• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ত্বক ও চুলের যত্নে নারিকেল তেলের তেলসমাতি

ত্বক ও চুলের যত্নে নারিকেল তেলের তেলসমাতি

প্রতিকী ছবি

ফিচার ডেস্ক

ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড, মিয়ানমার, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশসহ দক্ষিণ ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া বিভিন্ন দেশে নারিকেল পাওয়া যায়। অন্যান্য দেশে কচি নারিকেল বা ডাব বেশি জনপ্রিয়। তবে বাংলাদেশ, ভারত, শ্রীলঙ্কাসহ কয়েকটি দেশে নারিকেলের তেল অধিক জনপ্রিয়। এছাড়া নারিকেলের সাদা রস বা নারকেলের দুধ বিভিন্ন খাবারে ব্যবহার করা হয়। এটি স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী একটি উপাদান। তবে নারিকেলের তেল সরাসরি খাওয়ার চেয়ে এটি বাহ্যিকভাবে বেশি ব্যবহার হয়।

‘আমরাই বাংলাদেশ’র পাঠকদের জন্য এই পর্বে নারকেল তেলের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা সম্পর্কে কিছু তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। চলুন দেখে নিই কি আছে নারকেল তেলে-

পরিচয়:
নারিকেল তেল বা নারিকেল তৈল হচ্ছে এক ধরনের তেল, যা নারিকেল থেকে সংগৃহীত। এটি মূলত নারিকেলের শাঁস থেকে নিষ্কাশন করা হয়। নারিকেল তেলের বিবিধ ব্যবহার রয়েছে। উচ্চ সম্পৃক্ত চর্বি উপাদানের কারণে এটা ধীরে ধীরে জারিত হয় এবং র‌্যান্সিডফিকেশান প্রতিরোধী হওয়ায় স্বাভাবিক তাপমাত্রায় ছয় মাস পর্যন্ত নষ্ট না হয়ে টিকে থাকে।

পুষ্টিগুণ:
জি নিউজ, আনন্দবাজার, হেলথ লাইন ও উইকিপিডিয়ার নিবন্ধে বলা হয়েছে, নারিকেল তেলে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন ই, ভিটামিন এ, ক্যালসিয়াম, ফ্যাট, পটাসিয়াম, ফসফরাস, জিংক, ম্যাগনেসিয়া, ভিটামিন কে এবং অন্যান্য খনিজ উপাদান।

প্রতি ১০০ গ্রাম নারিকেল তেলে রয়েছে-

ক্যালরি- ৩,৭৩০ কিলোক্যালরি,
ফ্যাট- ৯৯ গ্রাম,
ভিটামিন ই- ০.১১ মিলিগ্রাম,
ভিটামিন কে- ০.৬ ইউএ,
আয়রন- ০.০৫ মিলিগ্রাম,
কপার- ২০ মিলিগ্রাম,
পটাসিয়াম- ৩৫৬ মিলিগ্রাম,
কার্বোহাইড্রেট- ১৫ গ্রাম,
আমিষ- ৩.৩ গ্রাম।

উপকারিতা:
হেলথ লাইন, জি নিউজ, আনন্দবাজার, বাংলাদেশ কৃষি তথ্য সার্ভিস ও উইকিপিডিয়ার নিবন্ধে বলা হয়েছে, নারিকেল তেল-

ত্বকের সুরক্ষা দেয়: নারিকেল তেলে থাকা চর্বি, সোডিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ত্বকের র‌্যাশ দূর করতে সহায়তা করে। এছাড়া চুলকানি, হারপিস, দাউদ ও কুঁচকে যাওয়া ত্বক টানটান করতে নারিকেল তেলের জুড়ি মেলা ভার। নারিকেল তেলে থাকা পুষ্টি উপাদান ত্বকের আদ্রতা ধরে রাখতে সহায়তা করে।

চুল পড়া কমায়: চুল পড়া কমাতে ও চুলে পুষ্টি জোগাতে নারিকেল তেলের জুড়ি মেলা ভার। নিয়মিত নারিকেল তেল ব্যবহার করলে মাথার ত্বক উন্নত হয় এবং খুশকি দূর হয়।

হজমশক্তি বৃদ্ধি করে: আয়ুর্বেদ শাস্ত্র মতে, পেটের পীড়া ও বদ হজম নিরাময়ে নারিকেলর তেল ও নারিকেল খুবই কার্যকরী। যাদের গ্যাস্ট্রিক, পেট ফোলা, পেট ফাঁপা ও আলসারের সমস্যা রয়েছে, তারা নিয়মিত নারিকেল খেলে এসব রোগ থেকে নিরাময় পেতে পারেন।

কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময়: যারা কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগছেন, তারা নারিকেলের তেল বা নারিকেল খেতে পারেন। কারণ এতে রয়েছে ভিটামিন, মিনারেল ও অ্যামিউনো অ্যাসিড, যা কোষ্ঠকাঠিন্য ও পাইলস-ফিস্টুলার মতো কঠিন রোগ নিরাময় করে।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে: রক্তে ইনসুলিনের মাত্রা বেড়ে গেলে তা নিয়ন্ত্রণে নারিকেল বা নারিকেল তেল খুব কার্যকরী। শরীরে ইনসুলিন বেড়ে গেলে লোহিত রক্তকণিকার উপরিভাগে গ্লুকোজের স্তর পড়ে। ফলে সুগার বেড়ে ডায়াবেটিস বৃদ্ধি পায়।

শক্তি বৃদ্ধি করে: শারীরিক শক্তি বৃদ্ধিতে নারিকেল তেল খুব দারুণ একটি কার্যকরী ফল। এতে রয়েছে পর্যাপ্ত ক্যালরি ও আমিষ। যা শারীরিক শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়: এইচআইভি এইডস, প্রস্টেট গ্ল্যান্ডের রোগ, ইউরিনাল ট্র্যাক ইনফেকশন ও ভ্যাজাইনাল ড্রাইনেসের সংক্রমণ রোধে নারকেল খুবই কার্যকরী। এছাড়া বাজারে এখন এক্সট্রা ভার্জিন নারিকেল তেল পাওয়া যায়, যা খাওয়া নিরাপদ।

হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়: নারিকেল তেলে থাকা প্রাকৃতিক পুষ্টি উপাদানগুলো রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সহায়তা করে। ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে।

রোগ নিরাময়ে নারকেল: জন্ডিস, হেপাটাইটিস বি, লিভারসহ অন্যান্য নানা রোগের চিকিৎসায় নারিকেলের ভেষজ ব্যবহার দেশে প্রচলিত রয়েছে। নারিকেলের দুধ বা সাদা জলীয় অংশ এসব রোগ নিরাময়ে ব্যবহার করা হয়।

পরামর্শ:
উচ্চমাত্রার সম্পৃক্ত চর্বির কারণে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য ও মানব সেবা অধিদপ্তর, যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন, আমেরিকান হার্ট এসোসিয়েশনের পুষ্টিবিদরা নারিকেল তেল খাওয়া কমানো বা পরিহার করার পরামর্শ দিয়েছেন।

তথ্যসূত্র: হেলথলাইন, এভরিডেহেলথ ডট কম, ডায়াবেটিস ডট কম ডট (ইউকে) ও উইকিপিডিয়া

 

এবি/এসএন

০২ ডিসেম্বর ২০২১, ০৫:২৮পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।