• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

দাঁত থাকতে দাঁতের যত্ন নিবেন যেভাবে

দাঁত থাকতে দাঁতের যত্ন নিবেন যেভাবে

প্রতিকী ছবি

ফিচার ডেস্ক

‘দাঁত থাকতে দাঁতের মর্ম বুঝা’-বহুল প্রচলিত বাংলা প্রবাদ। আলোচিত এই প্রবাদের অর্থ- সময় ও সুযোগ থাকতে সঠিক কাজ করা উচিত। মানুষ মাত্রই সৌন্দর্যের পূজারি। কথায় আছে, আগে দর্শনধারী, পরে গুণবিচারী। কাজেই, সৌন্দর্য মানুষের এক অনন্য গুণ। আপনি চাইলেই নিজেকে সুন্দর পরিপাটি করে রাখতে পারেন। এজন্য আপনার চেহারা কিংবা দেহের বর্ণ কোনো গুরুত্ব বহন করে না। বরং আপনি নিজেকে কতটুকু পরিপাটি করে সাজিয়ে গুছিয়ে রাখছেন, সেটিতেই আপনার সৌন্দর্যের প্রকাশ ঘটে।

আমাদের সৌন্দর্য প্রকাশে অন্যতম উপায় হচ্ছে হাসি। আর হাসির সৌন্দর্য নির্ভর করে দাঁতের সৌন্দর্যের ওপর। দাঁত সুন্দর হলে হাসি যেন মুক্তার মতো ঝলমলে হয়। প্রিয় পাঠক, আমাদের আজকের পর্বে হাসি কিংবা সৌন্দর্য নিয়ে কোনো আলোচনা নেই। বরং আমাদের আজকের বিষয় ‘দাঁত ও দাঁতের যত্ন’।

আমাদের অনেকেই দাঁতের নানা সমস্যায় ভুগে থাকেন। দাঁতের হলুদ, কালচে দাগ কিংবা ক্ষত, এরকম নানা সমস্যা রয়েছে। এসব সমস্যার সমাধান অবশ্য জটিলও নয়। আপনি চাইলে সহজেই এসব সমস্যার সমাধান করতে পারেন।

দাঁতের যত্নে করণীয়

ব্রাশ করুন নিয়মিত: সুস্থ দাঁতের জন্য নিয়মিত দুই বার ব্রাশ করুন। এক্ষেত্রে সকালে নাস্তার পরে ও রাতে খাবারের পরে ব্রাশ করার অভ্যাস গড়ে তুলুন। দুই মিনিট ভালো করে ব্রাশ করুন। আলতো করে সার্কুলার মোশনে দাঁত ব্রাশ করতে হবে। ব্রাশ ও পেস্ট বা পাউডার হতে হবে ভালো মানের। প্রতি ৩ থেকে ৫ মাস পর পর ব্রাশ পরিবর্তন করতে হবে।

সুতা দিয়ে দাঁত পরিষ্কার করুন: নিয়মিত ব্রাশ করার পাশাপাশি ফ্লস বা সুতা দিয়ে প্রতিটি দাঁতের ফাঁকের খাদ্যকণাগুলো বের করে ফেলুন। এতে দাঁতের ফাঁকে জমে থাকা খাদ্যকণা বের হয়ে যাবে।

জীবাণুনাশক দিয়ে কুলিকুচি করা: দাঁত সুন্দর ও সুস্থ রাখতে জীবাণুনাশক মাউথ ওয়াশ দিয়ে মুখ কুলিকুচি করুন। মাউথ ওয়াশ না থাকলে এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে এক চিমটি লবণ মিশিয়ে মুখ কুলিকুচি করুন। এতে দাঁতের ক্ষয় রোগ ও মাড়ির রোগ প্রতিরোধ করা যায়।

