• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

চালকুমড়া যেন এক মহৌষধ

চালকুমড়া যেন এক মহৌষধ

প্রতিকী ছবি

ফিচার ডেস্ক

বাংলাদেশে জনপ্রিয় একটি সবজির নাম ‘চালকুমড়া’। মিষ্টি কুমড়া দেখতে সুন্দর হলেও চাল কুমড়ার পুষ্টিগুণ বেশি। পরিপক্ক চালকুমড়া দিয়ে শীতকালে কলাই ডালের বড়া বানানো হয়। যা ‘কুমড়োর বড়া’ নামে অধিক পরিচিত। তবে কচি চাল কুমড়া পুষ্টিগুণে সেরা। এর কচি পাতা ও ডগা শাক হিসেবে খাওয়া হয়।

এই কুমড়াকে আমরা জালি কুমড়া বলে থাকি। সারা বছরই এটি বাজারে পাওয়া যায়। তবে এখন জালি ও চাল কুমড়ার মৌসুম। দামে কম মানে উৎকৃষ্ট এই সবজি এখন হাত বাড়ালেই পাওয়া যাচ্ছে। এটি দিয়ে মোরব্বা, হালুয়া, পায়েস প্রভৃতি তৈরি করা হয়। তবে ভাজি হিসেবেই কুমড়ার জালি সবচেয়ে জনপ্রিয়।

‘আমরাই বাংলাদেশ’র পাঠকদের জন্য এই পর্বে জালি কুমড়ার পুষ্টিগুণ নিয়ে কিছু তথ্য তুলে ধরা হলো-

পরিচয়

কুমড়াকে সংস্কৃত ভাষায় ‘কুষ্মা’ বলা হয়। এর বৈজ্ঞানিক নাম বেনিনকাসা হিসপিডা। জালি চালকুমড়ার ইংরেজি নাম wax gourd। winter melon, white gourd, winter gourd, tallow gourd, Chinese preserving melon, ash gourd ইত্যাদি।

পুষ্টিগুণ

পুষ্টিগুণ বিবেচনায় চালকুমড়া অনন্য। এতে রয়েছে প্রচুর ক্যালরি, আমিষ, শর্করা, আঁশ, চর্বি, ভিটামিন সি, পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, সোডিয়াম, কোলেস্টেরল, আয়রন জিংক ও ফসফরাস।

প্রতি ১০০ গ্রাম চালকুমড়ায় রয়েছে
ক্যালরি ১৩ কিলোক্যালরি
প্রোটিন ১ গ্রাম
শর্করা ৩ গ্রাম
আঁশ ৩ গ্রাম
চর্বি ১ গ্রাম
ভিটামিন সি ১৪ শতাংশ
ভিটামিন বি- ৮ শতাংশ এবং
জিংক ৬ শতাংশ।

উপকারিতা

যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধি করে : আয়ুর্বেদ শাস্ত্র মতে, চালকুমড়া পুষ্টিকর ও বীর্যবর্ধক। যা যৌন শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়ক।

রক্ত পরিষ্কার রাখে : রক্তের ক্ষতিকর টক্সিক ধ্বংস করতে চালকুমড়া খুবই কার্যকরি। এটি শরীর শীতল করে রক্তের গতি স্বাভাবিক রাখে। এটি পিত্তনাশক।

কফ দূর করে : যারা দীর্ঘ মেয়াদে কফ নিয়ে জটিলতায় ভুগছেন, তারা নিয়মিত কয়েকদিন চালকুমড়া খেতে পারেন। উপকার পাবেন। এজন্য আপনাকে চালকুমড়ার রসের সঙ্গে হালকা সোডা ও লবণ মিশিয়ে খেতে হবে।

মুত্রাশয়ের সংক্রমণ নিরাময় : চালকুমড়ায় রয়েছে প্রচুর জলীয় অংশ, ভিটামিন সি ও ম্যাঙ্গানিজ। এসব উপাদান মুত্রাশয়ের সংক্রমণ নিরাময়ে খুবই কার্যকরী।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে : যারা কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগছেন, তারা চালকুমড়া খান। কারণ এতে রয়েছে প্রচুর জলীয় অংশ ও ফাইবার। যা মল নরম করে ও কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময় করতে সহায়তা করে।

আলসার প্রতিরোধ করে : আপনি যদি দীর্ঘ দিনের জমে থাকা গ্যাস্ট্রিকের কারণে আলসারে আক্রান্ত হন, তাহলে আপনার জন্য চালকুমড়া হতে পারে দারুণ একটি নিরাময়ের উপায়। চালকুমড়া পেটের গ্যাস দূর করে। যা আলসার নিরাময়ে দারুণ সহায়ক।

হৃদযন্ত্র ভালো রাখে : পাকা লাল কুমড়ার চেয়ে চালকুমড়ায় শর্করা ও চর্বি কম থাকে। এছাড়া এতে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন সি। যা হৃদযন্ত্র উন্নত করে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে : ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীরা নিশ্চিন্তে চালকুমড়া খেতে পারেন। কারণ এতে যেসব পুষ্টি ও ভিটামিন রয়েছে, তা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে খুবই কার্যকরি।

চুলের স্বাস্থ্য সুরক্ষা : চুল পড়ে যাওয়া ও মাথার ত্বকে ইনফেকশন দূর করতে সহায়ক চালকুমড়া। এতে রয়েছে ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন বি।

ত্বক উজ্জ্বল করে : চাল কুমড়ার জলীয় অংশ ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে কার্যকরি।

রুচিবর্ধক : অজীর্ণ ভাব ও ক্ষুধামন্দা দূর করতে চালকুমড়া দ্রুত কাজ করে। মুখের স্বাদ ফিরিয়ে আনতে চালকুমড়ার জুড়ি নেই।

যক্ষ্মার মহৌষধ : প্রতিদিন চালকুমড়ার রস পান করুন। যক্ষ্মার লক্ষণ দূর হবে। এছাড়া কাশি নিরাময়েও এটি কার্যকরি।

ওজন কমায় : শরীরের অতিরিক্ত মেদ চর্বি ঝরিয়ে ফেলতে চাইলে চালকুমড়া খান। কারণ এতে ক্যালরি ও চর্বি খুবই কম।

তথ্যসূত্র : হেলথলাইন ডটকম, ফ্রুটসইনফো ডটকম ও উইকিপিডিয়া

 

এবি/এসএন

১৮ আগস্ট ২০২১, ০৫:২১পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।