• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

স্বাস্থ্যকর ইফতার ’ যেমন হবে, যেসব খাবারে ‘না

স্বাস্থ্যকর ইফতার ’ যেমন হবে, যেসব খাবারে ‘না

প্রতিকী ছবি

ফিচার ডেস্ক

রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের মাস রমজান। ধর্মপ্রাণ মুসলমান এই মাসে সিয়াম পালন করেন। মহিমান্বিত এই মাসে মুসলমানের খাদ্যাভ্যাস ও রুটিনে ব্যাপক পরিবর্তন আসে। সারাদিন পানাহার থেকে বিরত থাকা হয়। এতে অনেকেই দুর্বল হয়ে পড়েন। তবে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় মুমীন মুসলমান যাবতীয় পানাহার ও পাপাচার থেকে নিজেকে বিরত রাখে।

চিকিৎসা গবেষকরা বলছেন, প্রাপ্তবয়স্ক একজন মানুষের দৈনিক প্রায় ২০০০-২৫০০ ক্যালোরি সমপরিমাণ খাবার গ্রহণ করা প্রয়োজন। তবে রোজার সময় ১০০০-১৫০০ ক্যালোরি খাবার গ্রহণই যথেষ্ট। কারণ রোজায় অল্প খাবার গ্রহণ করলেই অটোফেজি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শরীরের ক্ষতিকর কোষসমূহ পরিষ্কার হয়।

তাই অন্যান্য সময় যে পরিমাণ খাবার খাওয়া হয়, রোজায় তার চেয়ে এক তৃতীয়াংশ কম খাওয়া উচিত। পুষ্টিবিদরা বলছেন, সারাদিন রোজা রাখার পর ইফতার হওয়া উচিত স্বাস্থ্যসম্মত ও পুষ্টিকর খাবার দিয়ে। ভাজাপোড়া ও তৈলাক্ত খাবার রোজাদারের শরীরে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে।

ইফতারে যেমন হবে খাবার

খেজুর: খেজুর দিয়ে ইফতার করা সুন্নত। খেজুর অত্যন্ত পুষ্টিগুণসম্পন্ন একটি খাবার। খেজুর আকারে ছোট হলেও এতে রয়েছে প্রায় সব ধরণের খাদ্য ও পুষ্টি উপাদান। এসব খনিজ উপাদান দেহের পুষ্টির ঘাটতি পুরণ করে সহজেই।

তাজা ফল: ইফতারে কলা, পেয়ারা, আপেল, তরমুজ, আঙুর রাখার চেষ্টা করুন। কলা ও পেয়ারা বেশ সস্তা। এসব ফল সহজেই কেনা যায়। কলা ও পেয়ারা অত্যন্ত আয়রন সমৃদ্ধ ফল।

দই: ইফতারিতে দই বা দই চিড়া খেতে পারেন। এটি আমাদের দেশে বেশ জনপ্রিয় ইফতার আইটেম। দই হজমক্রিয়া সচল রাখে। এ ছাড়া অ্যাসিডিটি নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করে দই। প্রতি ১০০ গ্রাম দইয়ে ২৫৭ ক্যালরি শক্তি থাকে।

ছোলা ও বুট: বাংলাদেশে ইফতার মানেই যেন ভাজাপোড়া, বেগুনি, পেঁয়াজু আর তৈলাক্ত খাবার। কিন্তু এই অভ্যাস বদলানো উচিত। ইফতারে আপনি ছোলা ও বুট রাখতে পারেন। কিন্তু ভাজাপোড়া ও অন্যান্য তৈলাক্ত খাবার পরিহার করুন। প্রতি ৫০ গ্রাম ছোলা ও বুটে রয়েছে প্রায় ১৮০ ক্যালোরি খাদ্যশক্তি।

সরবত: সারাদিন রোজা রাখার পর ইফতারে সরবত হলে তো কথায় নেই। তবে সরবত ঘরে তৈরির চেষ্টা করুন। ডাবের পানি, ইসুবগুলের ভুসি, লেবুর শরবত বাড়িতে তৈরি করুন। বাজারে বা বাইরের রঙিন সরবত দেখে প্রলুব্ধ হবেন না। ঘরে তৈরি সরবত পানিশূন্যতা পুরণের পাশাপাশি সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করে। এতে ঝুঁকি থাকে না।

ইফতারে যেসব খাবারে ‘না’

• অতিরিক্ত তৈলাক্ত খাবার কিংবা ডুবো তেলে ভাজা খাবার যেমন- পেঁয়াজু, বেগুনি, আলুর চপ, বেগুনি, চিকেন ফ্রাই, জিলাপি ইত্যাদি পরিহার করুন। এই খাবারগুলো গ্যাস্ট্রিকসহ নানা শারীরিক সমস্যা তৈরি করে।

• একসঙ্গে অনেক বেশি খাবার খেয়ে ফেলবেন না। টক, ঝাল ও মিষ্টি জাতীয় খাবার একসঙ্গে খাবেন না। টকজাতীয় ফল ইফতারে বেশি খেলে গ্যাস্টিক বাড়তে পারে।

• ইফতারে টমেটো পরিহার করুন। কারণ এতে থাকা সাইট্রিক অ্যাসিড ও ম্যালিক অ্যাসিড পাকস্থলীতে জ্বালাপোড়া ভাব তৈরি করে।

• অতিরিক্ত ঝাল খাবার ইফতারে খাবেন না। ঝাল খাবার পাকস্থলীতে অ্যাসিডিটি বাড়িয়ে দেয়।

• গরম খাবার যেমন চা, কফি ইত্যাদি ইফতারে রাখবেন না। রোজার সময় চা, কফি পান না করায় উত্তম।

• ইফতারে অতিরিক্ত চিনিযুক্ত শরবত অথবা কৃত্রিম জুস খাওয়া উচিত নয়। একই ভাবে ইফতারে একবারে বেশি পানি পান করাও নিরাপদ নয়।

 

তথ্যসূত্র: হেলদি মুসলিমস ও নেসলে।

২৫ মার্চ ২০২৩, ০৬:১০পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।