৩৮ জেলার নদ-নদীতে চলবে বিশেষ অভিযান
মা ইলিশ রক্ষায় মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা
ফাইল ছবি
চলতি বছরে ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুম শুরু হয়েছে। এজন্য মা ইলিশ রক্ষায় মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে সরকার। রবিবার মধ্যরাত থেকে নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শুরু হয়েছে। ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে। নিষেধাজ্ঞাকালীন ইলিশের অভয়াশ্রম বা নির্ধারিত নদী ও সংলগ্ন এলাকায় যেকোনো ধরণের মাছ শিকার বন্ধ থাকবে। মা ইলিশ রক্ষায় দেশের ৩৮টি জেলায় চলবে সমন্বিত অভিযান।
রবিবার সচিবালয়ে মৎস ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে মৎস ও প্রাণিসম্পদ সচিব রওনক মাহমুদের সভাপতিত্বে এ সংক্রান্ত এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা জানানো হয়।
সভায় মৎস ও প্রাণিসম্পদ সচিব বলেন, দেশের ৩৮টি জেলার প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন, স্থানীয় মৎস্য দপ্তর, বাংলাদেশ পুলিশ, র্যাব, বাংলাদেশ নৌবাহিনী, বাংলাদেশ বিমান বাহিনী, বাংলাদেশ কোস্টগার্ড, বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সমন্বিত টিম মা ইলিশ রক্ষায় অভিযান পরিচালনা করবে।
এদিকে মৎস ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা জেলাগুলো হলো- ঢাকা, মুন্সীগঞ্জ, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, মানিকগঞ্জ, রাজবাড়ী, ফরিদপুর, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, বরগুনা, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, চাঁদপুর, ল²ীপুর, ফেনী, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ও বাগেরহাট, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, কিশোরগঞ্জ, টাঙ্গাইল, গাজীপুর, জামালপুর, রাজশাহী, নাটোর, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, খুলনা, কুষ্টিয়া ও নড়াইল। এসব জেলার নদ-নদী, মোহনা ও সাগরে ইলিশসহ সকল প্রকার মাছ ধরা ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।
অপরদিকে রবিবারের মতবিনিময় সভায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব রওনক মাহমুদ আরও বলেন, সম্মিলিত প্রচেষ্টায় দেশে মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইলিশ মাছকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়েছে। মৎস্য বিজ্ঞানী ও বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে ৩ অক্টোবর মধ্যরাত থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত ইলিশের প্রজনন সময়ে নদ-নদীতে সকল প্রকার মাছ ধরা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, নিষেধাজ্ঞাকালীন ইলিশ আহরণ বন্ধ থাকায় এ বছর ৫ লাখ ৫৫ হাজার ৯৪৪টি জেলে পরিবারের জন্য ১১ হাজার ১১৮ দশমিক ৮৮ টন ভিজিএফ চাল বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। যাতে ইলিশ ধরা বন্ধ থাকলেও জেলে পরিবারগুলো কষ্টে না থাকে। মাছ ধরার নিষিদ্ধ সময়ে কেউ যাতে নদীতে মাছ শিকার করতে না পারে সেজন্য কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনীর সার্বক্ষনিক টহল নিশ্চিত করা হবে।
জানা গেছে, ইলিশ সম্পদ সংরক্ষণে ‘প্রটেকশন এন্ড কনজারভেশন অব ফিশ অ্যাক্ট, ১৯৫০’ এর অধীন প্রণীত ‘প্রটেকশন এন্ড কনজারভেশন অব ফিশ রুলস, ১৯৮৫’ অনুযায়ী ৪ থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত মোট ২২ দিন সারাদেশে ইলিশ মাছ আহরণ, পরিবহন, মজুদ, বাজারজাতকরণ, ক্রয়-বিক্রয় ও বিনিময় নিষিদ্ধ করা হয়েছে। গত ২৬ সেপ্টেম্বর এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, নিষেধাজ্ঞাকালীন ২২ দিন সারাদেশে ইলিশ আহরণ, পরিবহণ, মজুদ, বাজারজাতকরণ, ক্রয়-বিক্রয় ও বিনিময় দন্ডনীয় অপরাধ বলে বিবেচিত হবে। যদি কেউ আইন লঙ্ঘন করে নিষেধাজ্ঞাকালে নদ-নদীতে মাছ শিকার, আহরণ করে বা তা পরিবহন বা বাজারজাতকরণ কিংবা মজুদ করে, তাহলে আইন অমান্যকারী কমপক্ষে ১ থেকে সর্বোচ্চ ২ বছরের কারাদণ্ড, অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবে।
এবি/এসএন
