• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

‘যদি খান পেয়ারা, নতুন হবে চেহারা’

‘যদি খান পেয়ারা, নতুন হবে চেহারা’

প্রতিকী ছবি

ফিচার ডেস্ক

গ্রামে একটা প্রবাদ প্রচলিত আছে-‘খাইলে পরে পেয়ারা, পাল্টে যাবে চেহারা’। আসলেই কি পেয়ারা খেলে চেহারা পাল্টে যায়? হয়তো যায় না। কিন্তু পেয়ারা খেলে আমরা যে পুষ্টি পাই, তা এক সময় আমাদের চেহারায় দারুণ প্রভাব ফেলে। পেয়ারায় রয়েছে এমন কিছু গুণাগুণ।

এখন পেয়ারার ভরা মৌসুম। দেশী জাতের পেয়ারার পাশাপাশি হাট-বাজারে পাওয়া যাচ্ছে উন্নতজাতের সুমিষ্ট পেয়ারা। স্বাদ ও পুষ্টিতে ভরপুর পেয়ারা বাংলাদেশে অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি ফল।

‘আমরাই বাংলাদেশ’র পাঠকদের জন্য এই পর্বে পেয়ারার পুষ্টিগুণ সম্পর্কে কিছু তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। চলুন, এক নজরে দেখে নিই-

পরিচয়

পেয়ারার বৈজ্ঞানিক নাম Psidium guajava। এরা Myrteae পরিবারের সদস্য। পেয়ারা সবুজ রঙের বেরী জাতীয় ফল। তবে অন্য রঙের পেয়ারাও পাওয়া যায়। বিশ্বে অন্তত ১০০ জাতের পেয়ারা পাওয়া যায়। মেক্সিকো, মধ্য আমেরিকা ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় পেয়ারার চাষ ভালো হয়।

পেয়ারার পুষ্টি উপাদান

এতে আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন ‘সি’ ও লাইকোপেনস্তা। যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই দরকারি। এছাড়া পেয়ারায় বিশেষ পাঁচটি পুষ্টি উপাদান রয়েছে, যা আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিসহ দৃষ্টিশক্তি ও পেটের সমস্যা দূর করে।

পেয়ারায় রয়েছে প্রচুর ভিটামিন সি, ক্যারোটিনয়েডস, ফোলেট, পটাসিয়াম, আঁশ ও ক্যালসিয়াম। এটা আপেল ও কমলার চেয়ে চারগুণ বেশি পুষ্টিগুণ সম্পন্ন একটি ফল।

প্রতি ১০০ গ্রাম পেয়ারায় আছে 

ভিটামিন সি ২০০ মিলিগ্রাম
পানি ৮৬.১০ গ্রাম
ক্যালরি ৫১ কিলোক্যালরি
আঁশ ৫.৪ গ্রাম
প্রোটিন ০.৮২ গ্রাম
ফসফরাস ২৫ মিলিগ্রাম
সোডিয়াম ৩ মিলিগ্রাম এবং
ভিটামিন এ ৭৯২ আই ইউ।

এছাড়া পেয়ারাতে রয়েছে ম্যাঙ্গানিজ, সেলিনিয়াম, ভিটামিন বি১, বি২, বি৩ এর মতো খনিজ উপাদান। পেয়ারার বীজে রয়েছে ওমেগা-৩ ও ওমেগা-৬ পলিআন স্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড।

উপকারিতা

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে : যারা টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত, তারা নিয়মিত পেয়ারা খেতে পারেন। কারণ এতে রয়েছে পর্যাপ্ত আঁশ, যা শরীরে সুগার শোষণ কমিয়ে আনে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় : পেয়ারায় রয়েছে প্রচুর ভিটামিন সি, যা শরীরে জমে থাকা ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস নির্মুলে সহায়তা করে। ফলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।

দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে : এতে রয়েছে পর্যাপ্ত ভিটামিন এ। রাতকানা রোগ নিরাময় ও চোখের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতে ভিটামিন এ অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।

ডায়রিয়া রোধ করে : ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা থেকে মুক্তির জন্য পেয়ারা খেতে পারেন। এছাড়া নিয়মিত পেয়ারা খেলে ডায়রিয়া হওয়ার ঝুঁকি অনেকাংশে কমে যায়। কারণ পেয়ারা বীজ পেটে জমে থাকা ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস ধ্বংস করে।

ক্যান্সার প্রতিরোধ করে : পেয়ারা ক্যান্সার প্রতিরোধে ব্যাপক কার্যকরি। বিশেষ করে পেয়ারা পাতার রস শরীরের প্রদাহ ও কাটা-ছেঁড়া সারিয়ে তুলতে দ্রুত কাজ করে।

ওজন কমায় : পেয়ারা মানব দেহের অতিরিক্ত জমে থাকা ফ্যাট গলিয়ে দেয়। যা ওজন কমাতে সহায়তা করে।

কোষ্ঠকাঠিন্য ও আমাশয় দূর করে : এই ফলে রয়েছে প্রচুর আঁশ, যা হজমক্রিয়া শক্তিশালী করে। ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য ও আমাশয় দূর হয়।

পরামর্শ
যারা কিডনী রোগে ভুগছেন, তারা পেয়ারাসহ যে কোনো ধরণের ফল খাওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। পরিমিত ফল খান, সুস্থ থাকুন।

 

এবি/এসএন

০৬ আগস্ট ২০২১, ০৮:১১পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।