‘না ভাবিয়া লিখিয়ে জার্নালিজম, ভাবিয়া লিখিলে সাহিত্য’
প্রতিকী ছবি
প্রথমনাথ বিশী। নাটোরে জন্ম নেয়া খ্যাতিমান এক বাঙালি সাহিত্যিক। সাহিত্যকর্মের মাধ্যমে তিনি সবসময় সমাজের নানা অনিয়মের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন। বিখ্যাত এই সাহিত্যিক ও অধ্যাপক বলেছেন-‘না ভাবিয়া লিখিলে জার্নালিজম (সাংবাদিকতা), ভাবিয়া লিখিলে সাহিত্য’।
নাটোরের জোয়াড়ি গ্রামের জমিদারবাড়ীর সন্তান প্রথমনাথ মূলত বুঝাতে চেয়েছেন, সাংবাদিকতা ও সাহিত্য পরস্পরের সঙ্গে সম্পৃক্ত। সাংবাদিকতার বিস্তর রূপ হলো সাহিত্য। সাহিত্যের সংক্ষিপ্ত প্রকাশই সাংবাদিকতা।
একই সঙ্গে প্রথমনাথ বিশী বলেছেন, সংবাদকর্মী যখন কোনো বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা ও বিস্তর না ভেবে কোনো বিষয়ে লেখে, সেটাই সাংবাদিকতা। তথ্যের আদ্যোপান্ত জানা যতটা জরুরি, তেমনি সেই তথ্য প্রকাশের আগে তার উপযোগিতা, ফলাফল ও সার্বজনীনতা যাচাই করাও জরুরি। সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে তথ্য যাচাইয়ের প্রবণতা দিন দিন কমছে। মুখরোচক গল্প ও ঘটনা পেলেই তা লাগাতার প্রকাশ করে প্রচার বাড়ানো যায়, দিন শেষে ভালো সাংবাদিকতার নজির ভঙ্গ হয়।
বিখ্যাত কেরী সাহেবের মুন্সী উপন্যাসের জনক প্রমথনাথের ভাষ্যমতে, যখন কেউ কোনো তথ্য ও ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে বিস্তর চিন্তা-ভাবনা ও নানা দিক বিবেচনা করে লেখা শুরু করে, সেই লেখা যখন প্রকাশ পায়, তখন তা সাহিত্যের মর্যাদা পায়। প্রতিটি সাহিত্যের মাঝে লেখকের স্থায়ী চেতনার বহিঃপ্রকাশ ঘটে। সাহিত্য লেখকের বহু ভাবনার স্থায়ী রূপ বটে।
পক্ষান্তরে, সাংবাদিকতাকে প্রমথনাথ বিশী স্বল্প ভাবনার ব্যাপক প্রচারণাকে বুঝিয়েছেন। তিনি বলতে চেয়েছেন, যেকোনো বিষয়ের গভীরে প্রবেশ করার মতো সাংবাদিকতা দিন দিন হারিয়ে যাবে। প্রতিযোগিতার বাজারে টিকতে তথ্যের মান যাচাই করাও হবে না।