বিদেশগামীদের সঙ্গে অভিনব প্রতারণা : সাগরেই স্বপ্ন বিনাশ
প্রতিকী ছবি
সহায় সম্বল বিক্রি করে সচ্ছল জীবনের আশায় দেশের হাজার হাজার মানুষ বিদেশে পাড়ি জমায়। প্রিয়জনদের মায়া কাটিয়ে তারা বছরের পর বছর বিদেশ বিভূঁইয়ে কাটিয়ে দেন জীবনের মূল্যবান সময়। সংসারের দায়িত্ব সামলাতে প্রবাস জীবন বেছে নেয়া মানুষদের সঙ্গে প্রতারণার ঘটনা নতুন নয়। তবে মালয়েশিয়া পাঠানোর নাম করে সাগরের তিন চারদিন ঘুরিয়ে সেন্টমার্টিনে নামিয়ে দেয়ার ঘটনা অভিনব প্রতারণাই বটে।
এমন প্রতারণার শিকার হয়েছেন কয়েকশ বিদেশগামী। প্রতারক চক্রের খপ্পরে পড়ে নিঃস্ব হয়েছেন অনেকেই। সম্প্রতি এমন খবর দিয়েছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
সোমবার চট্টগ্রামের চান্দগাঁও ক্যাম্পে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব-৭ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এম এ ইউসুফ।
র্যাব জানিয়েছে, সমুদ্রপথে মালয়েশিয়া পাঠানোর কথা বিদেশগামীদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিতো একটি চক্র। এই চক্রটি বিদেশগামীদের ট্রলারে তুলে সাগরে তিন চারদিন ঘুরিয়ে মালয়েশিয়ায়র কথা বলে সেন্টমার্টিনে নামিয়ে দিতো। অভিনব এমন প্রতারণার সঙ্গে জড়িত পাঁচ প্রতারককে এরই মধ্যে আটক করেছে র্যাব।
র্যাব জানিয়েছে, এসব বিদেশগামীদের কাছ থেকে স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর রাখতো প্রতারকরা। পরে ওই স্ট্যাম্প দেখিয়ে বিদেশগামীদের বাড়ি, জমি ও ঘর দখল করত চক্রটি। এসব কাজে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের সংশ্লিষ্ঠতা রয়েছে বলে জানা গেছে।
গ্রেপ্তাররা হলেন- মো. ইসমাইল, শফিউল আলম, রিয়াজ খান রাজু, মো. হোসেন ও মো. ইউনুছ মাঝি।
রবিবার চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার বাঁশখালী এবং পেকুয়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে এই পাঁচ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এদের চারজনই চক্রের মূলহোতা।
র্যাব-৭ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এম এ ইউসুফ বলেন, মানবপাচার চক্রের মূলহোতা হচ্ছে আপন দুই ভাই ইসমাইল হোসেন ও শফিউল আলম। তারা মূলত মানুষ সংগ্রহ করে মালয়েশিয়া পাঠানোর জন্য। তারা কক্সবাজারের পেকুয়া ও চট্টগ্রামের বাঁশখালী থানা এলাকার নিরীহ মানুষদের দারিদ্র্যের সুযোগে স্বল্প খরচে বিদেশ পাঠানোর জন্য চুক্তি করত। প্রতারক চক্রটির খপ্পরে পড়ে অসংখ্য মানুষের স্বপ্ন সাগরেই শেষ হয়ে গেছে।