• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

জাদুকরি পুষ্টিগুণের সেরা উৎস ‘শসা’

জাদুকরি পুষ্টিগুণের সেরা উৎস ‘শসা’

প্রতিকী ছবি

ফিচার ডেস্ক

পুষ্টিগুণে সেরা একটি সবজি শসা। এটি মূলত এক ধরণের ফল। গ্রীষ্মকালীন সবজি শসার এখন ভরা মৌসুম। হাইব্রীড ও দেশীয় জাতের শসা এখন দেশের সব বাজারেই পাওয়া যাচ্ছে। এটি কাঁচা খাওয়ার প্রচলন আমাদের দেশে বেশি। তবে বিশ্বের অন্যান্য দেশে শসা দিয়ে আচার ও চাটনি বানানো হয়।

শসার সবচেয়ে বেশি ব্যবহার সালাদ হিসেবে। এটি সালাদের জন্য আদর্শ একটি উপাদান। আমরা হয়তো প্রায়ই শসা খাই। কিন্তু এর পুষ্টিগুণ সম্পর্কে আমাদের অনেকেরই অজানা। তাই এবারের পর্বে শসার পুষ্টিগুণ নিয়ে কিছু তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। চলুন, এক নজরে দেখে নিই-

পরিচয়

শসার বৈজ্ঞানিক নাম Cucumis sativus। এটি গোর্ড পরিবার কিউকারবিটাসের অন্তর্গত একটি উদ্ভিদ। শসা এক প্রকারের ফল। এর উৎপত্তি ভারতবর্ষে হলেও বর্তমানে পৃথিবীর প্রায় সব জায়গাতেই এটি চাষাবাদ হচ্ছে। এটি সাধারণত গরমের সময় বেশি পাওয়া যায়। বেশ কয়েক জাতের শসা রয়েছে। যা দেখতে সবুজ রঙের লম্বা আকারের হয়ে থাকে।

পুষ্টিগুণ

শসায় ক্যালোরির পরিমাণ কম থাকে এবং জলীয় অংশের পরিমাণ বেশি থাকে। খোসাসহ একটি কাঁচা শষায় প্রতি ১০০ গ্রামে রয়েছে ক্যালরি ২০ কিলোক্যালরি। ২০০৯ সালে গবেষকদের একটি আন্তর্জাতিক দল শসার জিনোম সিকোয়েন্স উদ্ভাবনের ঘোষণা করেন।

এতে রয়েছে খাদ্যআঁশ, জলীয় অংশ, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন সি, ভিটামিন ই, ভিটামিন বি, ফসফরাস, পটাসিয়াম ও সিলিকন।

উপকারিতা

হজমশক্তি বাড়ায় : শসায় উচ্চমাত্রায় পানি ও নিম্নমাত্রার ক্যালরিযুক্ত উপাদান রয়েছে। হজমশক্তি বাড়ায়।

ওজন কমায় : ওজন কমাতে শসা আদর্শ টনিক হিসেবে কাজ করে। যারা ওজন কমাতে চান, তারা সালাদ ও স্যুপ হিসেবে বেশি বেশি শসা খেতে পারেন।

পানিশূন্যতা দূর করে : শরীরের পানিশূন্যতা দূর করতে শসা খুবই কার্যকরী। পানি পাওয়া না গেলে শসা খেলে তৃষ্ণা নিবারন হয়। কারণ শসার ৯০ শতাংশই জলীয় অংশ।

গেঁটেবাত থেকে মুক্তি : এতে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে সিলিকা। গাজরের রসের সঙ্গে শসার রস মিশিয়ে খেলে দেহের ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা কমে আসে। ফলে গেঁটে বাত নিয়ন্ত্রণে থাকে।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে : যারা ডায়াবেটিসে ভুগছেন, তারা নিয়মিত শসা খান। কারণ এটি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ব্যাপক ভূমিকা রাখে। যা গবেষণায় প্রমাণিত।

বিষাক্ততা দূর করে : শসার মধ্যে যে পানি থাকে, তা আমাদের দেহের বর্জ্য ও বিষাক্ত পদার্থ অপসারণে অসাধারণভাবে কাজ করে। নিয়মিত শসা খেলে কিডনিতে জমে থাকা পাথর গলে যায়।

ভিটামিনের ঘাটতি পূরণ করে : আমাদের শরীরে ভিটামিনের ঘাটতি পূরণে শসা দারুণ সহায়তা করে। কারণ এতে রয়েছে ভিটামিন এ, বি ও সি। যা আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও দৈহিক শক্তি বৃদ্ধি করে।

চুল ও নখের যত্ন : শসায় রয়েছে খনিজ উপাদান সিলিকা। যা চুল ও নখের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় খুবই কার্যকরী।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয় : যারা কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগছেন, তারা নিয়মিত শসা খেতে পারেন। কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময় ও অ্যাসিডিটি নিয়ন্ত্রণে শসার জুড়ি মেলা ভার।

ক্যান্সার প্রতিরোধ করে : শসায় রয়েছে প্রচুর সিকোইসোলারিসিরেসিনোল, ল্যারিসিরেসিনোল ও পিনোরেসিনোল। এসব উপাদান জরায়ু, স্তন, মূত্রগ্রন্থিসহ বিভিন্ন ধরণের ক্যান্সার প্রতিরোধ করে।

ত্বকের যত্নে শসা : শসায় রয়েছে পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও সিলিকন। যা ত্বকের পরিচর্যায় বিশেষ ভূমিকা রাখে।

কিডনি সুস্থ রাখে : ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা গেলে কিডনী সুস্থ রাখা সম্ভব। আপনি যদি আপনার কিডনী সুস্থ রাখতে চান, তাহলে নিয়মিত শসা খান।

দেহের তাপ শোষক : শরীরে বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ তাপ শোষণ করতে শসা খুবই কার্যকরী। দেহ জ্বালাপোড়া কমাতে এটি সহায়তা করে।

তথ্যসূত্র : উইকিপিডিয়া, এআইএস ডট গভ ডটি বিডি ও বিডি হেলথ ডট ওআরজি

 

এবি/এসএন

২৬ আগস্ট ২০২১, ০৮:০১পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।