• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
কিডনী রোগে আক্রান্ত ইবি শিক্ষার্থী’র সহায়তার আবেদন

‘মেধাবী সোহেল বাঁচলে, কৃষক বাবার স্বপ্ন বাঁচবে’

‘মেধাবী সোহেল বাঁচলে, কৃষক বাবার স্বপ্ন বাঁচবে’

ছবি- ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ইংরেজি বিভাগের মেধাবী শিক্ষার্থী সোহেল রানা

নিজস্ব প্রতিবেদক

কৃষক বাবার স্বপ্ন তাঁর ছেলেটা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বে। কারণ প্রত্যন্ত গ্রামে বসবাস করেও মেধাবী ছেলেটা এসএসসিতে জিপি-এ ৫ পেয়েছে। স্কুলের শিক্ষক, গ্রামের শিক্ষিত মানুষ ও প্রতিবেশীরা কৃষক বাবাকে সাহস জুগিয়েছেন যে, তাঁর ছেলে মেধাবী, সে কেন পড়ে থাকবে গ্রামে? মেধাবী ছেলেটি অবশ্যই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বে। তখন থেকেই সোহেল রানা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন।

ঝিনাইদহ জেলার হরিণাকুণ্ডু উপজেলার গোপিনাথপুর গ্রামের মেধাবী শিক্ষার্থী সোহেল রানা এইচএসসি পরীক্ষাতেও কৃতিত্বের সঙ্গে উত্তীর্ণ হন। এর পর অর্থাভাবে পড়াশোনা শেষ হওয়ার উপক্রম হলে তার বাবা খালে-বিলে মাছ ধরা শুরু করেন। মাছ বিক্রি ও পরের ক্ষেতে কাজ করে উপার্জিত বাড়তি আয় দিয়ে ছেলেকে কোচিং করান। ছেলেও তার বাবার স্বপ্নকে ফিঁকে হতে দেননি। ভর্তি যুদ্ধে অংশ নিয়ে নিজের যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজের জায়গা পাকাপোক্ত করেন সোহেল রানা। কিন্তু তখনো তার প্রতিপক্ষ ছিল ‘অর্থ’।

অবশেষে পরিবারের অর্থাভাব ও কৃষক বাবার কষ্টের কথা চিন্তা করে সোহেল রানা ভর্তি হন কুষ্টিয়াস্থ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ইংরেজি বিভাগে। ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষে ভর্তির পর সোহেল টিউশনি করেই নিজের পড়াশোনার খরচ চালাচ্ছিলেন। দু-চার পয়সা জমিয়ে মাঝে মাঝে পরিবারকেও সহযোগিতা করতেন তিনি।

দীর্ঘ মেহনতের পর কৃষক বাবা ভেবেছিলেন, এবার বোধহয় ছেলে তাঁর পরিবারের হাল ধরবে। কিন্তু কে জানতো ততদিনে সোহেল রান্নার দেহে বাসা বেঁধেছে জটিল রোগ। আকষ্মিক ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন সোহেল। স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর জানা যায় সোহেলের দুটি কিডনীই বিকল হয়ে গেছে। মূহুর্তেই কৃষক বাবা-মা’র মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়ে।

তারপরও কলিজা ছেঁড়া ধন প্রিয় সন্তানকে বাঁচিয়ে রাখতে প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যেতে থাকে সোহেলের পরিবার। মেধাবী শিক্ষার্থী সোহেলের অসুস্থতার খবর শুনে তার সহপাঠী বন্ধু, শিক্ষকসহ শুভানুধ্যায়ীরা সহযোগিতা নিয়ে এগিয়ে আসে। ব্যয়বহুল ডায়ালাইসিসের মাধ্যমে এতদিন সোহেল কোনো রকমে টিকে আছেন।

চিকিৎসক বলেছেন, দ্রুত কিডনী প্রতিস্থাপন করা না গেলে সোহেলকে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব হবে না। কিডনী প্রতিস্থাপনের জন্য সোহেল রানাকে নেয়া হবে ভারতে। প্রয়োজন বিপুল পরিমাণ টাকা। যে যেভাবে পারছে, মেধাবী এই স্বপ্নটি বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছে। একজন কৃষক বাবার স্বপ্ন যেন অকালেই দুঃস্বপ্নে পরিণত না হয়, সেজন্য মানুষের কাছে সহায়তার আহ্বান জানিয়েছেন মেধাবী ছাত্র সোহেল রানার স্বজন ও সহপাঠীরা।

সোহেল রানা বলেন, আমার বাবা কৃষক। দরিদ্র পরিবারে জন্মের পর থেকে অনেক কষ্ট করে লেখাপড়া করেছি। স্কুলের শিক্ষক, প্রতিবেশী ও মানুষের সহযোগিতা নিয়ে উচ্চ শিক্ষার স্বপ্ন পুরণ হয়েছে। আমার যখন পরিবারের হাল ধরার কথা, তখন আমি হাসপাতালের বিছানায় কঠিন রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ে আছি। আমার চিকিৎসায় যে পরিমাণ টাকা প্রয়োজন, তা আমার পরিবারের পক্ষে সংস্থান করা সম্ভব নয়। আমি দেশের বিত্তবান ও হৃদয়বান সকলের কাছে সহযোগিতা কামনা করছি।

সোহেলকে সহায়তা পাঠাবেন যেভাবে-

সোনালী ব্যাংক- ২৪০৫৯০১০১২৯৩২, ব্রাঞ্চ- হরিণাকুণ্ডু শাখা, ঝিনাইদহ এবং ডাচ-বাংলা- ৭০১৭০১৫৪৮৫৪৯৫ (এজেন্ট ব্যাংকিং)।

এছাড়া মোবাইল ব্যাংকিং-এর মাধ্যমে সহায়তা পাঠাতে ০১৭৪৩ ৭০০৫৪৭ (বিকাশ), ০১৭৪৩ ৭০০৫৪৭৮ (রকেট) এবং ০১৯১৫ ৫১৯৪৮৭ (নগদ) ব্যবহার করতে পারেন।

 

এবি/এসএন

২৯ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৫:৫৯পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।