পুষ্টিতে সেরা কচুশাক
প্রতিকী ছবি
কচুশাক। পুষ্টিগুণে সেরা একটি খাদ্য উপাদান। বাংলাদেশসহ দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অধিকাংশ দেশে কচুশাক বেশ জনপ্রিয়। আমাদের দেশে কচুশাকের বাড়তি কদর রয়েছে। কচু ও কচুর শাক পুষ্টিগুণে অনন্য। এতে রয়েছে নানা ধরণের প্রয়োজনীয় খনিজ ও ভিটামিন।
ইলিশের মাথা দিয়ে কচুশাক, পেঁয়াজ-মরিচ দিয়ে ভর্তা এবং রুটির সঙ্গে কচুশাকের ভর্তা খাওয়ার প্রচলন আমাদের দেশে খুব চোখে পড়ে। বিশেষ করে শীতের সময় শহরের অলিগলিতেও কচুশাকের ভর্তা ও রুটির দোকান বসতে দেখা যায়।
‘আমরাই বাংলাদেশ’র পাঠকদের জন্য কচুশাকের অজানা কিছু তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। এক নজরে দেখে নিন-
কী আছে কচুশাকে
এতে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন ও খনিজ উপাদান। রাতকানা রোগের চিকিৎসায় কচুশাক বেশ কার্যকরি।
প্রতি ১০০ গ্রাম কচুশাকে রয়েছে
শর্করা ৬.৮ গ্রাম
প্রোটিন ৩.৯ গ্রাম
আয়রন ১০ মিলিগ্রাম
ভিটামিন বি১ বা থায়ামিন ০.২২ মিলিগ্রাম
ভিটামিন বি২ বা রাইবোফ্লেবিন ০.২৬ মিলিগ্রাম
ভিটামিন সি ১২ মিলিগ্রাম
চর্বি ১.৫ গ্রাম
ক্যালসিয়াম ২২৭ মিলিগ্রাম এবং
ক্যালরি ৫৬ কিলোক্যালরি।
উপকারিতা
কুচশাকে রয়েছে নানা ধরণের উপকারী পুষ্টি উপাদান। উত্তম পুষ্টির প্রাকৃতিক উৎস হিসেবে কচুশাক সবার সেরা।
ক্যান্সার প্রতিরোধ করে : কচুশাকে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা ক্যান্সার প্রতিরোধে ব্যাপকভাবে সহায়তা করে। নিয়মিত কচুশাক খেলে কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে। যুক্তরাষ্ট্রের একদল গবেষক বলছেন, কচুশাক স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধে খুবই কার্যকরি।
দৃষ্টিশক্তি ঠিক রাখে : এতে রয়েছে পর্যাপ্ত ভিটামিন এ এবং অন্যান্য খনিজ উপাদান। যা আমাদের দৃষ্টিশক্তি ঠিক রাখতে সহায়তা করে। বিশেষ করে রাতকানা রোগ থেকে নিরাময়ের জন্য কচুশাকের বিকল্প নেই।
হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় : কচুশাকে রয়েছে স্যাপোনিনস, টেনিনস, কার্বোহাইড্রেট ও ফ্লাভোনয়েডের মতো খনিজ উপাদান। এসব উপাদান রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় : সহজলভ্য এই শাকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। যা আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে : শরীরে শর্করা বা কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ বেড়ে গেলে ডায়াবেটিস বেড়ে যায়। কিন্তু নিয়মিত কচুশাক খেলে দেহে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে থাকে। ফলে ডায়াবেটিসও থাকে নিয়ন্ত্রণে।
হজমশক্তি বৃদ্ধি করে : কচুশাকে রয়েছে প্রচুর প্রাকৃতিক আঁশ। এই আঁশ সমৃদ্ধ খাবার হজমক্রিয়া শক্তিশালী করে।
প্রদাহ কমায় : শরীরে প্রদাহ বা ক্ষত সারাতে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ও অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল উপাদান জরুরি। আর এই দুটি উপাদানই কচুশাকে প্রচুর পাওয়া যায়।
রক্তশূন্যতা দূর করে : আপনি যদি রক্তশূন্যতায় ভুগে থাকেন, তবে এখন থেকে নিয়মিত কচুশাক খাওয়া শুরু করুন। কারণ কচুশাকে থাকে আয়রন রক্তশূন্যতা দূর করে।
পরামর্শ
কচুশাক নিঃসন্দেহে একটি উপকারি খাদ্য উপাদান। কিন্তু যারা অ্যালার্জি ও চুলকানিতে ভুগছেন, তারা কচুশাক খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
এবি/এসএন