মিষ্টি আলুর মিঠা পুষ্টি
প্রতিকী ছবি
‘মিষ্টি আলু’ বাংলাদেশে অত্যন্ত পরিচিত একটি খাদ্য। এটি খেতে মিষ্টি ও দেখতে রঙিন। পিঠা-পায়েস ও হালুয়া তৈরিসহ নানাভাবে মিষ্টি আলু খাওয়ার প্রচলন রয়েছে বাংলাদেশে। এটি পুষ্টিগুণে যেমন সেরা, ভেষজ গুণেও তেমন কার্যকরী। বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, চীন, নেপালসহ বিভিন্ন দেশে এই আলু পাওয়া যায়।
প্রিয় পাঠক, চলুন এক নজরে দেখে নেয়া যাক মিষ্টি আলুর পুষ্টিগুন ও উপকারিতা।
পরিচয়
মিষ্টি আলুর বৈজ্ঞানিক নাম Ipomoea batatas। এটি Convolvulaceae পরিবারের ও Pomoea গণের একটি লতানো উদ্ভিদ। এটি বেশি পাওয়া যায় ভারত, পাকিস্তান, চীন, নেপাল, ভুটান, আমেরিকা ও আফ্রিকা অঞ্চলে।
পুষ্টি উপাদান
কলকাতার জনপ্রিয় ম্যাগাজিন এই সময়-এ প্রকাশিত নিবন্ধে বলা হয়েছে, মিষ্টি আলু একটি সুষম ও পুষ্টিকর খাবার। এতে রয়েছে ভিটামিন সি, ভিটামিন বি, ভিটামিন ই, ভিটামিন এ, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, জিংক ও ম্যাঙ্গানিজ, পটাশিয়ামসহ নানা খনিজ উপাদান।
প্রতি ১০০ গ্রাম মিষ্টি আলুতে রয়েছে
ক্যালরি ৩৭৮ কিলোক্যালরি
কার্বোহাইড্রেট ২০.৭ গ্রাম
শ্বেতসার ৭.০৫ গ্রাম
সুগার ৬.৫ গ্রাম
চর্বি ০.১৫ গ্রাম
খাদ্য আঁশ ৩.৩ গ্রাম
উদ্ভিজ প্রোটিন ২ গ্রাম
ক্যালসিয়াম ২৭ মিলিগ্রাম
আয়রন ০.৬৯ মিলিগ্রাম
ম্যাগনেসিয়াম ২৭ মিলিগ্রাম
ম্যাঙ্গানিজ ০.৫ মিলিগ্রাম
ফসফরাস ৫৪ মিলিগ্রাম
পটাশিয়াম ৪৭৫ মিলিগ্রাম
সোডিয়াম ৩৬ মিলিগ্রাম এবং
জিংক ৩ শতাংশ।
উপকারিতা
উইকিপিডিয়া ও বাংলাদেশ কৃষি তথ্য সার্ভিসে প্রকাশিত তথ্য বলছে, মিষ্টি আলু-
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে : মিষ্টি আলুতে রয়েছে ভিটামিন সি, পটাশিয়াম ও জিংক। এসব উপাদান রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ভুমিকা রাখে।
হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় : এতে রয়েছে প্রচুর আঁশ, পটাশিয়াম, ভিটামিন সি ও ভিটামিন বি। যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। হার্টের কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে মিষ্টি আলু খুবই কার্যকরী।
ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে : আলুতে রয়েছে ফোলেট, যা ডিএনএ তৈরি ও সংস্কারে সহায়তা করে। ফলে শরীরে থাকা ক্যান্সারের কোষগুলো ধ্বংস হয়। তাই আলু খেলে ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে।
হজমশক্তি বাড়ায় : হজমের জন্য প্রয়োজন আঁশযুক্ত খাবার। মিষ্টি আলুতে রয়েছে পর্যাপ্ত আঁশ, যা খাদ্য পরিপাকে সহায়তা করে।
শক্তিবর্ধক : মিষ্টি আলুতে রয়েছে প্রচুর কার্বোহাইড্রেট, যা দেহের শক্তি বৃদ্ধিতে দ্রুত কাজ করে। এছাড়া এতে রয়েছে ভিটামিন ও মিনারেলস, যা খুবই উপকারী।
হাড়ের স্বাস্থ্য সুরক্ষা : মিষ্টি আলুতে রয়েছে আয়রন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও জিঙ্ক। এই সবগুলো উপাদান হাড়ের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় দারুণ ভূমিকা রাখে। তাই নিয়মিত মিষ্টি আলু খাওয়ার অভ্যাস আপনার হাড়কে মজবুত করবে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় : মিষ্টি আলুতে রয়েছে ভিটামিন এ এবং প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়।
ত্বকের সুরক্ষা : ত্বক টানটান ও মুখের বলিরেখা দূর করতে মিষ্টি আলুর জুড়ি মেলা ভার। এটি ত্বকের জন্য দারুণ উপকারী।
চুল পড়া কমায় : এতে রয়েছে ভিটামিন বি, ভিটামিন সি, জিংক, নিয়াসিন ও আয়রন। এসব উপাদান চুলের স্বাস্থ্য ঠিক রাখে। একই সাথে নতুন চুল গজাতেও সহায়তা করে।
পরামর্শ
মিষ্টি আলু খাওয়া স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো। তবে যারা হরমন পরিবর্তন, স্থুলতা, কিডনী ও ডায়াবেটিসে ভুগছেন, তারা মিষ্টি আলু খাওয়ার ব্যাপারে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
তথ্যসূত্র : এই সময় (ম্যাগাজিন), বাংলাদেশ কৃষি তথ্য সার্ভিস ও উইকিপিডিয়া।
এবি/এসএন/আরএ