দ্বীপের মালা সাগরের রাণী যে দেশ
![দ্বীপের মালা সাগরের রাণী যে দেশ দ্বীপের মালা সাগরের রাণী যে দেশ](https://amrai-bangladesh.com/public/np-uploads/content/images/2021April/maldives-20240324131049.jpg)
ছবি- সংগৃহিত
দক্ষিণ এশিয়ার ছোট্ট দ্বীপ রাষ্ট্র ‘মালদ্বীপ’। আয়তনে ছোট হলেও মালদ্বীপ বৈশ্বিক বড় বড় সংস্থা ও সংগঠনের সক্রিয় সদস্য। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যে ভরা মালদ্বীপের অর্থনীতি পর্যটন নির্ভর। তবে মৎস আহরণ ও রপ্তানি দেশটির উদীয়মান অর্থনৈতিক খাত হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। মালদ্বীপের রাজধানী ‘মালে’। মালদ্বীপ দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক জোট সার্কের সদস্য।
মালদ্বীপ কোথায়
বিশ্বের সবচেয়ে নিচু দেশ এটি। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে মালদ্বীপের সর্বোচ্চ উচ্চতা মাত্র দুই দশমিক তিন মিটার এবং গড় উচ্চতা মাত্র এক দশমিক পাঁচ মিটার। ভারত মহাসাগরে দেশটির অবস্থান। প্রায় ১ হাজার দুই শ’র বেশি ছোট ছোট দ্বীপ নিয়ে মালদ্বীপ গঠিত। শ্রীলঙ্কা হতে আনুমানিক ৪০০ মাইল দক্ষিণ পশ্চিমে ১০১০টি প্রবাল দ্বীপ নিয়ে গঠিত।
মরক্কান পরিব্রাজক ইবনে বতুতা ও অন্যান্য আরব পর্যটকেরা এই অঞ্চলকে 'মহাল দিবিয়াত' নামে উল্লেখ করেছেন। আরবীতে মহাল অর্থ প্রাসাদ। বর্তমানে এই নামটিই মালদ্বীপের রাষ্ট্রীয় প্রতীকে লেখা হয়।
মালদ্বীপ হয়ে ওঠার গল্প
১৩৪৩ খ্রিস্টাব্দে বিখ্যাত পরিব্রাজক ইবনে বতুতা মালদ্বীপ আসেন। এরও আগে সংস্কৃত ভাষায় লেখা বিভিন্ন গ্রন্থে মালদ্বীপকে লক্ষদ্বীপ বলা হয়। এর অর্থ লক্ষ দ্বীপের সমাহার। আসলে মালদ্বীপ লক্ষ দ্বীপের সমাহার নয়; রয়েছে ২৬টি অ্যাটোল। প্রাচীন শ্রীলঙ্কার ঐতিহাসিক গ্রন্থে মালদ্বীপকে বলা হয়েছে মহিলা দ্বীপ। সম্রাট অশোকের সময়েই অর্থাৎ সেই খ্রিষ্ট ৩য় শতকেই কতিপয় বৌদ্ধ ভিক্ষু নাকি গিয়েছিল লক্ষদ্বীপে। দ্বাদশ শতকে মুসলিমরা ওই দ্বীপে মুসলিম সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা করে। দ্বাদশ শতক। এরপর প্রায় ৮০০ শতক ধরে ৯২ জন মুসলিম সুলতান মালদ্বীপ শাসন করেন।
মালদ্বীপ নজরে আসে যেভাবে
→ ১৫০৭ সালে পর্তুগীজ পর্যটক দম লোরেনকো দে আলামেইদা মালদ্বীপে পৌঁছায়।
→ ১৫৭৩ খ্রিষ্টাব্দে মালদ্বীপের সুলতান ছিলেন থাকুরুফানি আল-আযম। তিনি পর্তুগিজদের মালদ্বীপ থেকে বহিস্কার করেন।
→ সুলতান থাকুরুফানি আল-আযম মালদ্বীপের নবযুগের দ্রষ্টা। তিনিই নতুন লেখনির প্রচলন করেন। গড়ে তুলেন সামরিক বাহিনী।
→ ১৮১৫ সালে ব্রিটিশরা শ্রীলঙ্কা দখল করে। এরপর মালদ্বীপও তারা দখলে নেয়। ১৯৫৩ সালে সালতানাত এর অবসান হয় ও মালদ্বীপ হয়ে ওঠে রিপাবলিক।
মালদ্বীপে যা আছে
> দেশটিতে অমুসলিমদের কোনো ভোটাধিকার নেই।
> দেশটিতে ৫০ সদস্যের একটি মজলিসে সুরা আছে।
> দেশটিতে সর্বপ্রথম রাজনৈতিক দল গড়ে ওঠে ২০০৫ সালে।
> সমুদ্রবেষ্টিত হওয়া সত্ত্বেও মালদ্বীপের কোনো নৌ বাহিনী নেই।
> মালদ্বীপের মোট আয়ের ২৮ শতাংশ এবং মোট বৈদেশিক আয়ের ৬০ শতাংশই আসে পর্যটন শিল্প থেকে।
> শতভাগ মুসলমান নাগরিকদের দেশ মালদ্বীপ।
> সিংহলি, আরবি ও ইংরেজি মালদ্বীপে ব্যবহার হয়।
> দেশটির একমাত্র বিমানবন্দর ইব্রাহিম নাসির আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর।
আধুনিক পর্যটন আকর্ষণের প্রাণকেন্দ্র
— মালদ্বীপে রয়েছে আধুনিক পর্যটনের নানা স্থাপনা। দ্বীপগুলোতে রয়েছে ছোট ছোট অত্যাধুনিক সুবিধা সম্বলিত কটেজ।
— পর্যটকরা এসব কটেজে সময় উপভোগ করেন।
— মালদ্বীপে রয়েছে সমুদ্রবিলাসের দারুণ সুযোগ।
— প্যারাসিলিং, ওয়াটার স্কেটিং ও ফিশিংয়ের সুযোগ রয়েছে পর্যটকদের জন্য।
— এখানে রয়েছে আন্ডারওয়াটার মিউজিয়াম, খাবার হোটেল ও বিনোদন কেন্দ্র।
— সমুদ্রতলে গড়ে তোলা হয়েছে অ্যাকুরিয়াম।