• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

অ্যাসিডিটির নিয়ন্ত্রণ আপনার হাতেই

অ্যাসিডিটির নিয়ন্ত্রণ আপনার হাতেই

প্রতিকী ছবি

ফিচার ডেস্ক

দিন দিন আমাদের খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন হচ্ছে। শাকসবজি ও দেশীয় খাবারের চেয়ে আমরা বিদেশী ও মশলাদার খাবারের প্রতি ঝুঁকে পড়ছি। যা আমাদের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়িয়ে দিচ্ছে। এছাড়া অনিয়ন্ত্রিত ও অপরিকল্পিত খাদ্যাভ্যাসের কারণে অনেকেই গ্যাস্ট্রিক, কোষ্টকাঠিন্য, পেটের পীড়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। বিশেষ করে গ্যাস্ট্রিক প্রকোট আকার ধারণ করেছে। অধিকাংশ মানুষই গ্যাস্ট্রিক অথবা কোষ্টকাঠিন্যে ভুগছেন।

কিন্তু আমাদের অনেকেই হয়তো জানেন না, এই সমস্যাগুলোর সমাধান নিজের হাতেই রয়েছে। খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন ও সামান্য কয়েকটি নিয়ম মেনে চললে খুব সহজেই গ্যাস্ট্রিক থেকে মুক্ত থাকা সম্ভব।

অ্যাসিডিটি বা গ্যাস্ট্রিকের লক্ষণ:

অধিকাংশ সময় পেট জ্বালাপোড়া করা,
খাবারে অরুচি,
বমি বমি ভাব হওয়া,
মাথা ঘুরানো ও ঘিন ঘিন ভাব হওয়া এবং
পেট ফুলে যাওয়া।

কেন বেড়ে যায় অ্যাসিডিটি?

অতিরিক্ত মশলাযুক্ত খাবার খেলে অ্যাসিডিটি বা গ্যাস্ট্রিক বেড়ে যেতে পারে। অতিরিক্ত ঝাল খাবার, বিশেষ করে শুকনো মরিচের গুড়া অ্যাসিডিটি বৃদ্ধি করে। এছাড়া অতিরিক্ত ওজন, অতিরিক্ত মদপান কিংবা কফি খাওয়ার কারণেও অ্যাসিডিটি বেড়ে যেতে পারে।

পুষ্টিবিদরা বলছেন, পেটের গ্যাস্ট্রিক গ্রন্থি থেকে অতিরিক্ত মাত্রায় অ্যাসিডের নিঃসরণে অ্যাসিডিটির সমস্যা দেখা দেয়। অ্যাসিডিটির প্রধান উপসর্গ হচ্ছে বুক-জ্বালাপোড়া করা। অ্যাসিডিটির সমস্যা ওষুধে সাময়িক নিবারণ করা গেলেও তা দীর্ঘস্থায়ী নয়।

কিন্তু কয়েকটি সহজ ও প্রাকৃতিক নিয়ম মেনে সহজেই অ্যাসিডিটি দূর যায়।

অ্যাসিডিটি নিয়ন্ত্রণের উপায়:

ডাবের পানি: বুক-জ্বালা পোঁড়া ঠেকাতে অন্যতম কার্যকর প্রাকৃতিক উপায় ডাবের পানি পান করা। ডাবের পানি বুকের জ্বালাপোঁড়া নিরাময়ে খুবই কার্যকরী।

কোমল পানীয় ত্যাগ: অ্যাসিডিটি বেড়ে গেলে অনেকেই কোমল পানীয় পান করে থাকেন। যা একেবারেই ভুল ধারণা। বরং অ্যাসিডিটি বেড়ে গেলে কোনও ভাবেই কোমল পানীয় পান করা যাবে না। কারণ কোমল পানীয় কার্বোনেটেড-ক্যাফিনেটেড বেভারেজ। যা মূলত অ্যাসিডিটি বৃদ্ধি করে। বরং হার্বাল চা বা চিনি ছাড়া রং চা খেতে পারেন।

দুধপান: প্রতিদিন এক গ্লাস গরম দুধ পান করলে অ্যাসিডিটি নিয়ন্ত্রণে থাকে। তবে ঠাণ্ডা দুধ না খাওয়াই ভালো।

ধূমপান পরিহার করুন: যারা নিয়মিত ধূমপান করেন, অ্যাসিডিটি নিয়ন্ত্রণ করতে চাইলে আজই ধূমপান পরিহার করুন।

মসলাদার খাবার ত্যাগ: বেশি মসলাদার খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। আচার, ঝাঁল চাটনি এবং ভিনেগার খাওয়া কমাতে হবে।

খাদ্যাভ্যাস: প্রতিদিন একই রুটিনে অল্প পরিমাণে হলেও খাবার খাওয়া উচিত। খাবার খাওয়ার সময়ের তারতম্য অ্যাসিডিটি বৃদ্ধি করে।

পুদিনা পাতা: অ্যাসিডিটি থেকে মুক্তি পাওয়ার অন্যতম প্রাকৃতিক উপায় পুদিনা পাতা। ভেষজগুণ সমৃদ্ধ পুদিনা পাতা সেদ্ধ করে সেই পানি প্রতিদিন এক গ্লাস পান করুন। অ্যাসিডিটি পালিয়ে যাবে।

লবঙ্গ: বুক জ্বালাপোঁড়া ঠেকাতে লবঙ্গ অত্যন্ত কার্যকরী। প্রতিদিন দু-একটি লবঙ্গ চিবিয়ে খান। এতে মুখের দুর্গন্ধও দূর হবে, অ্যাসিডিটিও নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

সবজি: শিম, বাঁধাকপি, সজনে ডাটা, গাজর, মিষ্টি কুমড়া, ও পেঁয়াজে অ্যাসিডিটি প্রতিরোধে কার্যকরী উপাদান রয়েছে। এ ধরনের সবজি খাওয়ার অভ্যাস করুন।

পর্যাপ্ত ঘুমান: যারা কম ঘুমান অথবা যাদের ঘুম ভালো হয় না, তাদের অ্যাসিডিটি বেড়ে যায়। কাজেই অ্যাসিডিটি নিয়ন্ত্রণ করতে চাইলে আপনাকে নিয়মিত ৮/৯ ঘণ্টা ঘুমাতে হবে।

 

এবি/এসএন

২২ জুলাই ২০২১, ০৪:৩৫পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।