাত্রাও সামনে

ছবি- সংগৃহিত

নিজস্ব প্রতিবেদক

বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি শক্তি সঞ্চয় করে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে। ঘণ্টায় ৮৮ কিলোমিটার বাতাসের বেগে ঘূর্ণিঝড়টি ধেঁয়ে আসছে উপকূলের দিকে। ঘূর্ণিঝড়টির নাম দেয়া হয়েছে ‘অশনি’। সিংহলি ভাষায় অশনি শব্দের অর্থ ক্রোধ বা রাগ।

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেয়ায় দেশের ছয় অঞ্চলে তাপদাহ বিরাজ করছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আরব সাগর ও বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ঠ ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করে বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার সাইক্লোন সংক্রান্ত আঞ্চলিক সংস্থা ‘এসকাপ’। এ অঞ্চলের ১৩টি দেশের দেয়া নামের তালিকা থেকে পর্যায়ক্রমে নতুন নতুন ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করা হয়। এবার শ্রীলঙ্কার দেয়া নামে আসছে ঘূর্ণিঝড়।

এদিকে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, দক্ষিণ আন্দামান সাগরে শুক্রবার একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হওয়ার পর তা ঘনীভূত হয়ে শনিবার সকালের দিকে নিম্নচাপ এবং পরে তা গভীর নিম্নচাপের রূপ নেয়। ফলে এটি দ্রুত শক্তি সঞ্চয় করে রবিবার ভোর নাগাদ ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’তে পরিণত হয়।

আবহাওয়ার বিশেষ বুলটিনে বলা হয়েছে, রবিবার সকাল ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১২৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণ দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১১৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১২৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১২০৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’।

ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ রয়েছে ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার। যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছিল। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছে সাগর উত্তাল থাকায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

এ ছাড়া উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করার নির্দেশনা দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সেই সঙ্গে গভীর সাগরে বিচরণ না করতে সকল ধরণের নৌকা ও মাছ ধরার ট্রলার সমূহকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

এদিকে ভারতের আবহাওয়া অফিস বলছে, ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’ আরও ঘণীভূত হয়ে উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে। এটি আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। বর্তমান গতিধারা অব্যাহত থাকলে ঘূর্ণিঝড়টি মঙ্গলবার সন্ধ্যা নাগাদ ভারতের অন্ধ্র প্রদেশ ও ওড়িশা ঊপকূলের কাছাকাছি পৌঁছে উত্তরপুর্ব দিকে বাঁক নিতে পারে। তারপর ওড়িশা উপকূলের এগিয়ে যেতে পারে আরও উত্তরপূর্বে।

তবে অশনি আদৌ উপকূল অতিক্রম করবে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয় বলে জানিয়েছে ভারতের আবহাওয়া অফিস।

তবে জয়েন্ট টাইফুন ওয়ার্নিং সেন্টারের পূর্বাভাস বলছে, উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে বাঁক নেয়ার পর দুর্বল হতে হতে আগামী বৃহস্পতিবার নাগাদ ঘূর্ণিঝড়টি সাগরেই ফের গভীর নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে।

এদিকে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রবিবার রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, সিলেট, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।

পূর্বাভাসে আরও বলা হয়েছে, চলতি মাসে দেশের পশ্চিমাঞ্চলে তীব্র তাপপ্রবাহ (সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে) ও দেশের অন্যত্র একটি বা দুটি মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।

০৮ মে ২০২২, ০৫:১৯পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।