• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

পুষ্টি ভরা পেঁপে, খেতে হবে মেপে

পুষ্টি ভরা পেঁপে, খেতে হবে মেপে

প্রতিকী ছবি

ফিচার ডেস্ক

সহজলভ্য একটি ফলের নাম পেঁপে। এটি সবজি ও সালাদ হিসেবেও খাওয়া যায়। পেঁপে দিয়ে বিভিন্ন দেশে আঁচার তৈরি করা হয়। পুষ্টিগুণে ভরপুর পেঁপের রয়েছে নানা ভেষজ ওষুধি গুণাগুণ। সারা দেশেই কমবেশি পেঁপে পাওয়া যায়। শরীরের নানা রোগ নিয়ন্ত্রণ এবং রোগ নিরাময়ে পাকা ও কাচা পেঁপে খুবই উপকারী। তবে পেঁপে খাওয়ার ক্ষেত্রে আমাদের কিছু সতর্কতাও মেনে চলতে হবে।

পেঁপে আমাদের শরীর সুস্থ রাখতে কতটুকু দরকারি, পেঁপেতে কী কী পুষ্টিগুণ রয়েছে, এসব বিষয়ে ‘আমরাই বাংলাদেশ’র পাঠকদের জন্য আমাদের এবারের প্রতিবেদন।

যে উপাদানে ভরপুর পেঁপে : খাদ্য ও পুষ্টি গবেষকরা বলছেন, প্রতি ১০০ গ্রাম পেঁপেতে রয়েছে শর্করা ৭.২ গ্রাম, খাদ্যশক্তি ৩২ কিলোক্যালরি, ভিটামিন সি ৫৭ মিলিগ্রাম, সোডিয়াম ৬.০ মিলিগ্রাম, পটাশিয়াম ৬৯ মিলিগ্রাম, খনিজ ০.৫ মিলিগ্রাম এবং ফ্যাট ০.১ গ্রাম।

পুষ্টিবিদরা বলছেন, পেঁপেতে থাকা উপাদানগুলো দেহ সুস্থ রাখে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এতে প্রচুর পরিমাণে আঁশ রয়েছে। এছাড়া পেঁপেতে পর্যাপ্ত ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। এসব উপাদান রক্তনালীতে ক্ষতিকর কোলেস্টেরল জমতে বাধা প্রদান করে। ফলে উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগের ঝুঁকি কমে।

পেঁপের খাওয়ার উপকারিতা

নানা রোগ নিরাময়ে পেঁপে অত্যন্ত কার্যকরী এছাড়া আবহমান গ্রাম-বাংলায় ভেষজ ওষুধ হিসেবেও পেঁপের ব্যাপক ব্যবহার প্রচলিত রয়েছে। পেঁপের রস হজমের জন্য খুবই উপকারি। পোকামাকড়ের কামড় ও অল্প মাত্রার পোড়া ও ক্ষত নিরাময়েও পেঁপে খুব কার্যকরী।

আধুনিক বিজ্ঞান বলছে, বর্তমানে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে আছে নানা ধরণের অত্যাধুনিক কসমেটিকস সামগ্রী। নামিদামি ব্র্যান্ডের এসব কসমেটিকস তৈরির অন্যতম কাঁচামাল পেঁপে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে : জাপানের একদল পুষ্টিবিদ বলেছেন, পেঁপেতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। ফলে পেঁপে খেলে তা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।

রোগ নিরাময়ে পেঁপে : শত শত বছর ধরে নানা রোগ নিরাময়ে পেঁপের বহুবিধ ব্যবহার প্রচলিত রয়েছে। বিশেষ করে পেঁপে গাছের মূল ও ফুল কিডনি রোগ নিরাময়ে খুবই কার্যকরি। এছাড়া ব্রংকাইটিস (শ্বাসনালীর ভিতরে আবৃত ঝিল্লিতে ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণ) ও জন্ডিস নিরাময়ে পেঁপের জুড়ি মেলা ভার।

আথ্রারাইটিস নিরাময় : পেঁপেতে রয়েছে ‘কাইমোপ্যাপিন’ এনজাইম। যা ওসটিও আথ্রারাইটিস ও রিউমেটয়েড রোগ নিরাময়ে কার্যকরি।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে পেঁপে : কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে পেঁপে খুবই কার্যকরি। এতে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন ই, সি ও ফলেট। যা মল ত্যাগে সমস্যা বা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। কাঁচা পেঁপে অথবা কাঁচা পেঁপের জুস পরিপাকে সহায়তা করে। হজম শক্তি বৃদ্ধি পেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়।

দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করে : বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের দৃষ্টিশক্তি কমতে থাকে। কিন্তু আপনি যদি নিয়মিত পেঁপে খান, তবে আপনার দৃষ্টিশক্তি তাড়াতাড়ি নষ্ট হবে না। পেঁপেতে থাকা বিটা ক্যারোটিন আমাদের দৃষ্টিশক্তি উন্নত করে।

শরীরের যন্ত্রণা নিরাময়ে : পেঁপেতে রয়েছে কাইমোপ্যাপিন ও প্যাপিন এনজাইম। যা শরীরের যন্ত্রণা নিরাময়ে সহায়তা করে।

ব্রণ দূর করতে পেঁপে : বয়োঃসন্ধিকালে বা মুখমণ্ডলে ময়লা জমার কারণে যে ব্রণ সৃষ্টি হয়, তা দূর করতে পেঁপে খেতে পারেন। ব্রণ দূর করতে পেঁপের ভেতরের নরম অংশ মাস্কের মতো ব্যবহার করুন। ব্রণ দূর হবে।

পেঁপের অপকারিতা

অতিরিক্ত কোনো কিছুই ভালো ফল বয়ে আনে না। প্রতিটি জিনিসেরই ভালো ও মন্দ দিক থাকে। পেঁপের যেমন উপকারি, তেমনি তার কিছু অপকারি দিকও রয়েছে। চলুন দেখে নিই-

গর্ভবতীদের জন্য বিশেষ সতর্কতা : যারা গর্ভধারণ করেছেন, তারা ভুলেও পেঁপে খাবেন না। কাঁচা হোক আর পাকা হোক, কোনোভাবেই পেঁপে খাওয়া যাবে না। গর্ভকালীন পেঁপে খেলে গর্ভপাতের আশঙ্কা তৈরি হয়।

পেঁপের বিচি থেকে সাবধান : পাকা পেঁপে খাওয়ার সময় দু-একটা বিচি আমাদের খাওয়া হয়ে যায়। কিন্তু সাবধান থাকতে হবে, পেঁপের কালো বিচি শরীরের জন্য ক্ষতিকর।

পেঁপে রসে চর্ম রোগ : কাঁচা পেঁপের রস বিষাক্ত ও ক্ষতিকর। পেঁপের সাদা নির্যাস (কষ) শরীরে চুলকানিসহ চর্মরোগের সৃষ্টি করতে পারে।

 

এবি/এসএন

২৯ জুলাই ২০২১, ০৭:৫৯পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।