• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

পুষ্টিমান ও ভেষজগুণে অনন্য আমলকী

পুষ্টিমান ও ভেষজগুণে অনন্য আমলকী

প্রতিকী ছবি

ফিচার ডেস্ক

আমলকী ভেষজগুণ সমৃদ্ধ একটি ফল। মানব দেহের জন্য ফলটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। চুল পড়া রোধ ও ত্বকের যত্নে আমলকী বিশেষভাবে ব্যবহার করা হয়। সারা দেশেই আমলকী পাওয়া যায়। ভিটামিন সি আমলকীতে বেশি পরিমাণে পাওয়া যায়।

বাংলাদেশে আমলকী কাঁচা খাওয়ার প্রচলন বেশি। তবে অনেকেই আমলকী দিয়ে আচার ও চাটনি তৈরি করেন। আমলকীর আচার ও চাটনি খুবই সুস্বাদু ও পুষ্টিকর।

‘আমরা বাংলাদেশ’র প্রিয় পাঠক, চলুন একনজরে আমলকী সম্পর্কে কিছু তথ্য জেনে নিই-

পরিচয়

আমলকীর বৈজ্ঞানিক নাম Phyllanthus emblica। এটি ফাইলান্থাসি পরিবারের ফাইলান্থুস শ্রেণির এক প্রকার ভেষজ ফল। সংস্কৃত ভাষায় এর নাম ‘আমলক’। ইংরেজিতে এই ফলের নাম amla বা Indian gooseberry।

পুষ্ঠি উপাদান

এতে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন সি, ভিটামিন ই, ভিটামিন এ, আয়রন, ক্যালসিয়াম, কার্বোহাইড্রেট, জিংক, ফসফরাস, কপার, পটাশিয়াম ও খাদ্য আঁশ। এসব উপাদান মানব দেহের জন্য খুবই উপকারি।

প্রতি ১০০ গ্রাম আমলকীতে রয়েছে
আঁশ ৭ গ্রাম
কার্বোহাইড্রেট ১৫ গ্রাম
কপার ১২ শতাংশ
পটাসিয়াম ৬ শতাংশ
ভিটামিন সি ৪৬ শতাংশ
ভিটামিন বি৬ ৭ শতাংশ এবং
ম্যাঙ্গানিজ ৯ শতাংশ।

উপকারিতা

দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করে : দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে মধুর সঙ্গে এক চা চামচ আমলকি পাউডার মিশিয়ে খেয়ে নিন। এতে আপনার চোখের ছানি পড়া সমস্যা দ্রুত সেরে উঠবে।

জ্বর ও সংক্রমণ রোধ : সাধারণ জ্বরসহ যে কোনো ধরণের সংক্রমণ রোধে আমলকী খুবই কার্যকরি। ফোড়ন দেয়া আমলকীর রস পান করলে জ্বর দ্রুত কমে যায়।

দাঁত ও হাড়ের সুরক্ষা : দাঁত ও হাড়ের সুরক্ষায় সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম। যা আমলকীতে রয়েছে। এছাড়া ভিটামিন সি দাঁতের জন্য বিশেষভাবে উপকারি। দাঁতের ব্যথা ও ক্যাভিটি সংক্রমণ থেকে সুরক্ষিত থাকতে আমলকীর রসের সঙ্গে সামান্য কর্পূর মিশিয়ে মাড়িতে লাগান, উপকার পাবেন।

বমি ভাব দূর করে : অতিরিক্ত হেঁচকি উঠলে অথবা বমি বমি ভাব হলে আমলকীর রস ও মিশ্রি পানিতে মিশিয়ে নিয়মিত ২/৩ দিন পান করুন। অস্বস্তি ও বমি বমি ভাব কেটে যাবে।

ত্বকের উজ্জ্বলতা : দীর্ঘদিনের অযত্ন অবহেলায় মুখে যে কালো ছোপ ছোপ দাগ হয়েছে, তা দূর করতে চান? আমলকী বেটে পেস্ট বানিয়ে মুখে লাগান, দারুণ ফল পাবেন।

চুলের স্বাস্থ্য সুরক্ষা : চুলের যত্নে আমলকীর জুড়ি মেলা ভার। এতে থাকা অ্যামিনো অ্যাসিড ও প্রোটিন চুল পড়া রোধ করে। এছাড়া এটি মাথার ত্বকে ফাঙ্গাস তৈরিতে বাধা দেয়। নতুন চুল গজাতেও সহায়তা করে আমলকী।

কাশি ও কফ নিরাময় : অনেকেই দীর্ঘদিন ধরে কাশি ও কফ জমে থাকার সমস্যা ভুগে থাকেন। তারা নিয়মিত দুই চা চামচ আমলকীর রসের সঙ্গে মধু মিশিয়ে খেতে পারেন।

ঘা নিরাময় ও ক্যান্সার প্রতিরোধ করে : আমলকীতে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন সি। যা ঘা বা শরীরের ক্ষত নিরাময়ে খুবই কার্যকরি। এছাড়া এতে থাকা অন্যান্য খনিজ উপাদান ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে। কারণ আমলকীতে রয়েছে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে : নিয়মিত আমলকীর রস খাওয়ার অভ্যাস আপনার শরীরের কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রিত করবে। আর কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকা মানেই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা।

অ্যাজমা দূর করে : আমলকীতে রয়েছে পর্যাপ্ত অ্যামিনো অ্যাসিড। যা শ্বাস-প্রশ্বাস ও হৃদযন্ত্রের কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখে। এছাড়া এটি অ্যাজমাজনিত শ্বাসকষ্ট নিরাময়ে খুবই কার্যকরি।

লিভার সুস্থ রাখে : এতে রয়েছে প্রচুর আয়রন, ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস। যা লিভার সুস্থ রাখতে সহায়তা করে।

দৈহিক শক্তি বৃদ্ধি করে : আমলকীতে থাকা পুষ্টি উপাদান শারীরিক শক্তি বৃদ্ধিতে খুবই কার্যকরি।

রুচিবর্ধক : এই ফল আমাদের পাচকক্রিয়া উন্নত করে। ফলে দ্রুত খাবার হজম হয়। এছাড়া আমলকীর রস আমাদের মুখের রুচিবর্ধন করে।

তথ্যসূত্র : ফুড ডট এনডিটিভি ডট কম, হেলথলাইন ডট কম ও উইকিপিডিয়া

 

এবি/এসএন

১৯ আগস্ট ২০২১, ০৮:০৭পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।