• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

শিশুর মানসিকতায় স্মার্টফোনের ক্ষতিকর প্রভাব

শিশুর মানসিকতায় স্মার্টফোনের ক্ষতিকর প্রভাব

প্রতিকী ছবি

ফিচার ডেস্ক

স্মার্টফোন কিংবা কম্পিউটারে অতিরিক্ত সময় কাটানোর অভ্যাস ভয়ঙ্কর পরিণতি বয়ে আনতে পারে। গবেষকরা বলছেন, স্মার্টফোনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অতিরিক্ত সময় কাটানোর বিষয়টি ব্যবহারকারীরা বুঝতেই পারেন না। কখন যে সময় চলে যায়, অনেকেই তা বুঝতে পারেন না। কারণ, স্মার্টফোনে দীর্ঘসময় বুদ হয়ে থাকার কারণে স্মার্টফোনের স্ক্রিনের আলো মানুষের মস্তিষ্কের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে। ফলে ব্যবহারকারীরা একটি ঘোরে আচ্ছন্ন থাকেন।

‘কানাডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন জার্নাল (সিএমএজে)’ শীর্ষক জার্নালে এক গবেষণায় এরকম চাঞ্চল্যকর তথ্য জানানো হয়েছে। কিশোর-কিশোরীদের স্মার্টফোনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের ওপর গবেষণা চালিয়ে সিএমজে এসব তথ্য দিয়েছে।

গবেষকরা বলছেন, স্মার্টফোনে আসক্ত হওয়ার ফলে কিশোর-কিশোরী ও শিশুদের ঘুম, পড়াশোনা, কাজ, সামাজিক কাজে নিয়োজিত হওয়া ও ব্যক্তিগত সম্পর্ক রক্ষায় নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। স্মার্টফোনে আসক্ত শিশু-কিশোররা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বাইরে পৃথিবীকে অচেনা মনে করে। ইন্টারনেট তাদের কাছে ধ্যান-জ্ঞানে পরিণত হয়, যা আশঙ্কার।

শিশু-কিশোরদের মানসিকতায় যে প্রভাব ফেলে স্মার্টফোন

গবেষণায় দেখা গেছে, বর্তমানে বিশ্বে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী প্রতি ৩ জনের ১ জনই শিশু। এই সংখ্যা দিনদিন আরও বাড়ছে। পরিসংখ্যান বলছে, স্মার্টফোনের ওপর শিশুদের নির্ভরশীলতা ও দৈনন্দিন অভ্যাসের নিয়ন্ত্রণ চলে গেছে। এর জন্য অভিভাবকরাই অধিকাংশ দায়ী।

খিটখিটে মেজাজ: বাবা-মায়েরা শিশুর মানসিক স্বাস্থ্যকে উপেক্ষা করে শুধু দৈহিক স্বাস্থ্যকে প্রাধান্য দিয়ে থাকেন। ফলে তারা শিশুকে খাওয়ানোর সময় হাতে স্মার্টফোন তুলে দেন। এটি দিনে দিনে শিশুদের মানসিকতায় ভারসাম্যহীনতা তৈরি করে। শিশুরা খিটখিটে মেজাজের হয়ে যায়।

মনোযোগ হারিয়ে যায়: বিশেষজ্ঞদের মতে, একটি মোবাইল কল যখন দুই মিনিট স্থায়ী হয় তখন তা শিশুদের মস্তিষ্কের হাইপার অ্যাক্টিভিটি সৃষ্টি করে। যা পরবর্তী এক ঘণ্টা পর্যন্ত তাদের মস্তিষ্কে বিরাজ করে। যার ফলে শিশুর স্নায়ু দুর্বল হয়ে পড়ে, রক্তের চাপ বাড়ে। এ ছাড়া শিশুরা বাহ্যিক কাজ-কর্মে মনোযোগ হারিয়ে ফেলে। তারা সাভাবিক সাধারণ কাজে মনস্থির করতে পারেনা।

ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণের ঝুঁকি: মার্কিন গবেষকেরা পরীক্ষা করে দেখেছেন, টয়লেট সিটের তুলনায় স্মার্টফোনে ১০ গুণ বেশি ব্যাকটেরিয়া থাকে। তাই, নিয়মিত মুঠোফোন নিয়মিত পরিষ্কার না করলে এটি জীবাণুবাহী হয়ে যায়। স্মার্টফোনের এসব ব্যাকটেরিয়া থেকে সংক্রমণ বা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি থাকে।

ঘুম কমে যায়: অতিরিক্ত স্মার্টফোন ব্যবহারের ফলে শিশুর নিয়মিত ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। এটি শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশকে ব্যাহত করে। ভিডিও গেম খেললে শিশুদের শরীরে এক ধরনের হরমোন নিঃসরণ হয়। এতে শিশু সবকিছু নিয়েই উত্তেজিত হয়ে পড়ে।

চোখের জ্যোতি শ্রবণশক্তি কমে: যুক্তরাজ্যের চক্ষু বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে জানিয়েছেন, মুঠোফোনের অতিরিক্ত ব্যবহারে শিশুর দৃষ্টি শক্তি ও জ্যোতি কমিয়ে দেয়। এতে করে মায়োপিয়া বা ক্ষীণ দৃষ্টির সমস্যা দেখা দিতে পারে। স্মার্টফোন ব্যবহারকারীরা সাধারণত চোখ থেকে ৩০ সেন্টিমিটার দূরত্ব রেখে তা ব্যবহার করেন। এমনকি হেডফোন ব্যবহার করে উচ্চশব্দে গান শুনলে কানের ভিতরের কোষগুলো ক্ষতিগ্রস্থ হয়। একসময় কানের স্থায়ী সমস্যা দেখা দেয়।

 

তথ্যসূত্র: হেলথ টক।

০৮ মে ২০২৩, ০৭:০৭পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।