নিয়ম মেনে ব্রাশ করুন: এবড়ো থেবড়ো বা বাঁকা দাঁতে বেশি ময়লা জমে। তাই দীর্ঘসময় নিয়ে দাঁত ব্রাশ করতে হবে। খাবারের পরে অবশ্যই কুলি করা উচিত। কারণ দাঁতের ফাঁকে জমে থাকা চর্বি ও শর্করাযুক্ত খাবার দাঁতকে দ্রুত ক্ষয় করে ও দাঁতের মসৃণতা নষ্ট করে।

জিহ্বা পরিষ্কার করুন: ব্রাশ করার সময় জিহ্বা ভালোভাবে পরিষ্কার করুন। টাং স্ক্রেপার অথবা ব্রাশ দিয়ে জিহ্বা পরিষ্কার করতে পারেন।

মুখের ব্যায়াম করুন: শরীরের অন্যান্য অঙ্গের মতো দাঁতেরও ব্যায়াম আছে। মুখের ব্যায়াম করলে দাঁতেরও ব্যায়াম হয়। জাইলোকল জাতীয় চুইংগাম খেলে দাঁত ও মুখের মাসলের ব্যায়াম হয়।

ইনফেকশন এড়িয়ে চলুন: টুথপিক ব্যবহারে সতর্কতা অবলম্বন করুন। টুথপিক ব্যবহারে মাড়িতে ইনফেকশন হয়। কাজেই, ইনফেকশন এড়াতে কয়লা, ছাই, মাটি, গাছের ডাল ইত্যাদি ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন।

খারাপ অভ্যাস পরিত্যাগ করুন: পান, তামাক, জর্দা খাওয়ার মতো খারাপ অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে। এসব উপাদান দাঁতের স্বাস্থের জন্য ভালো নয়। অনেক সময় তামাক, জর্দা ও পান মুখে ঘা তৈরি করে।

ধূমপান ছাড়ুন: ধুমপান ছেড়ে দিন। সিগারেটের নিকোটিনের প্রভাবে দাঁতের এনামেল ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এতে দাঁতে কালো দাগ তৈরি হয়।

নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন: প্রতি ছয় মাস পরপর একবার ডেন্টিস্টের কাছে গিয়ে মুখ ও দাঁতের পরীক্ষা করুন। এতে আপনার দাঁত থাকবে সুরক্ষিত ও মজবুত।

খাবারের মাধ্যমে দাঁতের যত্ন

সুস্থ দাঁতের জন্য প্রয়োজন স্বাস্থ্যকর সতেজ খাবার। ক্যালসিয়াম, ভিটামিন সি, আয়োডিন, ফ্লোরিন ইত্যাদি দাঁতের জন্য অপরিহার্য। আর এসব উপাদান আমাদের নিত্যদিনের খাবারের মাঝেই রয়েছে। তাই, খাবার তালিকায় রাখুন-

ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার: ক্যালসিয়াম দাঁত ও মাড়িকে মজবুত করে। যেমন- দুধ, দই, পনির, কাঁটাযুক্ত ছোট মাছ, সয়াবিন, শিমের বিচি।

ভিটামিন সি জাতীয় খাবার: এই উপাদানটি মাড়ি থেকে রক্তপাত হওয়া কমাতে সাহায্য করে। যেমন- আমলকি, পেয়ারা, লেবুজাতীয় ফল, মাল্টা, টমেটো, কাঁচা মরিচ।

আয়োডিনযুক্ত খাবার: আয়োডিনযুক্ত খাবার হচ্ছে- বাঁধাকপি, ফুলকপি, সামুদ্রিক মাছ ও আয়োডিনযুক্ত লবণ।

ভিটামিন বি১ জাতীয় খাবার: এগুলো দাঁতের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। যেমন- আটা, ডিমের কুসুম, মাছ, চিনাবাদাম।

 

তথ্যসূত্র: হেলথ লাইন ও মেডিকেল নিউজ টুডে।

০২ আগস্ট ২০২২, ০৫:৪৫পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।