সাঁতার কাটার উপকারিতা ও কতিপয় সর্তকতা
প্রতিকী ছবি
সুস্থতার জন্য শরীর চর্চার বিকল্প নেই। সুষম খাবার ও শরীর চর্চা একজন মানুষকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। সুস্থ থাকতে চাইলে প্রতিদিন কিছু সময় ব্যায়াম করা প্রয়োজন। তাই, নিজের সুস্থতার জন্য দিনের একটি নির্দিষ্ট সময় ব্যায়াম বা শরীর চর্চার জন্য রাখুন। শরীর চর্চা বা ব্যায়ামের মধ্যে হাঁটা ও সাঁতার কাটা সবচেয়ে কার্যকরী ও দ্রুত ফল প্রদান করে। তবে সাঁতারের মতো ভালো ব্যায়াম খুব কমই আছে বলে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
প্রিয় পাঠক, সুস্থ জীবনধারার জন্য সাঁতার কাটার অভ্যাস জরুরি। তবে, আমাদের সবার কিন্তু সাঁতার কাটার সুযোগ থাকে না। তাই, যারা সাঁতার কাটার সুযোগ পাবেন, তারা অবশ্যই নিয়মিত সাঁতার কাটুন। সাঁতার এমন একটি ব্যায়াম, যার মাধ্যমে দেহের প্রতিটি অংশ সক্রিয় হয়। সাঁতারের বেশ কিছু উপকারি দিক রয়েছে।
সাঁতারের যত উপকারিতা
জনপ্রিয় মার্কিন স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েব জার্নাল হেলথ লাইন ও মেডিকেল নিউজ টুডে’র পৃথক নিবন্ধে বলা হয়েছে-
হৃৎপিণ্ড ও ফুসফুস ভালো থাকে: সাঁতার কাটলে হৃৎপিণ্ড এবং ফুসফুস সুস্থ থাকে। যারা নিয়মিত সাঁতার কাটেন, তাদের হার্টের সমস্যাও কমে যায়।
ক্যালরি বার্ন করে: দেহের অতিরিক্ত ক্যালোরি বার্ন করতে চাইলে সাঁতার কাটুন নিয়মিত। অতিরিক্ত ক্যালরি বার্ন করার জন্য সাঁতারের বিকল্প নেই।
আর্থ্রাইটিস নিরাময় করে: যারা আর্থ্রাইটিসের সমস্যা কিংবা হাঁটু ও পায়ের ব্যথায় ভুগছেন, তারা সাঁতার কাটতে পারেন। অনেক সময়ে এই ধরনের রোগে ব্যায়াম করতে সমস্যা হলেও সাঁতারে সাধারণত তা হয় না। অস্টিয়োআর্থ্রাইটিসের মতো রোগের নিরাময়ে সাঁতার এক আদর্শ ব্যায়াম।
মানসিক স্বাস্থ্য উন্নত করে: মানসিকভাবে যারা হতাশায় ভুগে থাকেন কিংবা বিষণ্নতায় যারা হাবুডুবু খাচ্ছেন, তারা সাঁতার কাটতে পারেন। এই অভ্যাস আপনার মনকে প্রফুল্ল করবে। গবেষকরা বলছেন, ডিমেনশিয়া জাতীয় নানা মানসিক সমস্যায় মস্তিষ্ক ও মন ভালো রাখার অন্যতম উপায় সাঁতার।
নিদ্রাহীনতা দূর করে: বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নিদ্রাহীনতা বৃদ্ধি পায়। বার্ধক্যজনিত অনিদ্রাও বর্তমানে প্রকট আকার ধারণ করেছে। তাই, ইনসমনিয়া বা নিদ্রাহীনতা দূর করতে প্রয়োজন সাঁতার কাটা। নিয়মিত সাঁতার কাটলে শরীর যেমন ভালো থাকবে, তেমনি ঘুমও হবে ভালো।
সাঁতার কাটার সতর্কতা
⇒ সাঁতার কাটার উপকারি একটি ব্যায়াম। তবে যখন তখন যেকোনো ভাবে সাঁতার কাটা আপনার জন্য ক্ষতির কারণও হতে পারে। তাই, সাঁতার কাটার আগে কিছু সতর্কতা মেনে চলতে হবে। বিশেষজ্ঞদের বলছেন-
⇒ যারা হাঁপানি কিংবা সাইনাসের সমস্যায় ভুগছেন, তারা চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে সাঁতার কাটুন।
⇒ গর্ভবতী নারীরা সাঁতার কাটার ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনার নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
⇒ শহরে বসবাসকারীদের অধিকাংশই একই সুইমিং পুলে সাঁতার কাটেন। এটি ঝুঁকিপূর্ণ। তাই, এক সঙ্গে বহুমানুষ সুইমিং পুলে সাঁতার কাটা থেকে বিরত থাকুন। কারণ, একাধিক মানুষ একসঙ্গে সাঁতার কাটতে গিয়ে অ্যালার্জি, খোসপাঁচড়া বা র্যাশ জাতীয় সংক্রমণে আক্রান্ত হতে পারেন।
⇒ সাঁতার কাটার আগে খেয়াল করুন আপনি দুর্বলতা অনুভব করছেন কিনা। যদি অত্যধিক ক্লান্তি অনুভব করেন, তাহলে সাঁতার কাটা থেকে বিরত থাকুন। বরং সাঁতার কাটার আগে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিন।
⇒ আকাশে বিদ্যুৎ চমকালে বা মেঘের গর্জন শুরু হলে সাঁতার কাটা বাদ দিন। দ্রুত পানি থেকে উঠে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিন।
⇒ সাঁতার কাটার সময় ভুলে মুখে চুইংগাম, বাবলগাম বা চকলেট জাতীয় কোনো কিছু মুখে রাখবেন না।
⇒ যারা প্রথম প্রথম সাঁতার কাটতে পানিতে নামবেন, তারা অবশ্যই লাইফগার্ড জ্যাকেট অথবা আপনার পরামর্শককে কাছাকাছি রাখুন।
তথ্যসূত্র: হেলথ লাইন ও মেডিকেল নিউজ টুডে।