বর্তমান সরকার ক্রমেই গণবিরোধী হয়ে উঠছে: ডা. পিনাকী ভট্টাচার্য
ডা. পিনাকী ভট্টাচার্য
সম্প্রতি ভারতে ইলিশ পাঠানো নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেছেন ডা. পিনাকী ভট্টাচার্য। ডা. পিনাকী দাবি করেছেন, স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকার ভারতের সঙ্গে প্রকাশ্যে সম্পর্ক রাখলেও কৌশল নিয়েছেন ড. ইউনূস সরকার। শেখ হাসিনার শাসনের মতো একই ভাবে সুযোগ সুবিধা দিতে মরিয়া অন্তর্বর্তী সরকারের কয়েকজন উপদেষ্টা। ইলিশ পাঠানো, ভারতীয় নেতাদের উস্কানিমূলক বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ইউনূস সরকার নমনীয় পররাষ্ট্রনীতি গ্রহণ করেছে।
শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) নিজের ভেরিফাইড ইউটিউব চ্যানেলের এক ভিডিওতে তিনি এসব কথা বলেন।
চ্যানেলে প্রচারিত ভিডিও এপিসোডে ডা. পিনাকী আরও বলেন, প্রফেসর ইউনুস যেদিন শপথ নিলেন সেদিনই বলেছিলাম, দেশে ইফেক্টিভ বিরোধী দল নাই। তাই আমি বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করব। আমি এই সরকারের ব্যাপারে কুসুম কুসুম (নমনীয়) সমালোচনার নীতি গ্রহণ করেছিলাম। কিন্তু এই সরকার অপদার্থ। এরা ক্রমেই গণবিরোধী হয়ে উঠতে যাচ্ছে।
ড. ইউনূসের সরকার জনগণের স্বার্থের ব্যাপারে হাসিনার মতোই নীতি উল্লেখ করে ডা. পিনাকী বলেন, বাংলাদেশে আসলে এখন ক্ষমতা কার হাতে? সরকার প্রধানদের আগে যে তেল মারা (তোষামোদি করা) হতো, এখনো সেই একই তেল মারা (তোষামোদি করা) হচ্ছে। গণমানুষকে সেই একই ভাবে অবজ্ঞা করা হচ্ছে। দেশের মানুষ সম্পর্কে সেই একই ধরনের ধারণা ছড়ানো হচ্ছে। প্রফেসর ইউনুসের উপদেষ্টারা যে যার মতো বক্তব্য দিচ্ছেন। মানুষের জন্য কে কথা বলছে?
সম্প্রতি সময়ে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড প্রসঙ্গ তুলে ডা. পিনাকী ভট্টাচার্য বলেন, আগে বিরোধী মত দমনে শেখ হাসিনা গোয়েন্দা বাহিনী লেলিয়ে দিতো। এভাবে হাসিনা সরকার হাজার হাজার মানুষকে গুম-খুন করেছে। হাসিনা কিন্তু ক্ষমতা নেয়ার এক মাসের ভেতরে কোনো গুম-খুনের ঘটনা ঘটায়নি। কিন্তু এই সরকারের এক মাস না যেতেই বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটেছে দেশে।
গণমাধ্যমের ভূমিকা প্রসঙ্গে ডা. পিনাকী আরও বলেন, আগে আমরা হাসিনার সংবাদ সম্মেলনে তৈলমর্দন (তোষামোদি করা) দেখতাম। কথিত সাংবাদিক নেতারা শেখ হাসিনার প্রশংসা করতেন। এখনো সেই একই রীতি বহাল রয়েছে। উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বোধহয় এই সরকারের সবচেয়ে ক্ষমতাধর উপদেষ্টা। যে কারণে তাকে নিয়ে তেলবাজিটা (তোষামোদি করা) বেশি হচ্ছে। অ্যাটর্নি জেনারেল পর্যন্ত আসিফ নজরুলের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। কারণ অ্যাটর্নি জেনারেল জানেন, আসিফ নজরুলই তাকে নিয়োগ দিয়েছেন।
দেশের উন্নয়নে প্রবাসীদের অবদানের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশের মানুষের জীবন সংগ্রাম ও প্রবাসীদের সংগ্রামী জীবন সম্পর্কে এই সরকারের বাস্তবিক জানা বোঝা নাই। প্রবাসীদের চেতনা যদি এই সরকার বুঝতো, তাহলে তারা কখনোই ভারতের সঙ্গে নতজানু পররাষ্ট্রনীতি গ্রহণ করত না। ড. ইউনূস সরকারের এক উপদেষ্টা তো বলেছেন, ‘পশ্চিমবঙ্গ বাংলাদেশের গণঅভ্যুত্থানের সমর্থন দিয়েছিল। এ কারণেই সেখানে ইলিশ পাঠানো হচ্ছে।’ বাংলাদেশের মানুষের কষ্ট এদের কাছে পৌঁছে না। এই দেশের মানুষ জীবন দিয়ে আন্দোলন করেছে, ইলিশ তাদের না দিয়ে যারা কেবল সমর্থন দিয়েছে তাদের জন্য পাঠানোর মতো সিদ্ধান্ত কখনোই দেশের মানুষের স্বার্থপন্থী নয়।