• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

অজানা পুষ্টিগুণে ফলের সেরা ‘আতা’

অজানা পুষ্টিগুণে ফলের সেরা ‘আতা’

প্রতিকী ছবি

ফিচার ডেস্ক

আমাদের দেশে অত্যন্ত পরিচিত একটি ফল ‘আতা’। এটি খেতে যেমন সুস্বাদু, পুষ্টিগুণেও তেমন সেরা। গ্রামাঞ্চলে ফলটি বেশি পাওয়া যায়। আতা ফল সুস্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। অন্য সব ফলের চেয়ে পুষ্টিগুণে মোটেও পিছিয়ে নেই। আতার আরেক নাম ‘মেওয়া’। এনিয়ে একটি প্রবাদও রয়েছে ‘সবরে মেওয়া ফলে’। কাজেই মেওয়া বা আতা ফল যে অনন্য সাধারণ একটি ফল তা বোঝায় যাচ্ছে।

প্রিয় পাঠক, আর দেরি নয়, চলুন জেনে নেয়া যাক আতা ফলের গুণাগুণ।

পরিচয়

আতা হল অ্যানোনেসি (Annonaceae) পরিবারভুক্ত এক ধরণের যৌগিক ফল। এটি শরিফা ও মেওয়া নামেও পরিচিত। এই ফলের ভিতরে ছোট ছোট কোষ থাকে। রসালো ও মিষ্টি স্বাদের আতা ফলের আদি উৎপত্তি ভারতে। এটি বাংলাদেশ, ভারত, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, যুক্তরাষ্ট্র, থাইল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন দেশে পাওয়া যায়। একে ইংরেজিতে 'কাস্টার্ড অ্যাপল', 'সুগার অ্যাপল', 'সুগার পাইন এপল' বা 'সুইটসপ' বলা হয়।

পুষ্টিগুণ

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জি নিউজে প্রকাশিত নিবন্ধে বলা হয়েছে, আতা ফলের রয়েছে নানা ভেষজ গুণাগুণ। এর শাঁস বলবৃদ্ধিকারক, বাত-পিত্তনাশক ও বমনরোধক। আতা ফলে রয়েছে, ক্যালরি, আঁশ, প্রোটিন, শর্করা, আয়রন, ভিটামিন সি, ভিটামিন বি, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, পটাশিয়ামসহ নানা খনিজ উপাদান।

প্রতি ১০০ গ্রাম আতা ফলে রয়েছে

শর্করা ২৫ গ্রাম
জলীয় অংশ ৭২ গ্রাম
প্রোটিন ১.৭ গ্রাম
ভিটামিন এ ৩৩ আইইউ
ভিটামিন সি ১৯২ মিলিগ্রাম
থিয়ামিন ০.১ মিলিগ্রাম
রিবোফ্লাবিন ০.১ মিলিগ্রাম
নিয়াসিন ০.৫ মিলিগ্রাম
প্যানটোথেনিক অ্যাসিড ০.১ মিলিগ্রাম
ক্যালসিয়াম ৩০ মিলিগ্রাম
আয়রন ০.৭ মিলিগ্রাম
ম্যাগনেসিয়াম ১৮ মিলিগ্রাম
ফসফরাস ২১ মিলিগ্রাম
পটাশিয়াম ৩৮২ মিলিগ্রাম এবং
সোডিয়াম ৪ মিলিগ্রাম।

উপকারিতা

জি নিউজ ও বাংলাদেশ কৃষি তথ্য সার্ভিসের নিবন্ধে বলা হয়েছে, আতা ফল-

হজমশক্তি বৃদ্ধি করে : আতা ফলে রয়েছে প্রচুর খাদ্য আঁশ, যা হজমশক্তি বৃদ্ধিতে কার্যকরী ভুমিকা পালন করে। এটি পেটের সমস্যা ও বদহজম থেকে মুক্তি দেয়।

দৃষ্টিশক্তি বাড়ায় : এই ফলে রয়েছে রিবোফ্লাভিন ও ভিটামিন সি, যা দৃষ্টিশক্তি উন্নত করতে বিশেষভাবে সহায়তা করে। যারা চোখের সমস্যায় ভুগছেন, তারা নিয়মিত আতা খাওয়ার চেষ্টা করুন।

আমাশয় রোধ করে : আতা গাছের মূল ও মূলের ছাল মধুর সঙ্গে মিশিয়ে খেলে আমাশয় নিরাময় হয়। এছাড়া আতা ফল খেলেও আমাশয় ও কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময় হয়।

হাড় মজবুত করে : এতে রয়েছে প্রচুর ক্যালসিয়াম, যা শরীরের হাড় গঠন করে এবং হাড় মজবুত করতে সহায়তা করে।

চুল ও ত্বক ভালো রাখে : আতা ফলে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা ত্বকের উজ্জ্বলতা ধরে রাখে। বার্ধক্যের ছাপ দূর করতে আতা ফলের জুড়ি মেলা ভার। একইভাবে এটি চুলের স্বাস্থ্য সুরক্ষায়ও ব্যাপক কার্যকরী।

রক্তপিত্তজনিত দাহরোগ নিরাময় করে : রক্তচাপের কারণে যাদের বমির সঙ্গে রক্ত আসে, তারা আতা ফল খেতে পারেন। কারণ এতে রয়েছে এমন কিছু ভেষজ গুণাগুণ, যা রক্ত বমি নিরাময় করে।

হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় : আতা ফলে রয়েছে প্রচুর ম্যাগনেসিয়াম। এই খনিজ উপাদানটি মাংসপেশির জড়তা দূর করে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।

তথ্যসূত্র : জি নিউজ, কৃষি তথ্য সার্ভিস (বিডি) ও উইকিপিডিয়া

 

এবি/এসএন/আরএ

০৫ অক্টোবর ২০২১, ০৭:৫৬পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।