• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

কোষ্ঠকাঠিন্য দূরে রাখে ‘ছোলা শাক’

কোষ্ঠকাঠিন্য দূরে রাখে ‘ছোলা শাক’

প্রতিকী ছবি

ফিচার ডেস্ক

দেশের হাট-বাজার এখন শীতকালীন সবজিতে ভরপুর। নানা ধরণের সবজি ও তরতাজা বাহারি শাক হাত বাড়ালেই পাওয়া যায়। বছরের অন্য সময়ের চেয়ে এই শীতকালে শাক-সবজির যোগান বেশি থাকে। বাজারে এখন সবধরণের শাক পাওয়া যায়। এর মধ্যে ছোলার শাক বা ছোলা শাক অন্যতম। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলের হাটে-বাজারে ছোলা শাক পাওয়া যায় বেশি। এটি স্বাদেও সেরা, গুণেও অনন্য।

প্রিয় পাঠক, চলুন দেখে নিই কি আছে ছোলা শাকে-

পরিচয়:
ছোলা বা চানার বৈজ্ঞানিক নাম Cicer arietinum। এটি মূলত ডালজাতীয় খাদ্যশস্য। তবে ছোলা শাকে প্রোটিন, ভিটামিন সি, আয়রনসহ নানা উপাদান রয়েছে। ছোলা গাছের কঁচি পাতা ও ডগাকে ছোলা শাক হিসেবে খাওয়া হয়।

এটির উৎপত্তি ইরান, ইথিওপিয়া, মেক্সিকো। এসব অঞ্চলে এখনো ছোলা বেশি চাষাবাদ হয়। তবে ভারতীয় উপমহাদেশের বিভিন্ন দেশেও ছোলা চাষ হয়। বাংলাদেশে দুই ধরণের ছোলা চাষ হয়। তার মধ্যে কাবুলি ছোলা ও দেশি ছোলা অন্যতম।

পুষ্টি উপাদান:
হেলথ লাইন, উইকিপিডিয়া ও বাংলাদেশ কৃষি তথ্য সার্ভিসের নিবন্ধে বলা হয়েছে, ছোলা শাকে রয়েছে প্রচুর খাদ্যআঁশ বা ফাইবার। এ ছাড়া এতে রয়েছে ভিটামিন বি, ভিটামিন সি, পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন, ফলিক এসিড ও মলিবডেনামের মতো প্রয়োজনীয় খনিজ উপাদান।

প্রতি ১০০ গ্রাম ছোলা শাকে রয়েছে-

ক্যালরি- ৬৫ কিলোক্যালরি,
কার্বোহাইড্রেট- ৩ গ্রাম,
চর্বি- ০.১ গ্রাম,
সুগার- ০.২ গ্রাম,
খাদ্য আঁশ- ২.৬ গ্রাম,
প্রোটিন- ০.৬৮ গ্রাম,
ভিটামিন বি১- ০.০১২ মিলিগ্রাম,
ভিটামিন বি২- ০.০৩৯ মিলিগ্রাম,
ভিটামিন বি৩- ০.২৫৪ মিলিগ্রাম,
ভিটামিন সি- ১৪.৮ মিলিগ্রাম,
ক্যালসিয়াম- ২৫ মিলিগ্রাম,
আয়রন- ০.৩৪ মিলিগ্রাম,
ম্যাঙ্গানিজ- ০.০৬৯ মিলিগ্রাম,
ফসফরাস- ২০ মিলিগ্রাম,
পটাসিয়াম- ২৩৩ মিলিগ্রাম,
ম্যাগনেসিয়াম- ১০ মিলিগ্রাম এবং
জিংক- ০.২৮ মিলিগ্রাম,

উপকারিতা:
বাংলাদেশ কৃষি তথ্য সার্ভিস ও হেলথ লাইন ওয়েবসাইটে প্রকাশিত নিবন্ধে বলা হয়েছে, ছোলা শাক-

ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে: কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে নিয়মিত ছোলা শাক খাওয়া যেতে পারে। এতে থাকা ভিটামিন সি ও বিটা ক্যারোটিন কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধ করে।

ওজন কমায়: এই শাকে রয়েছে প্রচুর আঁশ ও অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। এ ছাড়া এতে রয়েছে প্রচুর আয়রন, ফলেট, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম ও অন্যান্য খনিজ উপাদান, যা উপাদান ওজন কমায়।

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে: ছোলা শাকে রয়েছে উচ্চ মাত্রার পটাসিয়াম। এই উপাদানটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে।

কিডনি সুরক্ষিত রাখে: পুষ্টিবিদরা বলছেন, নিয়মিত ছোলা শাক খেলে কিডনীতে জমে থাকা পাথর মলমূত্রের সঙ্গে বেরিয়ে যায়। ফলে কিডনি ভালো থাকে।

যৌন সক্ষতা বৃদ্ধি করে: ছোলা শাকে থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট তারুণ্য ধরে রাখে। এ ছাড়া এতে থাকা খনিজ উপাদান যৌন শক্তি বৃদ্ধিতে ব্যাপক সহায়তা করে।

কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখে: এই শাকে থাকা ভিটামিন সি ও অন্যান্য খনিজ উপাদান দেহের কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। ফলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে।

হাড়ের জয়েন্টের ব্যথা নিরাময়: হাড়ের জয়েন্টের ব্যথা বা আর্থ্রাইটিস নিরাময়ে ছোলা শাক অনন্য। তবে এটি খাওয়ার সময় পরিমিতি বজায় রাখতে হবে।

দাঁতের ক্ষয় রোধ করে: দাঁত ও হাড়ের ক্ষয় রোধে কার্যকরী ক্যালসিয়াম ও আয়রনে ভরপুর ছোলা শাক। কাজেই এটি খেলে দাঁত ও হাড় ভালো থাকে।

হজমশক্তি বাড়ে: এই শাকে রয়েছে প্রচুর অ্যামাইনো অ্যাসিড ও খাদ্যআঁশ। যা হজমশক্তি বাড়িয়ে দেয়। ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়।

রক্তস্বল্পতা দূর করে: এই শাকে রয়েছে প্রচুর আয়রন ও ভিটামিন সি, যা রক্ত স্বল্পতা দূর করে। পাশাপাশি এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে।

চোখের সুরক্ষায়: ছোলা শাকে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন এ এবং ভিটামিন সি, যা চোখের স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও চোখের জ্যোতি উন্নত করে।

তথ্যসূত্র: বাংলাদেশ কৃষি তথ্য সার্ভিস, উইকিপিডিয়া ও হেলথ লাইন

 

এবি/এসএন

০৪ জানুয়ারি ২০২২, ০৩:৫৫পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।