• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

২৬ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে শিক্ষার্থীদের সতর্ক করল ইউজিসি

২৬ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে শিক্ষার্থীদের সতর্ক করল ইউজিসি

ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের ২৬টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ব্যাপারে শিক্ষার্থীদের সতর্ক করে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি না হতে গণবিজ্ঞপ্তিতে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। একই সঙ্গে সরকার অনুমোদিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রোগ্রামে ভর্তি হতে শিক্ষার্থীদের পরামর্শ দিয়েছে ইউজিসি।

জানা গেছে, বর্তমানে সারাদেশে ১০৮টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় চালু রয়েছে। এর মধ্যে নয়টিতে এখনও শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়নি। ৯৯টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে চলছে শিক্ষা কার্যক্রম। এর মধ্যে ২৬টি প্রতিষ্ঠানে ভর্তি না হতে শিক্ষার্থীদের সতর্ক করে দিয়েছে ইউজিসি। এর আগে ১৬টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে সতর্কতা জারি করেছিল ইউজিসি।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে ছয় মাসের বেশি সময় ধরে রাষ্ট্রপতির নিয়োগ করা উপাচার্য, সহ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ নেই, সেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি না হওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

ইউজিসি প্রকাশিত তথ্য বলছে, ইবাইস ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজ দুই ভাগে বিভক্ত। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ট্রাস্টিজ গ্রুপের মধ্যে আদালতে মামলা চলমান। বর্তমানে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদিত কোনো ঠিকানাও নেই। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়টিতে রাষ্ট্রপতির নিয়োগকৃত উপাচার্য, সহ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ নেই। কাজেই এই প্রতিষ্ঠানে ভর্তি না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে ইউজিসি।

এদিকে ইউজিসির তালিকায় রয়েছে আমেরিকা বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি। এটি অনেক আগেই সরকার বন্ধ করে দিয়েছিল। তবে আদালতের স্থগিতাদেশ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টি এখনো পরিচালিত হচ্ছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়া তথ্যে বলা হয়েছে, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ঠিকানা বারিধারা-নর্দার প্রগতি সরণিতে। কিন্তু বাস্তবে তার কোনো হদিস মেলেনি। এই বিশ্ববিদ্যালয়টিকে অনুমোদন দেয়নি ইউজিসি।

এর পরেই রয়েছে কুইন্স ইউনিভার্সিটি। যেটিও সরকার বন্ধ করে দিয়েছিল। পরে পক্ষে-বিপক্ষে একাধিক মামলার পর শর্ত সাপেক্ষ্যে প্রতিষ্ঠানটি কার্যক্রম পরিচালনার অনুমোদন পায়। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি এখনো কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি।

ইউজিসির অনাস্থা তালিকায় থাকা অপর প্রতিষ্ঠানের নাম ‘দি ইউনিভার্সিটি অব কুমিল্লা’। এটি ১৯৯৫ সালে অনুমোদন পেলেও ২০০৬ সালে সরকার এটি বন্ধ ঘোষণা করে। বিশ্ববিদ্যালয়টির বর্তমান অনুমোদিত ঠিকানা রাজধানীর উত্তরায়। ইউজিসি গত বছর সেখানে সরেজমিনে পরিদর্শনে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো অস্তিত্ব খুঁজে পায়নি। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে সনদ বিক্রির অভিযোগ রয়েছে। নেই রাষ্ট্রপতির নিয়োগ করা উপাচার্য, সহ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ।

এদিকে এশিয়ান ইউনিভার্টিসি বাংলাদেশে বাংলায় বিএ (অনার্স)-সহ কয়েকটি প্রোগ্রাম ২০২১ সালের ‘স্প্রিং’ সেমিস্টার’ থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত শিক্ষার্থী ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে বলে জানিয়েছে ইউজিসির একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র। এই প্রতিষ্ঠানটিতে নেই রাষ্ট্রপতির নিয়োগ করা উপাচার্য, সহ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ।

এছাড়া ফরিদপুরের টাইমস ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশকে ২০১৫ সালে ১০টি প্রোগ্রামের অনুমোদনসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর অনুমোদন দেয় ইউজিসি। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ইউজিসির অনুমোদনের আগেই সেখানে বিবিএসহ কয়েকটি প্রোগ্রামে শিক্ষার্থী ভর্তি ও কার্যক্রম শুরু করেছে। এ বিষয়ে মামলা চলমান রয়েছে।

অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে রয়েছে- চট্টগ্রামের সাউদার্ন ইউনিভার্সিটি, সাভারের গণবিশ্ববিদ্যালয়, প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটি। এর মধ্যে ছয়টি বিশ্ববিদ্যালয় সরকারি অনুমোদন পেলেও এখনো শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করেনি। এগুলো হল- রূপায়ণ এ কে এম শামসুজ্জোহা বিশ্ববিদ্যালয় (নারায়ণগঞ্জ), রাজশাহীর আহছানিয়া মিশন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, শাহ মখদুম ম্যানেজমেন্ট ইউনিভার্সিটি, খুলনার খান বাহাদুর আহসানউল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকার মাইক্রোল্যান্ড ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি এবং সদ্য অনুমোদন পাওয়া কিশোরগঞ্জের শেখ হাসিনা ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের যেসব ক্যাম্পাস অনুমোদন ছাড়াই চলছে, সেগুলো হল- ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অলটারনেটিভ, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ ও সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটি। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক ক্যাম্পাস রয়েছে। যার কোনোটি অনুমোদিত আবার কোনোটি অননুমোদিত।

ইউজিসি সূত্রে জানা গেছে, বোর্ড অব স্ট্রাস্টিজের দ্ব›দ্ব থাকায় সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, কুমিল্লার ব্রিটানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, সাউদার্ন ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ ও কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি।

এছাড়া অননুমোদিত প্রোগ্রাম চলছে এমন বিশ্ববিদ্যালয় চারটি। সেগুলো হল- জেড এইচ সিকদার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, পুন্ড্র ইউনিভার্সিটির এলএলবি (চার বছর মেয়াদি) এলএলএম (এক বছর), এলএলএম (দুই বছর মেয়াদি) প্রোাগ্রাম, সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বিএসসি ইন ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং প্রোগ্রাম।

 

এবি/এসএন

২৪ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৫:১৩পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।