• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ত্বক ভালো রাখতে শীতে যা খাবেন

ত্বক ভালো রাখতে শীতে যা খাবেন

প্রতিকী ছবি

ফিচার ডেস্ক

শীতে বাতাসে আর্দ্রতা কমে যায়। আবহাওয়া হয়ে ওঠে শুষ্ক। ত্বক হয়ে যায় মলিন। এ ছাড়া শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সাধারণ সংক্রমণও বাড়তে থাকে। শীতে সুস্থ দেহের জন্য খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনার বিকল্প নেই। পুষ্টিবিদ কিংবা স্বাস্থ্য গবেষক, সবার মত একই। সবাই বলছেন, শীতে সুস্থ ও স্বাস্থ্যজ্জ্বল ত্বক পেতে খাবার তালিকায় সতেজ শাক-সবজি, পানি ও পুষ্টিকর উপাদান রাখতে হবে।

জনপ্রিয় স্বাস্থ্য ও পুষ্টিবিষয়ক ওয়েবজার্নাল হেলথ শটস, টাইমস অব ইন্ডিয়া ও ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের একাধিক নিবন্ধেও এ সংক্রান্ত তথ্য দেয়া হয়েছে। প্রকাশিত নিবন্ধগুলোতে শীতকালে উন্নত ত্বক পেতে সতেজ সবজি ও পানি বেশি করে খাওয়ার কথা বলেছেন বিশেষজ্ঞরা। পুষ্টিবিদদের পাশাপাশি বিউটিসিয়ানরাও একই মতামত দিয়েছে।

সুস্থ ত্বক পেতে কি খাবেন

বাদাম: আমরা বিভিন্ন রকম বাদাম খেয়ে থাকি। প্রায় সব বাদামে একই ধরণের উপাদান থাকে। বাদামে থাকে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, ভিটামিন ই এবং গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাটি অ্যাসিড। এই উপাদানগুলো আমাদের ত্বককে ভেতর ও বাইরের আর্দ্রতা ঠিক রাখে। নিয়মিত বাদাম খেলে ত্বকের কোষের ক্ষতি দূর হয়।

সামুদ্রিক মাছ: সামুদ্রিক মাছে থাকে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এ্যাসিড। পুষ্টিবিদরা বলছেন, ত্বকের জন্য ওমেগা থ্রি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি উপাদান। তবে আমাদের মাঝে একটি ভুল ধারণা আছে, গ্রিলড বা ভাপ দেয়া মাছের চেয়ে ঝোল তরকারির মাছে বেশি উপকার। এটি ঠিক নয়। বরং স্বাদের ভিন্নতার জন্য আপনারা মাছ যেকোনো ভাবেই খেতে পারেন। মাছ ইনফ্লেমেশন কমিয়ে ত্বককে উজ্জ্বল রাখে।

সয়াবিন: প্রাণীজ আমিষ যারা খান না (ভেজেটারিয়ান) অথবা অন্য কোনো অসুস্থতার কারণে মাছ, মাংস, ডিম পরিহার করেন, তারা সয়াবিন খেতে পারেন। এতে শীতে আপনার আমিষের চাহিদাও পূরণ হবে, ত্বকও হবে উজ্জ্বল। সয়াবিনে থাকা আইসোফ্ল্যাভোনেস দেহে কোলাজেন উৎপাদন করে, যা ত্বকের বলিরেখা রোধ করে।

ডিম: ডিমে আছে সালফার এবং লাটেইন। এই দুটি উপাদান ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখে। ত্বক উন্নত রাখতে যেকোনো ভাবে আপনি ডিম খেতে পারেন। সেদ্ধ ডিম, ভাজি ডিম কিংবা স্যুপ করেও ডিম খেতে পারেন।

আমলকী: আমলকীতে আছে প্রচুর ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। যে কারণে এটি ত্বকে বয়সের ছাপ পড়তে দেয় না।

টমেটো: টমেটো ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর একটি শীতকালীন সবজি। এটি ত্বকের বলিরেখা দূর করে। মুখের ত্বক রাখে টানটান।

পানি: পানি আমাদের শরীর এবং ত্বকে হাইড্রেশনের প্রধান উৎস। পর্যাপ্ত পানি পান করলে ত্বক নরম, মসৃণ এবং কোমল থাকে। কিন্তু, পর্যাপ্ত পানি পানের অভাবে ত্বকে শুষ্কতা, বলিরেখা এবং দাগের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।

গাজর: বিটা-ক্যারোটিন এবং লাইকোপেন সমৃদ্ধ শীতকালীন সবজি গাজর। বিটা ক্যারোটিন ও লাইকোপেন ত্বককে সূর্যের ক্ষতিকর ইউভি রশ্মি থেকে সুরক্ষা দেয়। গাজরের ভিটামিন এ, পটাসিয়াম এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শুষ্ক ত্বক এবং অমসৃণ ত্বকের টোন সমস্যা দূর করে।

কমলা, মাল্টা, আঙ্গুর: শীতকালে প্রচুর পরিমাণে তাজা রসালো এবং সতেজ সাইট্রাস ফল খাবেন। কমলা, মাল্টা, আঙ্গুর সাইট্রাস ফল। এই ফলগুলো ভিটামিন সি সমৃদ্ধ। এই ফলগুলোকে বলা হয় শীতের সুপারফুড।

ত্বকের যত্নে আরও যা করতে পারেন

→ শীতে ঘরের বাইরের গেলে হাতের গ্লাভস, স্কার্ফ এবং টুপি পরুন। বাইরে থেকে ঘরে ফিরে ত্বক পরিষ্কার করে ময়েশ্চারাইজ ব্যবহার করুন।

→ শীতের শুষ্ক বাতাস থেকে ত্বককে রক্ষা করার জন্য সর্বদা সঙ্গে ময়শ্চারাইজার রাখুন।

→ ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতে মাঝে মাঝে মুখে পানির ঝাপটা দিন। এতে ত্বক সতেজ থাকবে।

→ অতিরিক্ত গরম পানি দিয়ে মুখ, মাথা ধোয়া থেকে বিরত থাকুন। অতিরিক্ত গরম পানি মুখের ত্বকের ফলিকলগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত করে ফেলে।

→ গোসলের পর এবং প্রতিবার মুখ ধোয়ার পর ভেজা অবস্থায় ময়েশ্চারাইজার বা লোশন ব্যবহার করুন।

 

তথ্যসূত্র: হেলথ শটস, টাইমস অব ইন্ডিয়া ও ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।

২১ নভেম্বর ২০২২, ০৬:৩২পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।