• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

পুষ্টিগুণে কিসমিসের তেলেসমাতি

পুষ্টিগুণে কিসমিসের তেলেসমাতি

প্রতিকী ছবি

ফিচার ডেস্ক

কিসমিসের সঙ্গে আমাদের অনেকেরই শৈশবের সুখস্মৃতি জড়িয়ে আছে। ছোটবেলায় হাতের মুঠোয় ভরে কিসমিস খায়নি, এমন মানুষ পাওয়া ভার। শুকনো এই ফলটি নানাভাবে আমরা খেতে পছন্দ করি। মিষ্টি, সেমাই, পিঠা, পায়েস, পোলাও-বিরিয়ানিসহ নানা ধরণের রান্নায় এটির ব্যবহার বহুল প্রচলিত। কিসমিস খাবারের স্বাদ যেমন বাড়িয়ে দেয়, তেমনি খাবারের মানও উন্নত করে।

এটি পুষ্টিগুণে অত্যন্ত উপকারি একটি উপাদান। ভারত, পাকিস্তান, ইরান, তুরস্ক, আফগানিস্তানসহ কয়েকটি দেশে এটি তৈরি হয়। মূলত আঙ্গুর ফল শুকিয়ে কিসমিস তৈরি করা হয়।

প্রিয় পাঠক, চলুন দেখে নেয়া যাক কিসমিসের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা সমূহ।

পরিচয়

কিশমিশ বা কিসমিস হলো শুকনো আঙ্গুর। এটিকে ইংরেজিতে বলা হয় রেইসিন। প্রাচীনকাল থেকে শক্তি বা ক্যালরির চমৎকার উৎস হিসেবে কিসমিসের ব্যবহার হয়ে আসছে। এটি তৈরি করা হয় সূর্যের তাপ অথবা মাইক্রোওয়েভ ওভেনের সাহায্যে। তাপের কারণে আঙ্গুরের ফ্রুক্টোজগুলো জমাট বেঁধে কিসমিসে পরিণত হয়। যা খেতে মিষ্টি ও সুস্বাদু।

পুষ্টিগুণ

ভারতীয় গণমাধ্যম জি নিউজ, এই সময় ও উইকিপিডিয়ায় প্রকাশিত নিবন্ধে বলা হয়েছে, কিসমিসে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন, খনিজ, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস, পলিফেনলসসহ অন্যান্য উপাদান। এটি দেহের শক্তি যোগায় এবং রক্ত উৎপাদনে সহায়তা করে। এতে রয়েছে ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ভিটামিন সি, ভিটামিন ই, ভিটামিন বি-সহ নানা ধরণের উপকারী পুষ্টি উপাদান।

প্রতি ১০০ গ্রাম বা ৩ দশমিক ৫ আউন্স কিসমিসে রয়েছে

ক্যালরি ১,২৫২ কিলোক্যালরি
শর্করা ৭৯.১৮ গ্রাম
চিনি ৫৯.১৯ গ্রাম
খাদ্য আঁশ ৩.৭ মিলিগ্রাম
চর্বি ০.৪৬ মিলিগ্রাম
প্রোটিন ৩.০৭ মিলিগ্রাম
ভিটামিন বি১ ০.১০৬ মিলিগ্রাম
ভিটামিন বি২ ০.১২৫ মিলিগ্রাম
ভিটামিন বি৩ ০.৭৬৬ মিলিগ্রাম
ভিটামিন বি৫ ০.০৯৫ মিলিগ্রাম
ভিটামিন বি৬ ০.১৭৪ মিলিগ্রাম
ভিটামিন সি ২.৩ মিলিগ্রাম
ভিটামিন ই ০.১২ মিলিগ্রাম
ভিটামিন কে ৩.৫ মিলিগ্রাম
ক্যালসিয়াম ৫০ মিলিগ্রাম
আয়রন ১.৮৮ মিলিগ্রাম
ম্যাগনেসিয়াম ৩২ মিলিগ্রাম
ম্যাঙ্গানিজ ০.২৯৯ মিলিগ্রাম
ফসফরাস ১০১ মিলিগ্রাম
পটাশিয়াম ৭৪৯ মিলিগ্রাম
সোডিয়াম ১১ মিলিগ্রাম এবং
জিংক ০.২২ মিলিগ্রাম।

উপকারিতা

২০১২ সালে অনুষ্ঠিত আমেরিকান কলেজ অফ কার্ডিওলজির ৬১ তম বার্ষিক বৈজ্ঞানিক অধিবেশনে প্রকাশিত তথ্যের বরাত দিয়ে উইকিপিডিয়ার তথ্য বলছে, কিসমিস-

কোষ্ঠ্যকাঠিন্য দূর করে : এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, যা শরীরের পরিপাকক্রিয়ায় উন্নতি ঘটায়। ফলে খাবার সহজে হজম হয় এবং কোষ্ঠ্যকাঠিন্য নিরাময় হয়।

ওজন বাড়ায় : যারা কোনোভাবেই ওজন বাড়াতে পারছেন না, তারা নিয়মিত কিসমিস খেতে পারেন। এতে রয়েছে কার্বহাইড্রেট ও চর্বি, যা স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় ওজন বাড়াতে সহায়তা করে।

ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায় : কিসমিসে রয়েছে ক্যাটেচিন নামক এক ধরনের অ্যান্টিওক্সিডেন্ট, যা দেহের ভেতরে থাকা ক্যান্সারের কোষগুলো ধ্বংস করে।

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে : কিসমিসে থাকা পটাশিয়াম রক্তের চাপ কমাতে সাহায্য করে। শরীরে থাকা উচ্চমাত্রার সোডিয়াম, রক্তচাপ বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ। কিসমিস সোডিয়ামের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় : এতে রয়েছে ভিটামিন ও খনিজ উপাদান। রয়েছে উচ্চ মাত্রায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস। এসব উপাদান দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।

হাড় মজবুত করে : কিসমিস ক্যালসিয়ামের দারুণ এক উৎস। কাজেই নিয়মিত কিসমিস খেলে হাড়ের স্বাস্থ্য উন্নত হয় এবং হাড় মজবুত হয়।

ঘুম ভালো হয় : কিসমিস নির্ঘূমতা দূর করে। এতে থাকা আয়রন ও খনিজ উপাদান মানসিক অবসাদ দূর করে ঘুমের জন্য মস্তিষ্ককে প্রস্তুত করে।

তথ্যসূত্র : জি নিউজ, এই সময়, উইকিপিডিয়া ও বাংলাদেশ কৃষি তথ্য সার্ভিস

 

এবি/এসএন/আরএ

১০ অক্টোবর ২০২১, ০৮:০৯পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।