• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

শিশুর মুখে ঘা কেন হয়, নিরাময় যেভাবে

শিশুর মুখে ঘা কেন হয়, নিরাময় যেভাবে

প্রতিকী ছবি

ফিচার ডেস্ক

শিশুর দেহে অতিপরিচিত একটি সংক্রমণ ‘ওরাল থ্রাশ’ বা মুখের ঘা। শিশুর দেহের যত্নের পাশাপাশি মুখের ও দাঁতের যত্নও নেয়া উচিত। শিশুদের নিয়মিত ব্রাশ করার অভ্যাস করান। শিশুর মুখের ঘা খুবই বিড়ম্বনা সৃষ্টি করে। ভিটামিন বি কমপ্লেক্সের অভাবেও শিশুর মুখে ঘা হতে পারে।

শিশুর মুখে ঘা বা ‘ওরাল থ্যাশ’ নিয়ে কিডস হেলথ ওয়েব জার্নালে প্রকাশিত নিবন্ধে ডাক্তার মিশেল পি. টেলাডো তথ্য দিয়েছেন। তিনি বলেছেন-

মুখে ঘা’র লক্ষণ ও উপসর্গ

‘ওরাল থ্রাশ’ বা মুখে ঘা যে কোনো বয়সের মানুষকে সংক্রমিত করতে পারে। এটিকে আবার ওরাল ক্যানডিডিয়াসিসও বলা হয়। তবে ৬ মাসের কম বয়সী এবং বয়স্ক প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে এটি সবচেয়ে বেশি দেখা যায়।

একটি শিশুর মুখের কোণে চামড়া ফেটে যাবে।
→ ঠোঁটে, জিহ্বায় বা গালের ভিতরে সাদা সাদা ছোপ থাকতে পারে।
→ সাদা সাদা ছোপ দেখতে অনেকটা কুটির পনিরের মতো মনে হবে এবং তা মুছে ফেলা যায় না,
→ শিশু ভালোভাবে খেতে পারবে না, এমনকি কোনো কিছু চুষেও খেতে পারবে না।
→ শিশুর মুখে ব্যথা হতে পারে।
→ শিশু অস্বস্তি অনুভব করতে পারে।

মুখে ঘা’র কারণ

◊ ওরাল থ্রাশ বা মুখে ঘা মূলত ‘ক্যান্ডিডা অ্যালবিকানস’ নামক একটি ছত্রাকের অতিবৃদ্ধির কারণে হয়ে থাকে।

◊ প্রতিটি মানুষের মুখ এবং পাচনতন্ত্রে ক্যান্ডিডা থাকে, যা স্বাভাবিক বৃদ্ধি বলে বিবেচিত হয়। সাধারণত, একটি সুস্থ ইমিউন সিস্টেম এবং কিছু ‘ভাল’ ব্যাকটেরিয়া শরীরে এই ছত্রাকের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে।

◊ কিন্তু যদি ইমিউন সিস্টেম দুর্বল হয়ে যায় বা সম্পূর্ণরূপে বিকশিত না হয়, তাহলে পাচনতন্ত্রের ক্যান্ডিডা অতিরিক্ত বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। পরে এটি শিশুর মুখে সংক্রমণ সৃষ্টি করে।

◊ শিশুকে অ্যান্টিবায়োটিক দেয়ার ফলেও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে শিশুর মুখে ঘা হতে পারে। কারণ, অ্যান্টিবায়োটিক ‘ভাল’ ব্যাকটেরিয়াকে মেরে ফেলতে পারে। এমনকি, স্টেরয়েড ওষুধ ব্যবহারের পরেও ওরাল থ্রাশ হতে পারে।

চিকিৎসা

♦ আপনি যদি মনে করেন আপনার শিশুর মুখে ঘা হতে পারে, তাহলে ডাক্তারের সাথে দেখা করুন।

♦ শিশুর মুখের ঘা সামান্য চিকিৎসায় দ্রুত সেরে যায়।

♦ এন্টি ফাঙ্গাল ওষুধ ব্যবহার করা যেতে পারে। এই ওষুধ সাধারণত মুখ এবং জিহ্বার ভিতরে ‘পেইন্টিং’ করে দিতে হয়। দিনে কয়েকবার প্রয়োগ করলে দ্রুত উপকার পাওয়া যায়।

♦ আপনার শিশুর বয়সের ওপর মুখের ঘা নির্ভর করে। শিশুকে দই খাওয়ানোর অভ্যাস করান। দই ভালো ব্যাকটেরিয়া তৈরি করে। যে ব্যাকটেরিয়া মুখের ঘা দূর করে।

♦ শিশুর বয়স ৯ মাসের বেশি হলে ডাক্তারের সাথে কথা বলুন। কারণ, এটি অন্য স্বাস্থ্য সমস্যার লক্ষণ হতে পারে।

শিশুর মুখের ঘা প্রতিরোধের উপায় 

♦ শিশুকে ফর্মুলা দুধ খাওয়ানোর পর বা প্রতিটি ব্যবহারের পরে স্তনের বোঁটা এবং পাত্রগুলো গরম পানিতে পরিষ্কার করুন। বোতলের নিপল বা প্যাসিফায়ারে ছত্রাক থাকলে, আপনার শিশু আবারো সংক্রমিত হবে। তাই, ছত্রাক বাড়তে না দেয়ার জন্য রেফ্রিজারেটরে দুধ এবং প্রস্তুত বোতল সংরক্ষণ করুন।

♦ আপনি যদি বুকের দুধ খাওয়ান এবং আপনার স্তনের বোঁটা লাল এবং কালশিটে হয়, তাহলে আপনার স্তনবৃন্তে ইস্ট ইনফেকশন হতে পারে। যে কারণে আপনার শিশুর মুখে ছত্রাকের সংক্রমণ দেখা দিতে পারে। তাই, স্তনে অ্যান্টিফাঙ্গাল মলম ব্যবহার করার পরামর্শ নিতে পারেন চিকিৎসকের পরামর্শে।

 

তথ্যসূত্র: কিডস হেলথ।

০৩ জুলাই ২০২৩, ০৩:৪৩পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।