• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

সুগন্ধি মসলা জিরা, পুষ্টিগুণেও সেরা

সুগন্ধি মসলা জিরা, পুষ্টিগুণেও সেরা

প্রতিকী ছবি

ফিচার ডেস্ক

রান্নায় ব্যবহৃত মসলাগুলোর মধ্যে জিরা অন্যতম। এটি প্রায় সব ধরণের রান্নায় ব্যবহার করা হয়। বিশেষ করে মসলাদার ও মুখরোচক ঝাঁঝালো স্বাদের রান্নায় জিরার বিকল্প নেই। স্বাদে ঝাঁঝ না থাকলেও জিরার সুগন্ধ খুবই মোহনীয় ও চমকপ্রদ। সুপ্রাচীনকাল থেকে মসলা হিসেবে জিরা খাওয়ার প্রচলন রয়েছে। এটি মসলা হলেও এতে রয়েছে নানা ধরণের পুষ্টিগুণ ও ভেষজ উপাদান। যা মানবদেহের জন্য অত্যন্ত উপকারী।

প্রিয় পাঠক, চলুন দেখে নেয়া যাক জিরার পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা সম্পর্কে

পরিচয়

উইকিপিডিয়া ও ভারতীয় জনপ্রিয় সংবাদপত্র আনন্দবাজারের নিবন্ধে বলা হয়েছে, জিরা উচ্চমাত্রার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ একটি মসলা। জিরার বৈজ্ঞানিক নাম Cuminum cyminum। এটি অ্যাপিয়াসি গোত্রের একটি পুষ্পক উদ্ভিদ। মধ্যপ্রাচ্য থেকে ভারতীয় উপমহাদেশ পর্যন্ত জিরা খাওয়ার প্রচলন রয়েছে। এছাড়া এসব অঞ্চলে এটি চাষও হচ্ছে। আধুনিক বিজ্ঞান বলছে, জিরা শুধু মসলা নয়, এটি উন্নতমানের ভেষজ উপাদান। সংস্কৃত ভাষায় এটিকে জীরক বলা হয়। প্রচলিত শব্দে এটিকে জিরে বলা হয়ে থাকে। জিরার ইংরেজি নাম কিউমিন। যা মূলত লাতিন শব্দ।

পুষ্টিগুণ

উইকিপিডিয়া ও আনন্দবাজারে প্রকাশিত পৃথক নিবন্ধে বলা হয়েছে, গবেষকরা বলছেন, জিরাতে রয়েছে প্রচুর অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। এছাড়া এতে রয়েছে প্রচুর আয়রন, ভিটামিন সি, ভিটামিন ই, ভিটামিন বি, ভিটামিন এ, অ্যান্টি-কার্সিনোজেনিক প্রপাটিজ, কার্বোহাইড্রেট, ম্যাগনেসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ ও মিনারেলসহ নানা ধরণের খনিজ উপাদান।

প্রতি ১০০ গ্রাম জিরায় আছে

ক্যালরি ৩৭৫ কিলোক্যালরি
শর্করা ৪৪.২৪ গ্রাম
চিনি ২.২৫ গ্রাম
আঁশ ১০.৫ গ্রাম
চর্বি ২২.২৭ গ্রাম
প্রোটিন ১৭.৮১ গ্রাম
ভিটামিন এ ১২৭০ আইইউ
ভিটামিন বি১ ০.৬২৮ মিলিগ্রাম
ভিটামিন বি২ ০.৩২৭ মিলিগ্রাম
ভিটামিন বি৩ ৪.৫৭৯ মিলিগ্রাম
ভিটামিন বি৬ ০.৪৩৫ মিলিগ্রাম
ভিটামিন বি৯ ১০ ইউজি
ভিটামিন সি ৭.৭ মিলিগ্রাম
ভিটামিন ই ৩.৩৩ মিলিগ্রাম
ভিটামিন কে ৫.৪ ইউজি
ক্যালসিয়াম ৯৩১ মিলিগ্রাম
আয়রন ৬৬.৩৬ মিলিগ্রাম
ম্যাগনেসিয়াম ৯৩১ মিলিগ্রাম
ম্যাঙ্গানিজ ৩.৩৩৩ মিলিগ্রাম
ফসফরাস ৪৯৯ মিলিগ্রাম
পটাশিয়াম ১৭৮৮ মিলিগ্রাম
সোডিয়াম ১৬৮ মিলিগ্রাম এবং
জিংক ৪.৮ মিলিগ্রাম।

উপকারিতা

খাদ্য গবেষক ও পুষ্টিবিদদের বরাত দিয়ে উইকিপিডিয়া ও আনন্দবাজারে প্রকাশিত পৃথক নিবন্ধে বলা হয়েছে, জিরা খেলে

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে : প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এক গ্লাস জিরা ভেজানো পানি পান করুন। উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকবে। এছাড়া এটি দেহে পটাশিয়ামের ঘাটতিও পুরণ করে।

ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায় : নিয়মিত জিরা মিশ্রিত পানি পান করলে ত্বক উজ্জ্বল হয়। এছাড়া এতে থাকা পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, সেলেনিয়াম, কপার ও ম্যাঙ্গানিজ ত্বকের অবাঞ্ছিত দাগ ও বলি রেখা দূর করে।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে : গবেষকরা বলছেন, নিয়মিত সকালে খালি পেটে জিরা ভেজানো পানি পান করলে দেহে ইনসুলিনের কর্মক্ষমতা বেড়ে যায় এবং শর্করার মাত্রা কমে। ফলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে।

লিভার স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে : নিয়মিত জিরা বা জিরা মিশ্রিত পানি খেলে শরীরের হজমশক্তি বৃদ্ধি পায়। ফলে লিভারে উপস্থিত ক্ষতিকর টক্সিকগুলো শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। এতে লিভারের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পেতে থাকে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় : জিরায় উপস্থিত বেশ কিছু উপকারি উপাদান শরীরে মিউকাসের মাত্রা বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করে। একই সঙ্গে এটি ফুসফুসের কার্যক্ষমতাও বৃদ্ধি করে। এছাড়া জিরা দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি করে।

ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে : যারা ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে চান, তারা নিয়মিত জিরা পানি বা জিরা খেতে পারেন। কারণ এতে রয়েছে প্রচুর আঁশ, যা দেহের মেটাবলিজম বৃদ্ধি করে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে। এতে হজমশক্তিও বৃদ্ধি পায়।

শক্তি বৃদ্ধি করে : দ্রুত দৈহিক শক্তি বৃদ্ধি করতে জিরার জুড়ি মেলা ভার। এতে রয়েছে এমন কিছু খনিজ উপাদান ও ভিটামিন, যা দেহে দ্রুত শক্তি সঞ্চার করে।

পরামর্শ

যারা ওজন কমানোর জন্য শুধু জিরা পানি বেছে নিতে চান, তারা অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। এছাড়া যারা কিডনী রোগসহ, অ্যালার্জি বা অন্যান্য জটিল রোগে আক্রান্ত, তারা জিরা পানি বা জিরা খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

 

এবি/এসএন/আরএ

২৯ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৮:১৮পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।