• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

কেন ডিম খাবেন, কতটুকু খাবেন

কেন ডিম খাবেন, কতটুকু খাবেন

প্রতিকী ছবি

ফিচার ডেস্ক

প্রাণিজ আমিষের অন্যতম ও সেরা একটি উৎস ডিম। ডিম থেকে আমরা নানা ধরণের পুষ্টি উপাদান পেয়ে থাকি। সেদ্ধ ডিম, ভাজি ডিম, ডিমের পিঠাসহ নানা ভাবেই এটি আমরা খেয়ে থাকি। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় অধিকাংশ মানুষই ডিম রাখেন। কারণ, ডিম উত্তম ক্যালরি ও পরিপূর্ণ আমিষের একটি দারুণ উৎস।

নিয়মিত ডিম খেলে আমাদের শরীর সতেজ থাকবে। নানা রোগ থেকে মুক্ত থাকতে ডিম খাওয়ার বিকল্প নেই। ডিম নিয়ে বহুকাল থেকে বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে চলেছেন। কখনো ডিম কম খাওয়া, আবার কখনো বেশি খাওয়ার ব্যাপারে গবেষকরা পরামর্শ দিয়েছেন। তবে অধিকাংশ গবেষকই বলেছেন, পরিমিত ডিম খাওয়ার অভ্যাস আমাদের জন্য সবচেয়ে বেশি উপকারিতা বয়ে আনবে।

তাই ‘আমরাই বাংলাদেশ’র পাঠকদের জন্য এই পর্ব সাজানো হয়েছে ডিমের পুষ্টিগুণ নিয়ে। চলুন এক নজরে দেখে নিই-

ডিমের পুষ্টিগুণ

ডিমে রয়েছে ভিটামিন এ, ভিটামিন ডি, ভিটামিন ই, ভিটামিন বি, ক্যালসিয়াম, প্রোটিন, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন, জিংক, ফরফরাস, চর্বি ও মিনারেল। এছাড়াও ডিমে রয়েছে লুটেইন ও জিয়েক্সেনথিন নামক দুটি প্রয়োজনীয় উপাদান।

কোন প্রাণীর ডিম খাওয়া যাবে

সব ধরণের মুরগী, হাঁস, কোয়েলসহ পাখি প্রজাতির সব প্রাণীর ডিম খাওয়া যাবে। ইসলামী শরিয়তেও এ নিয়ে কোনো বিধিনিষেধ নেই। তবে ভারতসহ বিভিন্ন দেশে সাপের ডিম বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চাষ হচ্ছে, এই ডিম না খাওয়ায় ভালো। এছাড়া কৃত্রিম ডিম চিহ্নিত করতে পারলে, তা থেকে দূরে থাকুন।

ডিম খাওয়ার উপকারিতা

পুষ্টিবিদরা বলছেন, ডিম পরিমিত খেতে হবে। অতিরিক্ত ডিম খেলে উপকারের চেয়ে ক্ষতির আশঙ্কা বেশি থাকে। ডিম খাওয়ার কয়েকটি উপকারি দিক হল-

হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় : চীনের একদল পুষ্টি গবেষক জানিয়েছেন, প্রতিদিন একটি করে ডিম খাওয়ার অভ্যাস হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। ডিমে রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম, যা মানসিক স্বাস্থ্য উন্নত করে। ফলে হৃদরোগ বা স্ট্রোকের ঝুঁকি কমে যায়।
দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করে: ডিমে রয়েছে লুটেইন ও জিয়েক্সেনথিন নামক দুটি বিশেষ উপাদান, যা বয়স্কদের চোখের জ্যোতি ঠিক রাখে। এই দুটি উপাদান দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সহায়তা করে।

পেশী মজবুত করে : শরীরের পেশী মজবুত করতে প্রোটিন ও ম্যাগনেসিয়ামের গুরুত্ব অনেক। আর পেশী গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় এই দুটি উপাদানই রয়েছে ডিমে। তাই এখন থেকে প্রতিদিন খাদ্য তালিকায় অন্তত একটি ডিম রাখুন।

শারীরিক শক্তি দ্রুত বৃদ্ধি করে : খুব দ্রুত শারীরিক শক্তি বৃদ্ধিতে ডিমের বিকল্প নেই। কারণ এতে রয়েছে ভিটামিন বি১২, যা অন্যান্য খাবারকে দ্রুত শক্তিতে রূপান্তরিত করে।

ওজন কমাতে ডিম : যারা ওজন কমাতে চান, তাদের প্রধান শত্রু কার্বোহাইড্রেট। তাই কার্বোহাইড্রেট কম ও প্রোটিন বেশি খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুললে আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণে চলে আসতে বাধ্য। আর এই অসাধ্য সাধন সম্ভবত ডিম খাওয়ার মধ্যদিয়ে। কারণ ডিমে কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ সীমিত। ওজন কমাতে চাইলে নিয়মিত সকালের নাস্তায় ডিম রাখুন।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় : ডিমে রয়েছে আয়রন, জিংক ও ফসফরাস। যা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

হাড় ও দাঁত সুরক্ষিত রাখে : ডিমে থাকা ভিটামিন ও খনিজ উপাদানগুলো আমাদের শরীরের হাড় ও দাঁতের সুরক্ষায় সবচেয়ে কার্যকরী। কাজেই হাড় ও দাঁত ঠিক রাখতে চাইলে নিয়মিত ডিম খান।

মস্তিষ্ক ভালো রাখে : ডিমে রয়েছে প্রায় ৩০০ মাইক্রোগ্রাম কোলাইন। যা মানব দেহের কার্ডিওভাস্কুলার সিস্টেম, স্নায়ু, যকৃত ও মস্তিষ্কের জন্য অত্যন্ত উপকারি।

চুল পড়া কমায়: বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে অনেকের চুল পড়ে যায়। চুল পড়া রোধে অনেকেই ডিমের সাদা অংশ মাথায় লাগান। এতে কেউ ফল পান, আবার কেউ নিরাশ হন। তবে আপনি যদি নিয়মিত ডিম খান, তাহলে আপনার চুল পড়া কমে যাবে। যা গবেষণায় প্রমাণিত।

গর্ভবর্তী নারীর পুষ্টি: গর্ভবতী নারীকে বাড়তি খাবার গ্রহণ করতে হয়। কিন্তু সবসময় সব খাবার অধিক পরিমাণে নারীরা খেতে পারেন না। তাই গর্ভবতী মায়ের পুষ্টি চাহিদা পুরণে ডিম একটি আদর্শ খাবার।

পরামর্শ

ডিমের নানা উপকারিতা থাকলেও গবেষকরা ভিন্ন খবরও দিয়েছেন। কেউ কেউ বলেছেন, ডিমে থাকা ফ্যাট শরীরের কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। যা হৃদরোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে। এমনকি অতিরিক্ত ডিম খেলে ওজন বেড়ে যেতে পারে বলেও একদল গবেষক মত দিয়েছেন। পাশাপাশি ইউরিক এসিড ও আর্থারাইটিসে আক্রান্তদের জন্য ডিম খাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ বলে গবেষণায় উঠে এসেছে। তাই, পরিমিত ডিম খান, সুস্থ থাকুন।

 

এবি/এসএন

০৮ আগস্ট ২০২১, ০৫:২৬পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।