• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মিষ্টি কুমড়ার মিঠা গুণাগুণ

মিষ্টি কুমড়ার মিঠা গুণাগুণ

প্রতিকী ছবি

ফিচার ডেস্ক

মিষ্টি কুমড়া দারুণ একটি সবজি। পুষ্টিগুণে সেরা মিষ্টি কুমড়া আমাদের দেশে খুবই জনপ্রিয়। কাঁচা কিংবা পাকা উভয়ভাবেই মিষ্টি কুমড়া খাওয়া যায়। রান্না করে মিষ্টি কুমড়া খাওয়ার প্রচলন বেশি থাকলেও এটি ভর্তা করেও খাওয়া হয়। বর্তমানে দেশে নানা জাতের মিষ্টি কুমড়া চাষ হচ্ছে।

এটি গর্ভবতী নারী, শিশু ও বয়স্কদের জন্য বিশেষ উপকারী। মিষ্টি কুমড়ার হালুয়া বেশ জনপ্রিয়। এটি যেমন পুষ্টিগুণে ভরা, তেমনি রোগ নিরাময়েও মিষ্টি কুমড়ার জুড়ি মেলা ভার।

প্রিয় পাঠক, মিষ্টি কুমড়ার পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা নিয়ে এই পর্বে কিছু তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। চলুন দেখে নেয়া যাক-

পরিচয়

মিষ্টি কুমড়ার ইংরেজি নাম Sweet gourd বা Pumpkin। এর বৈজ্ঞানিক নাম Cucurbita moschata। মিষ্টি কুমড়ার উৎপত্তি মধ্য আমেরিকার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে। এটাকে কেউ কেউ মিষ্টি লাউ বলেও ডেকে থাকে। ভাজি, তরকারি ছাড়াও মিষ্টি কুমড়া ভর্তা করে খাওয়া যায়। এছাড়া এটি ডেজার্ট, স্যুপ ও সালাদ হিসেবেও খাওয়া হয়। বাংলাদেশের চরাঞ্চলের পলি মাটিতে মিষ্টি কুমড়া ভালো জন্মে। এছাড়া এটি দোঁ-আশ বা এঁটেল দোঁ-আশ মাটিতেও ভালো ফলন দেয়।

পুষ্টিগুণ

বাংলাদেশ কৃষি তথ্য সার্ভিস বলছে, মিষ্টি কুমড়ায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এ, ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স, ভিটামিন সি এবং ভিটামিন ই। এতে আরও আছে পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, আয়রন, জিঙ্ক, ফসফরাস, কপার, ক্যারটিনয়েডসহ অন্যান্য অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট।

প্রতি ১০০ গ্রাম মিষ্টি কুমড়ায় রয়েছে

ক্যালরি ২৬ কিলোক্যালরি
আমিষ ১ গ্রাম
শর্করা ৫ গ্রাম
আঁশ ০.৫ গ্রাম
চর্বি ০.১ গ্রাম
ভিটামিন এ ৭২০০ মাইক্রোগ্রাম
ভিটামিন সি ৯ মিলিগ্রাম
পটাশিয়াম ৩৪০ মিলিগ্রাম
ক্যালসিয়াম ২৪ মিলিগ্রাম
সোডিয়াম ১ মিলিগ্রাম
আয়রন ০.৮ মিলিগ্রাম
জিংক ০.৩ মিলিগ্রাম এবং
ফসফরাস ৪৪ মিলিগ্রাম।

উপকারিতা

পুষ্টিবিদদের বরাত দিয়ে বাংলাদেশ কৃষি তথ্য সার্ভিস বলছে, মিষ্টি কুমড়া খেলে

চোখ সুস্থ থাকে : মিষ্টি কুমড়ায় রয়েছে প্রচুর ভিটামিন ভিটামিন-এ বা বিটা ক্যারোটিন। এই উপাদানটি চোখের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় খুবই কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। চোখের ছানিপড়া রোধে মিষ্টি কুমড়া সহায়তা করে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে : মিষ্টি কুমড়ায় রয়েছে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এটি ক্যান্সার ও অ্যালঝেইমার রোগের ঝুঁকি কমায়।

ওজন কমায় : এই সবজিটি কম ক্যালরিযুক্ত ও প্রচুর আঁশসমৃদ্ধ। যে কারণে এটি ওজন কমাতে সহায়তা করে। কাজেই যারা ওজন কমাতে চান, তারা মিষ্টি কুমড়া খেতেই পারেন।

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে : মিষ্টি কুমড়ায় রয়েছে প্রচুর পটাশিয়াম, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। এছাড়া এতে রয়েছে ভিটামিন সি, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে।

হজমশক্তি বাড়ে : এতে রয়েছে প্রচুর আঁশ, যা হজমশক্তি বৃদ্ধিতে বিশেষভাবে সহায়তা করে। এছাড়া ডায়রিয়া নিয়ন্ত্রণ ও পরিপাক নালীর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় এটি অত্যন্ত কার্যকরী।

গর্ভবতীর স্বাস্থ্যঝুঁকি কমায় : গর্ভবতী নারীর রক্তস্বল্পতা রোধে মিষ্টি কুমড়ার জুড়ি মেলা ভার। অনাগত সন্তান ও গর্ভবর্তী নারীর সুস্বাস্থ্যের জন্য মিষ্টি কুমড়া খুবই উপকারী একটি সবজি।

অন্যান্য রোগ নিরাময় : মিষ্টি কুমড়া কিডনি, লিভার ও হৃদযন্ত্র সুস্থ রাখে। এছাড়া এটি বাতের ব্যথা প্রশমন করে। এটি হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।

তথ্যসূত্র : বাংলাদেশ কৃষি তথ্য সার্ভিস ও উইকিপিডিয়া

 

এবি/এসএন

২২ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৬:১০পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।