• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১

স্বামী-সন্তানের খোঁজে রাজধানীতে এসে গণধর্ষণের শিকার গৃহবধূ

স্বামী-সন্তানের খোঁজে রাজধানীতে এসে গণধর্ষণের শিকার গৃহবধূ

নিজস্ব প্রতিবেদক

স্বামী-সন্তানের খোঁজে রাজধানীতে এসেছিলেন এক গৃহবধূ। সারাদিন স্বামী-সন্তানকে খুঁজে না পেয়ে বাসায় ফেরার পথে গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন ওই নারী। এ ঘটনায় ভিকটিম রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানায় ধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়ের করেছেন। ওই মামলায় মোহাম্মদপুরের বসিলা থেকে পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

গ্রেফতার পাঁচজন হলেন- বিল্লাল হোসেন (২৫), আল আমিন হোসেন (২৬), সবুজ (২৬), রাসেল ওরফে মোল্লা রাসেল (২৪) ও শফিকুল ইসলাম (২৬)। গত ২৫ জানুয়ারি রাতে এ ঘটনা ঘটে।

রবিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টায় তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব বিষয় জানান ডিএমপি’র উপ-পুলিশ কমিশনার এইচ এম আজিমুল হক। ব্রিফিংয়ে ডিএমপি’র তেজগাঁও বিভাগের মোহাম্মদপুর জোনের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মৃত্যুঞ্জয় দে সজল, সহকারী পুলিশ কমিশনার দেবাশীষ কর্মকার, মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবুল কালাম আজাদ, মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. কামরুজ্জামান ও মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (অপারেশন) তোফাজ্জল হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

উপ-পুলিশ কমিশনার এইচ এম আজিমুল হক বলেন, গত ২৫ জানুয়ারি ভুক্তভোগী ওই নারী দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমের একটি জেলা থেকে সন্তানদের সঙ্গে দেখা করার জন্য মোহাম্মদপুরেরর বসিলায় আসেন। বসিলা এলাকার এক বাসায় ভুক্তভোগী নারী তার স্বামী-সন্তানসহ থাকতেন। আনুমানিক ৪ মাস আগে শারীরিক অসুস্থতার জন্য সন্তানদের স্বামীর নিকট রেখে ভিকটিম তার গ্রামের বাড়িতে চলে যান। এরমধ্যে স্বামী তাকে ডিভোর্স দেন। গত ২৫ জানুয়ারি বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ওই নারী বসিলায় তার আগের ভাড়া বাসায় এসে স্বামী-সন্তানকে না পেয়ে আশপাশে খোঁজাখুঁজি করেন। কিন্তু তিনি স্বামী-সন্তানকে না পেয়ে গ্রামের বাড়িতে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

পুলিশ কর্মকর্তা ব্রিফিংয়ে জানান, ওই দিন রাত সাড়ে ৯টার দিকে বছিলা চল্লিশ ফিট তিনরাস্তার মোড় থেকে একটি রিক্সা ভাড়া করেন ওই নারী। কিন্তু রিকশাওয়ালা ওই নারীকে গাবতলী বাসস্ট্যান্ডে না নিয়ে তার স্বামীর বাসা খুঁজে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে ঢাকা উদ্যান ও বসিলার বিভিন্ন রাস্তায় ঘুরিয়ে নিয়ে বেড়ান। পরে কৌশলে বসিলা ফিউচার টাউন রোডের শেষ মাথায় একটি অস্থায়ী শ্রমিকদের টিনের ঘরে ভিকটিমকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে পালাক্রমে পাঁচজন ধর্ষণ করে।

পুলিশ কর্মকর্তা এইচ এম আজিমুল হক ব্রিফিংয়ে বলেন, পরে ওই নারীর আত্মচিৎকারে এলাকার কর্তব্যরত নিরাপত্তার রক্ষী ও লোকজন এগিয়ে এলে অপরাধীরা পালিয়ে যায়। সংবাদ পেয়ে মোহাম্মাদপুর থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং ভিকটিম নারীকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) পাঠায়। ওই ঘটনায় ভিকটিম নারী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মোহাম্মদপুর থানায় একটি মামলা করেছেন।

উপ-পুলিশ কমিশনার এইচএম আজিমুল হক আরও বলেন, মামলা হওয়ার পর তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তা ও বিভিন্ন সোর্সের মাধ্যমে মোহাম্মদপুর থানার চাঁদ উদ্যান এলাকা থেকে ভিকটিম নারীর মোবাইল ফোন ও শাহিন খান নামে একজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে এ ঘটনায় সরাসরি জড়িত আসামি বিল্লাল হোসেনকে গাবতলী থেকে গ্রেফতার করা হয়। বিল্লালের দেয়া তথ্য অনুযায়ী ঢাকার ডেমরা থেকে অপর আসামি আল আমিন হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়। এ ছাড়া মোহাম্মদপুরের বসিলা থেকে অপর দুই আসামি সবুজ ও রাসেল ওরফে মোল্লা রাসেলকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এঘটনায় সহযোগী আসামিদের গ্রেফতারে এখনো পুলিশের অভিযান চলছে।

০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৭:১৬পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।